শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের উপরে সেনা-পুলিশের যৌথ অভিযান মাত্রা ছাড়ায়নি এত দিন। শুধু বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনায় আহত হয়েছিলেন কিছু বিক্ষোভকারী। রবিবারের মায়ানমার কিন্তু এর পুরো উল্টো ছবিটা দেখল। সেনা শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শামিল গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীদের উপরে চলল গুলি, গ্রেনেড। যার জেরে গোটা দেশে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১৮ জনের।
বর্তমান সেনা সরকার ও পুলিশের মুখপাত্র এ নিয়ে মুখ খোলেনি। তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংক্রান্ত সংগঠনগুলি এ কথাই জানিয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাত ছাড়াই সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মায়ানমারের শাসনভার নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছিল সেনা। সু কি ও অন্যান্য ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি নেতাদের আটক করেছিল জান্তা সরকার। তারপর থেকেই ক্রমাগত বিক্ষোভে উত্তাল মায়ানমার। নোবেলজয়ী নেত্রী সু কি-র মুক্তির দাবিতে সেনা নেতাদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। আন্দোলনে সেনা পুলিশের কড়া পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘও। ভারতও গণতন্ত্রের পক্ষে মত পোষণ করেছে।
আরও পড়ুন: বাড়ি বিক্রি করছেন আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা, জানেন কেন?
সেনা দেশে ফের নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিলেও তার দিন ক্ষণ ঘোষণা করেনি। উল্টে সেনা প্রধান মিন আউং লাইং দাবি করে এসেছেন, শান্তিপূর্ণ ভাবেই আন্দোলন সামলাচ্ছে তাদের পুলিশ।দেশের বিভিন্ন শহরে আজ যে দৃশ্য দেখা গিয়েছে, তার সঙ্গে অবশ্য এই দাবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিক্ষোভকারীদের হটাতে এত দিন জল কামান, রবার বুলেট ব্যবহার করছিল পুলিশ। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে আজ দেখা গিয়েছে, গ্রেনেড থেকে গুলি সবই চলেছে। রাস্তায় দেখা গিয়েছে চাপ চাপ রক্ত।
ইয়াঙ্গনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। ম্যান্ডালে, বাগো, দাওয়েই-র মতো শহরেও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ইয়াঙ্গনে পুলিশের গুলি সরাসরি বুকে লেগে মৃত্যু হয়েছে এক বিক্ষোভকারীর। পুলিশের অত্যাচারে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন এক শিক্ষিকা। গত কাল থেকে ধরপাকড়ও ব্যাপক ভাবে বেড়েছে। শুধু কালই ৪৭০ জনকে আটক করা হয়েছিল। আজকের সংখ্যা এখনও কেউ জানেন না।
আরও পড়ুন: মুকুটে নয়া পালক, উন্নয়নশীল দেশের তকমা পেল বাংলাদেশ