এসএসসি (SSC) মামলা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়ল কমিশন। উচ্চ আদালতের নির্দেশ না মেনে কেন চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করা হয়নি? শুক্রবারের শুনানিতে এই প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী ৭ দিনের মধ্যে নম্বর-সহ নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাঁরা ইন্টারভিউতে ডাক পাবেন না, তাঁদেরও নম্বর-সহ নাম প্রকাশ করতে হবে। এদিন এসএসসি-র তরফে কোনও প্রতিনিধি শুনানিতে উপস্থিত না থাকায় বিচারপতি ডেকে পাঠান কমিশনের চেয়ারম্যানকে।
আরও পড়ুন: ওয়েলে নেমে হট্টগোল বিজেপি বিধায়কদের, ৪ মিনিটেই বাজেট ভাষণ শেষ ধনখড়ের
মামলাকারীদের আইনজীবী জানিয়েছেন, শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে যে কোন প্রার্থী কত নম্বর পেয়েছেন, তার সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। যাঁরা ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি, তাঁদের নম্বরও প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট, যাতে তাঁদের ডাক না পাওয়ার কারণও জানা যায়। আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে কমিশনকে হাইকোর্টে আসার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই তালিকা খতিয়ে দেখে পরবর্তী নির্দেশ দেবে বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট। মামলাকারীদের আইনজীবী বলেছেন, ‘তালিকা স্বচ্ছ মনে হলে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।’
সেই নির্দেশের আগে শুক্রবার সকালে কমিশনকে তীব্র ভর্ৎসনা করে হাইকোর্ট। শুনানির শুরুতে কমিশনের আইনজীবী হাজির থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি। সেজন্য কমিশনের চেয়ারম্যানকে ডাকা হয়। সেইসঙ্গে কমিশনকে অপদার্থও বলে হাইকোর্ট। বিচারপতি বলেন, ‘স্কুল সার্ভিস কমিশন অপদার্থ। কী ধরনের আধিকারিক এই কমিশনের দায়িত্বে আছেন? এই কমিশনকে অবিলম্বে খারিজ করা উচিত।’
গত ২১ জুন উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টারভিউয়ের তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তাতে কোনও প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর ছিল না। সেই বিষয় নিয়েই আদালতে মামলা দায়ের করেন প্রার্থীদের একাংশের। তাঁরা দাবি করেন, অনেক যোগ্য প্রার্থীর নাম তালিকায় নেই। আবার অনেকেই যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ইন্টারভিউয়ে ডাক পেয়েছেন। ব্যাপক দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ তোলা হয়। সেই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট।
২০১৯ সালের ১ অক্টোবর। কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) নির্দেশ ছিল, এই সময়ের মধ্যে SSC চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু কমিশনের তরফে তা করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে চলতি বছরের ২১ জুন উচ্চপ্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের তালিকা প্রকাশিত হয়। আর তার পরপরই তালিকায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন জনা কয়েক আবেদনকারী। পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা অভিজিৎ ঘোষ ও মুর্শিদাবাদের মহম্মদ সারিকুল ইসলাম-সহ একাধিক চাকরিপ্রার্থী মামলাটি দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে FIR দায়ের করুক পুলিশ, রাজ্যকে দিতে হবে রেশন-চিকিৎসা : হাইকোর্