মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগেই দিলীপ ঘোষকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। দেখানোর চেষ্টা হয়েছিল, বিজেপি সঙ্ঘবদ্ধ রয়েছে। ফাটলের কোনও সম্ভাবনা নেই। কিন্তু সেই বৈঠকের দু’দিনের মাথায় আবারও একটি উইকেট পড়ল বিজেপির। পদ্মশিবির ছেড়ে ঘাসফুলে যোগ দিলেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক। উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায় শনিবার তৃণমূলের ভবনে গিয়ে দলীয় মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে যোগ দেন তৃণমূলে। এর ফলে বিজেপির (BJP) বিধায়ক সংখ্যা কমে দাঁড়াল ৭১।
বিজেপির একাধিক বিধায়ক তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন ঘাসফুল সবুজের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁদের সেই হুঁশিয়ারি যে একেবারেই ‘ফাঁকা আওয়াজ’ ছিল না তা গত কয়েকদিনে প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে। দিন কয়েক আগেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরেছেন বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ এবং বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। এবার সেই পথে হাঁটলেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়কও।
আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা সৌমেন রায়। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল করতেন তিনি। মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন এই বিধায়ক। একুশের ভোটের আগে ২০২০ সালে বিজেপিতে যোগ দেন সৌমেন। বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হন তিনি। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, তাঁকে প্রার্থী করার পর থেকেই বিজেপির অন্দরে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। রীতিমতো রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতা-কর্মীরা। জিতে আসার পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল সৌমেনের। অবশেষে শনিবার তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে দলে ফিরলেন তিনি।
নাকের ডগা দিয়ে তৃণমূলে ফিরে গেলেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক। অথচ সে ব্যাপারে কিছুই জানেন না বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার। তিনি বলেন, “এব্যাপারে জানি না।খোঁজ নিচ্ছি। তবে দলের সাথে বেইমানি করা হল।” দিন কয়েক আগেই উত্তরবঙ্গের ২৯ জন বিধায়ককে নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করেছিল বিজেপি। সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গে ৫ বিধায়ক। তাঁরা দলবদল করতে পারেন বলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল। এমন আবহে সৌমেন রায়ের দলবদল সেই জল্পনা আরও উসকে দিল। এবার প্রশ্ন উঠছে উত্তরবঙ্গ বিজেপিতে কি ভাঙন শুরু হয়ে গেল?