Site icon The News Nest

কৃষ্ণাঙ্গ বিক্ষোভ জ্বলছে আমেরিকা, হিংসায় প্ররোচনার অভিযোগে মুছে দেওয়া হল ট্রাম্পের টুইট

e67b53c66385cd8fbaacdbd65496ad98

ওয়াশিংটন: আমেরিকায় নিরস্ত্র একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার পর একজন পুলিশ অফিসার হাঁটু দিয়ে তার গলা চেপে ধরার পর ওই ব্যক্তির মৃত্যু দেশটিতে সংখ্যালঘু বর্ণ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পুলিশের অত্যাচারকে আরও একবার সামনে আনল।

মিনিয়াপোলিস অঙ্গরাজ্যের একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তা কর্মী হিসাবে কাজ করতেন ৪৬ বছর বয়স্ক জর্জ ফ্লয়েড। ২৫শে মে তারিখ সন্ধ্যায় সন্দেহভাজন একটি অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তাকে ধরে।

একজন প্রত্যক্ষদর্শীর তোলা ১০ মিনিটের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জর্জের ঘাড়ের উপর হাঁটু চেপে ধরে আছে এক পুলিশ আর জর্জ ফ্লয়েড নি:শ্বাস না নিতে পেরে কাতরাচ্ছেন। জর্জকে বলতে শোনা গিয়েছে “আমি নি:শ্বাস নিতে পারছি না”। এই ঘটনার ৫ মিনিটের মধ্যেই জর্জ মারা যায়। আর এর পরই বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে আমেরিকার একাংশ।

সেই আগুনে ঘি ঢালার কাজ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! টুইটারে বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি দিলেন, ‘লুঠ শুরু হলে, শুট (গুলি) শুরু হবে।’

ট্রাম্পের টুইটের পর মিনেসোটার থানায় আগুন লাগান বিক্ষোভকারীরা। প্রাণ বাঁচাতে পালান পুলিশকর্মীরা! চলে দেদার ভাঙচুর, লুঠপাট। ক্ষোভের আগুন ছড়িয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া, ইলিনয়, লস অ্যাঞ্জেলিস, শিকাগো, মেমফিস, টেনেসিতেও। সেখানেও পথে নেমেছেন শয়ে শয়ে কৃষ্ণাঙ্গ। ট্রাম্পের এই বিতর্কিত টুইট লুকিয়ে দিয়েছে টুইটার। তার জায়গায় লিখে দেওয়া হয়েছে, ‘হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ার বিধি লঙ্ঘন করেছে এই টুইট।’ এমনকী, প্রেসিডেন্টের টুইট শুক্রবার সকালে নতুন করে পোস্ট করা হয়েছিল হোয়াইট হাউসের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে। সেখানেও একই বার্তা সেঁটেছে টুইটার। বিতর্কিত টুইটটি যাতে বেশি সংখ্যায় মানুষের কাছে পৌঁছতে না পারে, সেই ব্যবস্থাও নিচ্ছে টুইটার। কোনও দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের ক্ষেত্রে সম্ভবত এমন নজির নেই।

এ দিকে, হিংসার খবর সংগ্রহে গেলে গ্রেপ্তার করা হয় সিএনএন-এর কৃষ্ণাঙ্গ সাংবাদিককে। তাতে মানুষের ক্ষোভ আরও বেড়ে গিয়েছে। প্রেসিডেন্ট এবং প্রশাসনের এমন আচরণের বিরুদ্ধে সরব প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের ডেমোক্র্যাট প্রতিপক্ষ জো বাইডেন। যে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসারের হাঁটুর চাপে প্রাণ গেল কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির, তিনি বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ কাজ করতে গিয়ে কৃষ্ণাঙ্গ সাংবাদিক কেন গ্রেপ্তার হলেন, প্রশ্ন বাইডেনের। এ দিকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেছেন, ‘বর্ণবিদ্বেষ ২০২০-র আমেরিকায় স্বাভাবিক ঘটনা হতে পারে না।’

জর্জের মৃত্যুতে অভিযুক্ত চার পুলিশকর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, খুনের মামলা শুরু করতে হবে তাঁদের বিরুদ্ধে। একই দাবি মৃতের পরিজনের। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে শাস্তির দাবি তুলেছেন মিনেসোটার মেয়র জেকব ফ্রে। বিক্ষোভকারীদের এখন একটাই বক্তব্য, ‘কৃষ্ণাঙ্গের জীবনেরও মূল্য আছে, সেটা বুঝতেই হবে।’

Exit mobile version