আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, পুজো কমিটিগুলিকে এ বছর পঞ্চাশ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। গত বছর রাজ্যের তরফে প্রতিটি কমিটিকে ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছিল। মহিলা পরিচালিত কমিটিগুলি পেয়েছিল ৩০ হাজার টাকা করে অনুদান। এবার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫০ হাজার।
এবার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫০ হাজার। শুধু তাই নয়, এ বছর বিদ্যুতের খরচে প্রতিটি পুজো কমিটি ৫০ শতাংশ ছাড় পাবে। CESC এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা- উভয়ই এই ছাড় দেবে বলেও ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়েই হাইকোর্টে মামলা দায়ের করছিলেন সিটু নেতা সৌরভ দত্ত।
পুজো কমিটিগুলিকে ৫০ হাজার টাকা সাহায্য ও পুরোহিতদের ভাতা নিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন তিনি। আর সেই মামলার প্রেক্ষিতেই এবার হাইকোর্টের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্য সরকারকে।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘অনুদান কি শুধু দুর্গাপুজোতেই দেয় সরকার? না কি অন্য উৎসবেও দেওয়া হয়? ঈদেও কি দেওয়া হয়েছিল?’হাইকোর্ট প্রশ্ন তোলে, ‘দুর্গাপুজো নিয়ে আমরা সকলেই গর্বিত। কিন্তু তাই বলে কি যেমন খুশি টাকা দেওয়া যায়? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কি এই ভেদাভেদ করা যায়?’
রাজ্যের তরফে বলার চেষ্টা করা হয়, করোনা মহামারীর কারণে পুজো কমিটিগুলিকে এই টাকা মাস্ক, স্যানিটাইজার কিনতে দেওয়া হচ্ছে। সেই জবাবের প্রেক্ষিতেও বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা (সরকার )বলছেন যে এই টাকা দেওয়া হচ্ছে মাস্ক-স্যানিটাইজার কেনার জন্য। কিন্তু এটা তো সরকার নিজেই কেন্দ্রীয়ভাবে কিনে করতে পারত। তাতে খরচ কম হত।’
বিচারপতির কথায়, ‘যেখানে সংক্রমণের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনও বন্ধ সেখানে পুজোর অনুমতি কিভাবে দিলেন? কী-কী সুরক্ষা বিধি মেনে চলছেন আপনারা। ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্লু-প্রিন্ট কী? আর সব কাজ পুলিশ করলে ক্লাবকে টাকা দেওয়ার কী যুক্তি?’
অপরদিকে, করোনাকালে বারোয়ারি দুর্গাপুজোর উৎসব বন্ধে বুধবারই হাইকোর্টে আরেকটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। পুজো চলুক, কিন্তু করোনা আবহে উৎসব বন্ধ হোক–এই আর্জিতে অজয় দে নামে অবসরপ্রাপ্ত এক সিইএসসি কর্মী মামলা দায়ের করেছেন। তাঁর বক্তব্য, হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ না করলে দুর্গাপুজোর পরে করোনা সংক্রমণ ভয়ঙ্কর আকার নেবে।
মামলাকারীর আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘করোনা আবহে ও মহামারীর মধ্যে মহারাষ্ট্রে গণেশ পুজোর মিছিল বন্ধ করা হয়েছে। একই কারণে মহরমের মিছিলও বন্ধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আবার এই অবস্থার মধ্যেই কেরলে ওনাম উৎসবে বিধি না মানায় কী হাল হয়েছে, সবাই জানেন। বারোয়ারি পুজোয় জমায়েত বন্ধ না হলে বড় বিপদ হবে বলে আশঙ্কায় আদালতের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।’
মামলার বিষয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমরা পুজো বন্ধের পক্ষে নই। তবে রাজ্য সরকারের উচিত ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা। ভিড় থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা।’
আরও পড়ুন : ফিকে হয়ে গেল IPL-এর সব ক্যাচ! ন্যাশনাল টি-২০ কাপে অবিশ্বাস্য ক্যাচ ধরলেন পাক তারকা, দেখুন ভিডিও