ক্ষমতায় আসার স্বপ্নপূরণ হয়নি ঠিকই, কিন্তু বাংলার বিধানসভায় জেতা আসনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পাচ্ছে বিজেপি। তার পরেই দলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে, কে হবেন বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা? দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে বারবার প্রশ্ন করা হলেও তিনি জানান, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে। অবশেষে সেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফেই ঘোষণা করা হল বিরোধী দলনেতা নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের নাম— কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এবং দলের অন্যতম সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব। শনিবার বিজেপি-র পক্ষ থেকে অরুণ সিং এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান এই কথা।
নবান্ন দখলের লড়াইয়ে কার্যত ভরাডুবি হয়েছে BJP-র। আর তারপর থেকেই রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যে অসন্তোষ, একে অপরকে দোষারোপ লেগেই রয়েছে। মুখে কেউ স্বীকার না করলেও আক্ষরিক অর্থেই ছন্নছাড়া বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। তাঁদের একটা বড় অংশেরই অভিযোগ, রাজ্য নেতৃত্বকে গুরুত্ব না দিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের অতিসক্রিয়তাই বাংলায় ভরাডুবির জন্য দায়ী। তাঁদের আরও অভিযোগ, বাঙালির ভাবাবেগ না বুঝেই যেভাবে গোটা রাজ্যে নিজেদের খেয়ালখুশি মতো প্রচার করেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা, তাতে তৃণমূলের ‘বহিরাগত’ তত্ত্ব আরও পালে হাওয়া পেয়েছিল। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বিজেপির শীর্ষ রাজ্য নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছেন, এবার রাজ্যে দল চালাতে দেওয়া হোক তাঁদেরই। কিন্তু বাংলা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ‘সক্রিয়তা’ কিছুতেই যেন থামার নয়। ফের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের নাম ঘোষণায় ক্ষুব্ধ দলের অনেকেই।
আরও পড়ুন: ভোট প্রচারে ‘খুন-খারাপির হুমকি’! মিঠুন ও দিলীপের বিরুদ্ধে দায়ের হল FIR
বিজেপি সূত্রে খবর, বিরোধী দলনেতার দৌড়ে নাম রয়েছে তৃণমূলত্যাগী মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীর। তৃণমূলের দীর্ঘদিনের সেনাপতি মুকুল বেশ কয়েক বছর ধরে বিজেপি নেতা। জীবনে প্রথমবার বিধানসভা ভোটে জয় পেয়েছেন মুকুল। বিজেপির ভরাডুবি হলেও মুকুলের জয় ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে স্বস্তি দিয়েছে। ফলে তাঁর নামও রয়েছে বিরোধী দলনেতার দৌড়ে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে ‘জায়েন্ট কিলার’ হয়ে ওঠা শুভেন্দু অধিকারীও রয়েছেন বিরোধী দলনেতার দৌড়ে।
যদিও বিজেপির অপর একটা অংশ, RSS-এর কাউকেই বিরোধী দলনেতার পদে বসাতে চাইছে। সেক্ষেত্রে গত পাঁচ বছর বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় নেতা মনোজ টিগ্গার নামও আলোচনায় উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে অশান্তি বরদাস্ত করব না, শুরুতেই বিজেপিকে হুঁশিয়ারি মমতার