লজ্জার ঘটনার সাক্ষী থাকল মার্কিন রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি। একদল ট্রাম্প সমর্থক প্রকাশ্য রাস্তায় দাঙ্গা করল, তারপর পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে মার্কিন সংসদের ভেতর প্রবেশ করে ভাঙচুর করে। এদিনই মার্কিন রাষ্ট্রপতি ভোটে জয়ী ইলেকটরাল কলেজকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। অর্থাৎ জো বাইডেনের জয় পাবে আনুষ্ঠানিক সিলমোহর। তার প্রতিবাদেই ট্রাম্প সমর্থকদের এই লাগামছাড়া আচরণ যার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ভারত সহ গোটা বিশ্বের রাষ্ট্রনেতারা।
ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।তিনি টুইটারে ঘটনার প্রেক্ষিতে লিখেছেন, ‘ওয়াশিংটন ডিসিতে সংঘর্ষ ও হিংসার ঘটনায় আমি অত্যন্ত আহত। নিয়মমাফিক ও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া যেন চলতে থাকে। একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে কখনই বেআইনি আন্দোলনের দ্বারা বেপথে চালিত হতে দেওয়া যায় না’।
Distressed to see news about rioting and violence in Washington DC. Orderly and peaceful transfer of power must continue. The democratic process cannot be allowed to be subverted through unlawful protests.
— Narendra Modi (@narendramodi) January 7, 2021
গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প জমানার শেষ যে এ ভাবে হবে, তা ভাবতে পারেননি কেউই। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি টুইটে লিখেছেন, ‘আমেরিকায় গণতন্ত্রের উপর ঘটে যাওয়া হামলায় কানাডাবাসীরা তাঁদের নিকটতম সঙ্গী ও প্রতিবেশীকে নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। হিংসা কখনই একটি দেশের সাধারণ মানুষের দেওয়া রায়কে পাল্টে দিতে পারে না। আমেরিকায় গণতন্ত্রকে তুলে ধরতে হবে’।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, ঘটনাটি খুবই উদ্বেগের। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডেন টুইট করে লিখেছেন, ‘যা হচ্ছে, ঠিক হচ্ছে না। গণতন্ত্র মানে সাধারণ মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার। তাঁদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। সেই মতামতের ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এই প্রক্রিয়াকে কখনই কোনও সন্ত্রাসের মুখে পড়তে দিলে চলবে না।’
আরও পড়ুন: পাহাড় চূড়ায় প্রেমের প্রস্তাব, ‘হ্যাঁ’ বলার পরই ২০০ মিটার নিচে ছিটকে পড়লেন মহিলা
জার্মানির সরকারি আধিকারিক পিটার বায়ার জানিয়েছেন, ‘আমরা গণতন্ত্রিক কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানের আধারের উপর হামলা লক্ষ্য করলাম। তবে এটি কেবলমাত্র আমেরিকার ইস্যু নয়, এটি সারা পৃথিবীর গণতান্ত্রিক পরিবেশের ইস্যু’।
ঘটনায় তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁর ছায়াসঙ্গী ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য স্টিফান সেজোর্ন জানিয়েছেন, ‘ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। এমনই হয় যখন কেউ ঘৃণার রাজনীতিকে সামনের সারিতে নিয়ে আসেন। আসুন আমরা গণতন্ত্রকে রক্ষা করি’।
ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেন্স স্টোলটেনবার্গ আমেরিকার সাধারণ মানুষকে নভেম্বরের নির্বাচনে হওয়া ফলাফলকে মেনে নিতে বলেছেন। এ ছাড়াও অস্ট্রিয়া, পোল্যান্ড, ইকুয়েডর, কলোম্বিয়া, স্কটল্যান্ডের মতো দেশের শীর্ষ প্রশাসকরা নানাবিধ ভাষায় ঘটনার নিন্দা করেছেন।
আরও পড়ুন: মন্দিরে ভাঙচুর, মামলা দায়ের করলেন খোদ পাক প্রধান বিচারপতি, শুনানি ৫ জানুয়ারি