ওয়েব ডেস্ক: রঙ্গোলি চান্দেলের বিতর্কিত টুইট নিয়ে এবার মুখ খুললেন কঙ্গনা রানাউত। সোশ্যাল মিডিয়া সাইট টুইটারকে বন্ধ করা আবেদন জানিয়েছেন তিনি। সঙ্গে রিমা কাগতি, ফারাহ খান আলিকে একহাত নিয়েছেন তিনি।
বলিউডের অন্যতম ঠোঁট কাটা ব্যক্তিত্ব হিসাবেই পরিচিত কঙ্গনা রানাওয়াতের দিদি তথা ম্যানেজার রঙ্গোলি চান্দেল। দেশজুড়ে ঘটে চলা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিগ্রহের ঘটনার সমালোচনা করতে গিয়েই বৃহস্পতিবার এই বিতর্কিত টুইট করেন রঙ্গোলি। মূলত মোরাদাবাদের ঘটনার প্রেক্ষিতেই এই মন্তব্য তাঁর। সাম্প্রদায়িক মন্তব্যের বাইরে টুইটে ভুয়ো তথ্য দেন রঙ্গোলি, যা টুইটারের গাইডলাইন বিরোধী। আর এই কারণেই তাঁর অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে সরব হয়েছেন এবার নায়িকা কঙ্গনা রানাওয়াত।
অভিনেত্রী একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। নিজের টিমের ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টেই সেই ভিডিয়ো তুলেছেন তিনি। খুব দৃঢ়ভাবে রঙ্গোলির পক্ষ নিয়ে কঙ্গনা জানিয়েছেন যে, তিনি কোনও ভুল করেননি। কঙ্গনা ইনস্টাগ্রামে হিন্দিতে ভিডিয়ো করে খুব জোরের সঙ্গে জানান যে, গণতন্ত্রে বাক স্বাধীনতার গুরুত্ব কী। তিনি এও দাবি করেছেন যে রঙ্গোলি কোনও ভাবেই মুসলিমদের গণহত্যার বিষয়কে সমর্থন করেননি। তিনি শুধু তাঁর মনের ভাষা ব্যক্ত করেছেন কোনও সমস্যা ছাড়াই।রঙ্গোলি সব মুসলিমদের জঙ্গি বলেও মনে করেন না, জানিয়েছেন কঙ্গনা।
আরও পড়ুন: লকডাউনে জুড়ছে ভাঙা সম্পর্ক! অবন্তিকার পোস্টে মিলছে ইঙ্গিত
এরপরই কেন্দ্র সরকারের কাছে টুইটার বন্ধের আবেদন করেন কঙ্গনা। জানান, টুইটারের মতো সোশ্যাল সাইট যে থালায় খাচ্ছে, তাতেই ছেদ করছে। এখন থেকেই ওরা কোটি কোটি টাকা আয় করছে। অথচ এই দেশেরই ক্ষতি করছে তারা। এখানে প্রধানমন্ত্রীকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সন্ত্রাসবাদী বলা যায়। আরএসএসের মতো প্রতিষ্ঠান, যারা দিনরাত লোকের সেবায় নিযুক্ত, তাদের সন্ত্রাসবাদী বলা হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত যারা সন্ত্রাসবাদী, তাদের বলা যায় না। এই জাতীয় সংস্থা বন্ধ করে দেওয়া দরকার। দেশ এখন অন্য এক সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁর আবেদন এই জাতীয় সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে নিজেদের কোনও প্ল্যাটফর্ম খোলা উচিত।
এখানেই থামেননি কঙ্গনা। এরপর ববিতা ফোগাতের বিষয়টিও টেনে এনেছেন তিনি। বলেন, ববিতাকে হেনস্তা করা হচ্ছে। যারা রাষ্ট্রবাদের জন্য সরব হয়, তাদেরকেই হেনস্তা করা হয়। কাউকে চাকরি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কাউকে মেরেও ফেলা হয়। ববিতা ঘটনাচক্রে তারই শিকার। তাঁকে যেন সুরক্ষা দেওয়া হয়, সেই আবেদনও করেন কঙ্গনা।এর পাশাপাশি কঙ্গনা ভিডিয়ো শেষ করার আগে হাসিমুখে সকলকে ‘হ্যাপি লকডাউন’ বলেন।
টুইটারকে ভারত বিরোধী প্ল্যাটফর্ম বলে উল্লেখ করে রঙ্গোলি আগেই জানিয়েছেন, ‘আমার কোন ইচ্ছাই নেই এই ধরণের প্ল্যাটফর্মে নিজের চিন্তাভাবনা ও সত্ দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার, তাই আমি আমার অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করব না, আমি আমার বোনের মুখপাত্র ছিলাম, এবার ওঁর সরাসরি সাক্ষাত্কারের দিকেই নজর রাখুন। কঙ্গনা একজন মস্ত বড় তারকা, মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার জন্য ওর অনেক রাস্তা রয়েছে, একটা পক্ষপাতদুষ্ট মাধ্যমকে সহজেই এড়িয়ে চলা যাবে’।
রঙ্গোলির সেই টুইটের বিরুদ্ধে সরব হন পরিচালক রিমা কাগতি, জুলেয়ারি ডিজাইনার তথা সুজান খানের দিদি ফারহা খান আলি। তাঁরা মুম্বই পুলিশ ও টুইটার ইন্ডিয়াকে ট্যাগ করে রঙ্গোলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন, এমনকি রঙ্গোলিকে গ্রেফতারের দাবি তোলেন।
কঙ্গনার এই মন্তব্যের পাল্টা দিয়েছেন ফারহাও। তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় কঙ্গনা, তোমাকে আমি শুরুতেই বলে রাখি আমি তোমার ভীষণ বড় ভক্ত এবং তুমি দুর্দান্ত অভিনেত্রী’। অ্যাসিড আক্রান্ত রঙ্গোলির লড়াইকে তিনি কুর্নিশ জানান বলেও উল্লেখ করেন। তবে ‘কিছু মানুষের ভুলের জন্য গোটা একটা সম্প্রদায়ের মানুষকে কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যার দাবি করাটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়’।
আরও পড়ুন: যৌনকর্মীদের জন্য অর্থসংগ্রহের উদ্যোগ, তৈরি হল ‘জাঙ্গিয়া রহস্য’