ফ্রন্টের নাম ঘোষণা করলেন আব্বাস সিদ্দিকী, অতি উৎসায়ী বাম-রাম-কং

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

সরাসরি রাজনৈতিক ‘দল’ তৈরি করলেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি( Abbas Siddiqui)। ‘দল’ বলা হলেও এই নতুন সংগঠনটির নাম- ‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’ (Indian Secular Front)। এই ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আব্বাসের ২৬ বছর বয়সী ভাই নওসাদ সিদ্দিকি, সভাপতি শিমুল সোরেন।

‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’-এর সূচনা করে আব্বাস সিদ্দিকি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য অসহায় মানুষের কন্ঠ হয়ে সমাজের মূল দিকে আনা। আগামী দিনে ব্রিগেডে সভা হবে। সেখানে আরও বেশি মানুষকে জানানো হবে।” ২৬ জানুয়ারি থেকেই শুরু হবে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের রাজনৈতিক কর্মসূচি।

আব্বাস এদিন আরও বলেন, “সাংবিধানিক গণতন্ত্র, সামাজিক মর্যাদা আমাদের দলের মূল লক্ষ্য। স্বাধীনতার পর থেকে বহুদল তৈরি হয়েছে। কিন্তু সংবিধানের প্রথম যে শর্ত তা থেকে বঞ্চিত অনেকেই। পিছিয়ে পড়া ও সংখ্যালঘুরা এখনও অন্ধকারে। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে শিক্ষা-স্বাস্থ্য-অন্ন-বাসস্থান এই চারটি বিষয় নিশ্চিত করা আমাদের লক্ষ্য।”

আরও পড়ুন: পার্টি অফিসে ভাঙচুর–গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, BJP-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রণক্ষেত্র বর্ধমান

জেলাতেও সংগঠন তৈরি করতে তাঁরা তৎপর বলে এদিন জানিয়েছেন আব্বাস। এদিনই তিনি ঘোষণা করেন, ‘জেলাস্তর থেকে ভিত মজবুত করতে হবে। আমাদের কর্মীরা একেবারে প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে কর্মীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেবেন।’

কিছুদিন আগেই আব্বাসের গলায় ধরা পড়েছিল আত্মবিশ্বাসের সুর। তিনি বলেন, “যদি ৫০-৬০ টি আসন চলে আসে, তাহলে আমরাই রাজ্যের ভবিষ্যৎ ঠিক করব। আমরা যাঁর পাল্লায় উঠব, তিনিই মুখ্যমন্ত্রী।” তিনি এও বলেছিলেন, “আমি কিং মেকার। আমিই প্রার্থী তৈরি করি।”

দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘুদের নিয়েই এই ফ্রন্ট। একুশের নির্বাচনে ৬০-৮০ আসনে প্রার্থী দেবে আব্বাসের ‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সংগঠন আত্মপ্রকাশ করায় কিছুটা হলেও আশঙ্কিত তৃণমূল। কারণ, সংখ্যালঘুদের ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটের একটা বড় অংশ হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আর এই আশঙ্কা সত্যি হলে বিজেপির ‘পৌষ মাস’ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, সেক্ষেত্রে ভোট কাটাকাটিতে বিশেষ সুবিধা পেতে পারে গেরুয়া শিবির। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আব্বাস ক্রমশ ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছেন একুশের হাইভোল্টেজ নির্বাচনে। তাই তাঁর প্রতিটি রাজনৈতিক পদক্ষেপের ওপর নজর রাখছে তৃণমূল-বিজেপি-কংগ্রেস-বাম সব পক্ষই।

মুসলিমরা কোনওদিন ধর্ম দেখে ভোট দেয় না। মুসলিমরা কোনো বিশেষ দলের ভোট ব্যাংকও নয়। যদিও কিছু মিডিয়া রা প্রচার করে। মুসলিমরা একসময় কংগ্রেসের সঙ্গে ছিল। পরে তারা এই বাংলায় সিপিএমের সঙ্গে ছিল। বর্তমানে তারা তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছে। সময় ও পরিস্থিতি অনুযায়ী মুসলিম  গণতান্ত্রিক রায়  বদলায়। সেটাই গণতন্ত্রের নিয়ম।

গোটা দেশে বিদ্বেষের বাতাবরণ তৈরী করা হয়েছে পরিকল্পনা মাফিক। সচেতন হিন্দুরা কেবল সেটা বুঝছেন। কিন্তু শিক্ষিত, অশিক্ষিত সমস্ত মুসলিম দেশের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে আতংকিত। তাই এই সময় মুসলিমরা তাদের ভোট বাম, কংগ্রেস কিংবা আব্বাসের ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট-কে দিয়ে নষ্ট করবে না। এবারের ভোট তৃণমূল বনাম বিজেপি। বাকিরা ভোট কাটুয়া। সে কারণেই তারা আব্বাসের দল ঘোষণায় বেজায় খুশি।

বাংলার শিক্ষিত হিন্দুরা জানেন, শ্রী রামের নাম ভয় দেখানো দলটি গোটা দেশের কোনো রাজ্যে সুস্থ পরিবেশ রাখেনি। তারা যে বিদ্বেষ ছড়ায় তা নয়, তারা বিদ্বেষকেই সরকারি নীতি বানিয়েছে। তারপর যে সব বাঙালি এই দলটির প্রতি বিশেষ অনুরক্ত, তাদের বিষয়ে কথা না বাড়ানোই ভালো।

মজার বিষয় হল মুসলিমরা নন, আব্বাসের এই দল ঘোষণার খবরে উৎসাহী বহু গেরুয়াপন্থী হিন্দুও। তারা মনে মনে ভাবছেন আব্বাস বুঝি মুসলিম ভোট সব কেটে দেবেন। মুসলিমরা কোনও আব্বাস, কোনও ত্বহা কিংবা কোনও ওয়াইসির কথা শুনে চলে না। মুসলিমরা ভোট দেয় তার বিবেচনা থেকে। এখন মুসলিমরা বুঝছেন ঘাসফুলের বিরুদ্ধে তাদের যদি অভিমান থেকেও থাকে, তবে সেটা প্রকাশের সময় এটা নয়। তাই আব্বাসের দল ঘোষণা নিয়ে মুসলিমদের কোনও উৎসাহ নেই। যত উৎসাহ রাম মার্কা বাম, গেরুয়া মার্কা কংগ্রেসীদের। এমনটাই ভাবছেন তৃণমূলপন্থী ভোটাররা।

আরও পড়ুন: বিমানবন্দর থেকে সোজা বাবার কবরে গেলেন সিরাজ, চাইলেন দোয়া

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest