মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বোনকে বাঁচানোর লড়াই, চোখের জলে কুর্নিশ গোটা বিশ্ববাসীর

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক: যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু হচ্ছে মানবতার৷ ফের রক্তাক্ত দেশটির অবস্থা তুলে ধরেছে একটি মর্মান্তিক ছবি৷ যা প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র আলোড়ন৷ ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে বিমান হানায় ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ছে একটি বহুতল বাড়ি৷ ধ্বংসস্তুপের মধ্যে বিপজ্জনকভাবে ঝুলছে বছর সাতের এক শিশুকন্যা ও তার সাত মাস বয়সি বোন৷ তাকে বাঁচাতে, শিশুটির জামা টেনে ধরে রয়েছে বড় বোন। কিছুটা উপরে দাঁড়িয়ে আর্তনাদ করছেন তাদের বাবা। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ছোট্ট বোনকে বাঁচানোর এই লড়াইকে চোখের জলে কুর্নিশ জানিয়েছে বিশ্ব৷ তবে ছোট্ট বোন টোকার জীবন বাঁচিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে দিদি রিহাম৷

গত বুধবার আচমকাই বিমান হানা হয় সিরিয়ার ইদলিবে। তারপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় এই ছবি। দেখা যায় ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছে কংক্রিটের শক্তপোক্ত একটা বাড়ি। ভাঙা স্ল্যাবের নীচেই আটকা পড়েছে রিহাম। বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছেন রিহামে বাবা। কিন্তু বড় মেয়ের এমন অবস্থা চোখের সামনে দেখতে হচ্ছে তাঁকে। মৃত্যু ফাঁদের কিনারে রয়েছে তাঁর আর এক সন্তানও। এদিকে অসহায় বাবার কাছে হাহাকার ছাড়া আর কিছুই তখন করার নেই। কারণ দুই সন্তানের কাউকেই বাঁচানোর জন্য কিছু করার উপায় নেই তাঁর। নিজের জায়গা থেকে তিনি একচুল নড়লেও ধসে পড়তে পারে আরও একটা স্ল্যাব।

সিরিয়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘হোয়াইট হেলমেটস’-এর সদস্যরা সেদিনই উদ্ধার করেছিল রিহামের পরিবারকে। জানা গিয়েছিল, ওই বাচ্চা মেয়ে দুটির বাবা আমজাদ আল-আবদুল্লা সিরিয়ার আরিহা শহরের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা। এই বিমান হানায় নিজের স্ত্রীকেও হারিয়েছেন তিনি। ‘হোয়াইট হেলমেটস’-এর সদস্যরা রিহাম এবং তার বোনকে উদ্ধার করে ভর্তি করেছিল হাসপাতালে। আইসিইউ-তে ভর্তি রয়েছে রিহামের বোন। তবে বোনের জীবন বাঁচিয়ে দিলেও ছোট্ট রিহামকে বাঁচানো যায়নি। হাসপাতালে ভর্তি করেও শেষ রক্ষা হয়নি। স্ত্রী এবং এক সন্তানকে হারিয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত আমজাদও। শরীরে হাজার ক্ষত নিয়েও এখন তাঁর একটাই প্রার্থনা, ছোট মেয়েটা যাতে বেঁচে যায়।

সিরিয়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘হোয়াইট হেলমেটস’-এর সদস্যেরাই সে দিন ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করেছিলেন রিহামদের। এখনও পোক্ত প্রমাণ না-মিললেও, তাঁদের দাবি— এই হামলা সিরিয়ার সরকার-পন্থী রুশ বাহিনীর। ওই এলাকায় কর্মরত ব্রিটেনের এক মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, শুধু ওই দিনেই ইদলিবের তিনটি এলাকায় রুশ বিমান হানায় ৫ শিশু-সহ প্রাণ গিয়েছে ২০ জনের। যার মধ্যে খান-শেইকুনে একই পরিবারে নিহতের সংখ্যা ১০। সব শেষ!

স্থানীয়েরা বলছেন, এপ্রিলের শেষ থেকে এমনটাই ঘটে চলেছে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায়। সম্প্রতি পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত দু’সপ্তাহে নিহতের সংখ্যা শতাধিক। ইদলিবের মতো হামা এবং পশ্চিম আলেপ্পোতেও চলছে ধ্বংসলীলা। বলা হচ্ছে, এগুলিই বিদ্রোহীদের শেষ শক্ত ঘাঁটি। তাই ‘বন্ধু’ রাশিয়াকে সঙ্গে নিয়ে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার।

এই পরিস্থিতিতে কেউ পালিয়ে বাঁচতে চাইছেন। তো কেউ মার্কিন হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়ে ভিডিয়ো পোস্ট করছেন ফেসবুকে। এলাকা দখলের লড়াইয়ে যে ভাবে রোজ লাফিয়ে লাফিয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে তাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের পাশাপাশি বহু সংগঠন সুর চড়াচ্ছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest