কালো মানুষদের অধিকারের দাবিতে এক সময় আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছিল আমেরিকা। সেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন যাঁরা, তাঁদেরই ফেলে যাওয়া ব্যাটনটা সাড়ে ৬ দশক পর নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন কমলা হ্যারিস, আমেরিকার প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাঁর ধমনীতে মিশেছে তিন মহাদেশ— আফ্রিকা, আমেরিকা এবং এশিয়া। অতিমারির সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশে ঘটে যাওয়া নির্বাচনে এ-ও এক নীরব বিপ্লব।
গত অগাস্টেই বাইডেন ঘোষণা করেন, ডেমোক্রাটদের লড়াইয়ে জয় এলে কমলা হ্যারিসই হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। ব্যাটেলগ্রাউন্ড পেনসিলভেনিয়ার লড়াইয়ে জিতে হোয়াইট হাউসে ঢোকার ছাড়পত্র পেয়ে গেলেন বাইডেন। আর একইসঙ্গে কমলাও পা বাড়ালেন সাদা বাড়ির দিকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কমলা হ্যারিসই হবেন প্রথম মহিলা উপরাষ্ট্রপতি। পাশাপাশি একজন কৃষ্ণাঙ্গ ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলা।
আরও পড়ুন: ‘একের পর এক মিথ্যা’, ট্রাম্পের বক্তব্যের লাইভ সম্প্রচার বন্ধ একাধিক মার্কিন সংবাদমাধ্যমে
বারবারই তাঁর কথায় উঠে এসেছে তাঁর মাতৃভূমি ভারত বিশেষত তামিলনাড়ুর কথা। কমলার মা প্রয়াত শ্যামলা গোপালান ছিলেন তামিলনাড়ুর বাসিন্দা, পড়াশোনার সূত্রে আমেরিকায় যাওয়ার আগে। সেখানে গিয়ে এক কৃষ্ণাঙ্গের প্রেমে পড়েন ও তাঁকে বিয়েও করেন। যদিও খুব বেশি দিন টেকেনি সেই বিয়ে। কর্মসূত্রে আমেরিকায় থেকে গেলেও ভারতের সঙ্গে যোগ ছিন্ন করেননি শ্যামলা। ছুটিতে চেন্নাইতেও নিয়ে আসতেন তাঁর দুই মেয়েকে।
ওকল্যান্ডে আইনজীবী হিসেবে শুরু। দ্রুতই কাজের মাধ্যমে সকলের নজর কাড়েন। সাফল্যের লিফট চড়ে ২০১০ ও ২০১৪ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন। বরাবরই সংস্কারপন্থী হ্যারিস ক্য়ালিফোর্নিয়ার আইনে একাধিক পরিবর্তিন এনেছেন। সানফ্রান্সিকোয় তিনি প্রথম চালু করেন, প্রথমবার কেউ ড্রাগ নিয়ে ধরা পড়লে তাকে পড়াশোনা ও কাজের সুযোগ দেওয়া হবে।
২০১৬ সালে দ্বিতীয় কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা ও প্রথম ভারতীয়-আমেরিকান মহিলা হিসেবে সেনেটে নির্বাচিত হন তিনি। ২০২০ সালে রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে নাম দিলেও সেখানে হেরে যান। তাঁরপর তাঁকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রস্তাব দেন জো বাইডেন, যেটা সাগ্রহে গ্রহণ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: পেনসিলভানিয়ায় জিতে ম্যাজিক ফিগার পার, আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন জো বাইডেন