২ বছর ধরে লন্ডনে শুনানি চলছে নীরব মোদী ভারত-প্রত্যর্পণ মামলার। এ বার শুনানিতে তাঁর ভারতে প্রত্যর্পণে সায় দিল ব্রিটিশ আদালত। বিচারপতি সাফ জানিয়েছেন, এমন কোনও প্রমাণ নেই যেখান থেকে বলা যায় নীরব মোদী ভারতে ফিরলে ন্যায় পাবেন না। তাই নীরব মোদীর ভারত-প্রত্যর্পণ হতে পারে।
১৪ হাজার কোটি টাকার পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক স্ক্যামে অভিযুক্ত নীরব মোদী। শুনানি চলাকালীন ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ৪৯ বছরের নীরব মোদী। বিচারপতি জানান, ভারত থেকে তিনি ১৬ দফা প্রমাণ পেয়েছেন। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের এই ছাড়পত্র এরপর ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র সচিব প্রীতি পাটেলের কাছে যাবে। তবে অন্যপক্ষেরও মামলা হাইকোর্টে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসেই ভারত ছেড়ে পালিয়ে যান নীরব মোদী ও তার মামা মেহুল চোস্কি। তারপর ব্রিটেনে আত্মগোপন করেন নীরব মোদী। ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ লন্ডনের একটি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে গ্রেফতার হন নীরব। ভারত তাঁর পাসপোর্ট আগেই বাতিল করে দিয়েছিল। কিন্তু গ্রেফতারির পর দেখা যায় নীরবের হেফাজতে একাধিক পাসপোর্ট রয়েছে। তাছাড়া নীরবের কাছে একাধিক রেসিডেন্সি কার্ড রয়েছে। যার মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ে থাকার অনুমতি রয়েছে।
আরও পড়ুন: সংসদের মধ্যে ধর্ষণের শিকার, নির্যাতিতার কাছে ক্ষমা চাইলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী
এদিন ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, নীরব তথ্যপ্রমাণ লোপাট ও সাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। বিচারক জানিয়েছেন, মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেলের বারাক ১২ নীরবের জন্য আদর্শ জায়গা। তবে ভারতে প্রত্যর্পণ হলেও বিচারব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত করা হবে না তাঁকে। নিজের নির্দোষ প্রমাণ করার সুযোগ তাঁকে দেওয়া হবে।
এদিন আদালতে শুনানির সময় নীরবের আইনজীবী দাবি করেন, মানসিক অবসাদে ভুগছেন তাঁর মক্কেল। বিচারক পাল্টা বলেন, এমন পরিস্থিতি অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তিনি এও জানিয়েছেন, নীরব মোদীকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হবে। জেলে মানসিক রোগেরও চিকিৎসা হবে। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ নীরবের মামলায় প্রভাব খাটাচ্ছেন, এমন অভিযোগ খারিজ করেছে আদালত।
খোদ নীরব মোদী ব্যক্তিগত ভাবে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে চিঠি লিখে ঋণ পরিশোধের কথা জানিয়েছেন, ব্রিটিশ আদালতে শুনানিতে উঠে এসেছে এই কথাও। শুনানিতে বিচারক জানিয়েছেন, সিবিআই তদন্ত করে নীরব মোদীর নামে একাধিক ভুয়ো সংস্থার খোঁজ পেয়েছে। স্যামুয়েল গুজ বলেন, “আমি মানতে নারাজ যে নীরব মোদী বৈধ ব্যবসা করতেন। লেনদেনে একাধিকবার তিনি অসৎ পথ অবলম্বন করেছেন।”
আরও পড়ুন: এক টুইটে ১৫০০ কোটি ডলার হারালেন ইলন মাস্ক! হাতছাড়া হল ধনীতম তকমা