জমে উঠেছে মার্কিন মুলুকের রাজনীতির খেলা। ভারতীয় বংশদ্ভুত কমলা দেবী হ্যারিসকে পাশে নিয়ে মোক্ষম চাল দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণা হয়েছে কমলার। এই ঘটনা সামনে আসার পর থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে মোদিও খানিকটা অস্বস্তিতে পড়েছেন বলে মনে করছেন কূটনৈতিক মহল।
অনাবাসী ভারতীয়দের মোদী আবেগকে কাজে লাগিয়ে ‘হাউডি মোদী’ অনুষ্ঠান করে তাদের ভোট হাতানোর মতলব ছিল ট্রাম্পের। সেখানে স্লোগানও উঠেছিল ‘আব কি বার ট্রাম্প সরকার।’মোদীকে সামনে রেখেছে অনাবাসী ভারতীয়দের ভোট হাতানোর ট্রাম্পের মতলবে ঝামা ঘষে দিলেন বাইডেন।
আরও পড়ুন : স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে রেড রোডে করোনার বিরুদ্ধে বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতার
কমলাকে সামনে রেখে তিনি একদিকে বর্ণ বিদ্বেষের বিরুদ্ধ আবেগকে কাজে লাগাতে চান, অন্যদিকে ভারতীয় আবগেকে ভোট রূপানন্তরিত করতে চান।
ট্রাম্পের ফর্মুলায় মোদীও ‘নমস্তে ট্রাম্প’ অনুষ্ঠান করে এই বার্তা দিতে চেয়েছিলেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁকে ব্যাক্তিগতভাবে কতখানি পছন্দ করেন। বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী লোক তাকে চাইছেন। অতএব তিনি অবিসংবাদিত দেশ নায়ক। গেরুয়ায় শিবিরের লোক এতে আহ্লাদে আটখানা হয়। আয়োজিত অনুষ্ঠানে ট্রাম্প মোদী সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বাংলায় একে বলে পরস্পরের পিঠ চুলকানো। কিন্তু কমলাকে প্রাথীর করার পর আর কি মোদী আবেগ কাজে লাগবে ? কপালে ভাঁজ পড়েছে ট্রাম্পের। মোদির মাথায় অবশ্য নয়া কোনো টোটকা আছে কিনা এখনো জানা নেই।
ডেমোক্র্যাট দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে মনোনীত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমলার তুখোড় বাক্যবাণ আর আগ্রাসী মেজাজে তুলোধনা করলেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।কমলার নাম ঘোষণার পরে বুধবার ডেলাওয়্যারের উইলমিংটন শহরে প্রথম প্রচারসভা করেন জো-কমলা জুটি।
এ দিনের সভায় তার দীর্ঘ তালিকা পেশ করেন কমলা। প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ব্যর্থ, সে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘অযোগ্য কাউকে নির্বাচিত করলে, তার ফল এই রকমই হবে।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘আজ বিশ্বের দরবারে আমাদের দেশ ও দেশের সম্মান ভূলুন্ঠিত।’’
হ্যারিসকে এক জন নির্ভীক যোদ্ধা বলেও বর্ণনা করেছেন বাইডেন। হ্যারিসকে মনোনীত করার পর বাইডেন বলেন, “আমরা দু’জনে মিলে এ বার ট্রাম্পকে কড়া টক্কর দেব।” বাইডেনের সহযোদ্ধা হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর হ্যারিস টুইট করেন, “এই মনোনয়নের জন্য আমি গর্বিত। বাইডেন যাতে প্রেসিডেন্ট হতে পারেন তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব।” গত মার্চেই বাইডেন এ প্রসঙ্গে আভাস দিয়েছিলেন কোনও মহিলাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের টিকিট দেবেন তিনি। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলেন।
মোদী ‘আমার বন্ধু’ এই আবেগে অনাবাসী ভারতীয়দের ভোট জয়ের যে ছক ট্রাম্প কষেছিলেন তাতে ঠান্ডা জল ফেলে দিলেন কমলা দেবী হ্যারিস। ওই আবেগে আর কাজ হবে না। তাছাড়া একটা বর্ণ বিদ্বেষ হাওয়া ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যেতে পারে বলে মনে হচ্ছে। এই লড়াইয়ে অনেকেই বাইডেন জুটিকে এগিয়ে রাখছেন। এখন দেখার মোদীর সাঙ্গ -পাঙ্গরা আগের মত ট্রাম্পের জন্য যজ্ঞ শুরু করেন কিনা। ট্রাম্প অবশ্য নিজের স্টাইলে বলেছেন, কমলার থেকে অনেকে বেশি লোক আমার সঙ্গে আছে।
আরও পড়ুন : স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলন ঘিরে খানাকুলে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষ, নিহত BJP কর্মী