জ্ঞানেশ্বরী কাণ্ডে মৃতদের মধ্যে খোঁজ মিলল এক জন জীবিতের। ডিএনএ-র জাল রিপোর্ট জমা দিয়ে চাকরি এবং ক্ষতিপূরণের টাকা হাতানোর অভিযোগে ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে অভিযুক্ত অমৃতাভ চৌধুরী ও তাঁর বাবাকে।
জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন অমৃতাভ চৌধুরী। কলকাতার জোড়াবাগান এলাকার বাসিন্দা। জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান অনেকেই। তবে সবাইকে শনাক্ত করা যায়নি। যেমন চেনা যায়নি অমৃতাভ চৌধুরীর দেহও। এরপরে ডিএনএ রিপোর্ট জমা পড়ার পর অমৃতাভর মৃত্যু নিশ্চিত করে তাঁর পরিবারের লোকজনকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দক্ষিণ-পূর্ব রেল নগদ ৪ লক্ষ টাকা দেয়। অমৃতাভর বোন মহুয়া পাঠককেও রেলে চাকরি দেওয়া হয় বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। জ্ঞানেশ্বরী কাণ্ড নিয়ে বহু জল গড়ায় রাজ্য রাজনীতিতে। এদিকে নগদ অর্থ ও বিবাহিত বোনের চাকরি একসঙ্গে হাতে আসায় অমৃতাভ জীবিত থাকার খবর ঘুণাক্ষরেও প্রকাশ করেনি পরিবার।
সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের ভিজিল্যান্স দফতরে কিছু অসঙ্গতি ধরা প়ড়তেই গোটা বিষয়টি সামনে আসে। রেলের তরফে সিবিআই-কে বিষয়টি জানানো হয়। এর পরই জোড়াবাগান থেকে আটক করা হয় অমৃতাভ চৌধুরী ও তাঁর বাবাকে।
২০১০ সালে ২৮ মে-র রাতে ঝাড়গ্রামের সর্ডিহার রাজাবাঁধ এলাকায় লাইনচ্যুত হয়ে ওই রেল দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সেই সময়ে ডাউন লাইনে উল্টোদিক থেকে আসা একটি মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের। ঘটনায় ১৪৮ জন মারা গিয়েছিলেন বলে খবর। মৃতদের সেই তালিকাতেই ছিল অমৃতাভর নাম। রেলের একটি সূত্রের দাবি, ডিএনএ পুলিশ দেয়। রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত তারা, ফলে এক্ষেত্রে রেলের গাফিলতি নেই। সেই রিপোর্ট দেখেই ক্ষতিপূরণ দিয়েছে রেল।
দক্ষিণ পূর্ব রেলের ভিজিল্যান্সের চিফ এসডিজিএম জানিয়েছেন, বহুদিনের মামলা ফলে তাঁর বিষয়টি অজানা। একই কথা বলেন ওই রেলের সিপিআরও। তিনি বলেন, “মামলাটি বহু পুরনো তাই খতিয়ে দেখা হবে।” অমৃতাভ চৌধুরির বোন মহুয়াদেবী এখন শিয়ালদহের সিনগন্যাল অ্যান্ড টেলিকম বিভাগে কর্মরত বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই। দীর্ঘ এগারো বছর জীবিত থেকেও মৃত পরিচয় দিয়ে সরকারি টাকা ও চাকরি ভোগ করার জন্য আইনগত সবরকমের পদক্ষেপ নিচ্ছে সিবিআই। ডিএনএ রিপোর্ট আসল না নকল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারি কেউ এই অপরাধে জড়িত কী না তাও দেখছেন তারা।
আরও পড়ুন: ৭ বছর পর জামিন পেলেন সারদাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়