বেঙ্গালুরু: সানরাইজার্সের আস্তিনে রশিদ-ভুবনেশ্বরদের মতো গেমচেঞ্জার বোলার থাকা সত্ত্বেও ১৭৬রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৪ উইকেটে থ্রিলার লড়াই জিতে নিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর৷ শেষ ওভারের ম্যাচ জিততে আরসিবি’র প্রয়োজন ছিল ৬ রান৷ ওভারের প্রথম দুই বলে দুটি চার হাঁকিয়ে ব্যাঙ্গালোরকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন উমেশ যাদব৷ সেই সঙ্গে সানরাইজার্সেক হারানোর নাইটদের সামনে এখন সুবর্ণ সুযোগ৷ রবিবার মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিতলে সরাসরি প্লে-অফ খেলার ছাড়পত্র পেতে পারে কিং খানের দল।
১৭৬ রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে মাত্র ২০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে আরসিবি৷ পাওয়ার প্লে-র প্রথম তিন ওভারের মধ্যেই পার্থিব(০)-কোহলি(১৬) ও এবিডি’র(১রান) দামি উইকেট হারানোয় সবাই যখন ধরে নিয়েছে শেষ ম্যাচে হার দিয়েই আরিসিবি বিদায় লেখা আছে, তখনই বিধ্বংসী ব্যাটিং সিমরন হেটমারের৷ ৪৭ বলে ৭৫ রানের ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন হেটমারের৷ আইপিএলের প্রথম মরশুমে এটি প্রথম অর্ধশতরান ক্যারিয়িবান ক্রিকেটারের৷ তরুণ বাঁ-হাতির ইনিংস সাজানো ৪টি চার ও ৬টি ছয়ে৷ তাঁকে যোগ্য সংগত দেন গুরকিরাত মান সিং৷ আরসিবি’র জার্সির মান রেখে এদিন ৪৮ বলে ৬৫ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস গুরকিরাতের৷ আইপিএলে এটি গুরকিরাতের দ্বিতীয় অর্ধশতরান৷ হেটমারের সঙ্গে জুটিতে ১৪৪ রানের পার্টনাশিপ গড়েন গুরকিরাত৷ হেটমায়ার-গুরকিরাত আউট হলেও শেষ ওভারে জোড়া বাউন্ডারিতে ম্যাচ জিতিয়ে দেন উমেশ৷
উল্লেখ্য, চলতি আইপিএল থেকে ইতিমধ্যেই বিদায় নিয়েছে আরসিবি। তা সত্ত্বেও হঠাৎই শনিবার টুর্নামেন্টে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল বিরাট কোহলিরাই।তাঁরা কী ফলাফল করছেন, তার উপরই অনেকখানি নির্ভর করছিল প্লে অফের সমীকরণটা। যে দল ছিটকে গিয়েছে, সেই আরসিবির জয়ের জন্যই এদিন প্রার্থনা করছিলেন কেকেআর সমর্থকরা। বিরাটরা জিতলেই তো দীনেশ কার্তিকদের প্রথম চারে থাকার আশাটা প্রকট হবে। নাইটভক্তদের সেই প্রার্থনা সত্যিই কাজে এল। ভাল খেলেও পরাস্ত কেন উইলিয়ামসন। আর নিজেদের শেষ ম্যাচে হায়দরাবাদকে হারিয়েই নাইটদের প্লে অফে পৌঁছনোর আশা উজ্জ্বল করলেন কোহলিরা।
টুর্নামেন্টের শুরুটা দু’বারের চ্যাম্পিয়নদের মতোই করেছিলেন কার্তিকরা। কিন্তু ভুল দল বাছাই আর স্ট্র্যাটেজিতে গলদই টানা ছ’টা ম্যাচে পরাস্ত করল কিং খানের দলকে। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত কামব্যাক হল ঠিকই। কিন্তু ততক্ষণে প্লে অফের অঙ্কটা বেশ কঠিন হয়ে গিয়েছে। তবে এদিন হায়দরাবাদ হারায় অনেকখানি অক্সিজেন পেলেন কার্তিকরা। চলুন একবার দেখে নেওয়া যাক, এই ম্যাচের পর লিগ তালিকার ছবিটা ঠিক কেমন।
চেন্নাই (১৮) আগেই প্লে অফে গিয়ে বসে আছে। অবিশ্বাস্য কোনও অঘটন না ঘটলে শীর্ষস্থান থেকে ধোনিদের টলানো যাবে না। রবিবার তাদের ম্যাচ কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে। যাদের হারানোর আর কিছু নেই। এদিকে, এদিন রাজস্থান রয়্যালসকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থান কার্যত নিশ্চিত দিল্লি ক্যাপিটালসের (১৮)। তবে ১৬ পয়েন্টে তিন নম্বরে থাকা রোহিত শর্মারা কেকেআরের বিরুদ্ধে বড় ব্যবধানে জিতলে দিল্লিকে টপকে যেতেই পারে। সেক্ষেত্রে দাঁড়াবে, প্লে অফে খেলবে চেন্নাই, দিল্লি, মুম্বই এবং হায়দরাবাদ। অর্থাৎ কিং খানের সফর শেষ হবে রবিবারই। কিন্তু রাসেল ঝড়ে যদি তছনছ হয়ে যায় বাণিজ্য নগরী, তবে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে চারে পৌঁছে যেতেই পারে নাইট বাহিনী। সানরাইজার্স জিতলে রান রেটের হিসেব কষতে হত নাইটদের। কারণ নাইটরা জিতলেও দুই দলের পয়েন্টই হয়ে যেত ১৪। তবে এদিন আরসিবি জিতে যাওয়ায় মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে শুধু দু’পয়েন্ট পেলেই নাইটদের কাজ মিটে যাবে।