গড়িয়াহাট কান্ডে আটক সনাতন রায় চৌধুরীর সঙ্গে বিজেপি যোগের প্রমাণ পেল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে এদিন সনাতন রায়চৌধুরীর বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এর কার্যকর্তাদের সার্টিফিকেট এবং একাধিক নথি। এর মাধ্যমে সনাতন রায় চৌধুরীর সঙ্গে বিজেপি যোগের সরাসরি প্রমাণ পেয়ে গেল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। শুধু বিজেপি নয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে জাল সিবিআই আইনজীবী সনাতন রায়চৌধুরীর, দাবি পুলিশের।
প্রাথমিকভাবে একটি সম্পত্তি জালিয়াতির মামলায় গড়িয়াহাট থেকে সনাতনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু তাঁকে গ্রেফতার করার পর থেকেই একের পর এক হাড় হিম করা তথ্য প্রকাশ্যে উঠে আসতে শুরু করে। জানা যায়, সনাতন হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য হওয়ার ভুয়ো দাবি এতদিন করেছিলেন। সনাতনের সেই ভুয়ো দাবির উপর ভিত্তি করেই রাজ্য বিজেপির এক নেত্রী তাঁকে ‘চরিত্রবান’ হওয়ার সার্টিফিকেট দেন। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শংসাপত্রে সনাতনের পেশার কোনও উল্লেখ না থাকলেও ধৃত যে এই সংগঠনের সদস্য, তা সেখানে স্পষ্টভাবে লেখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ না করে মানুষের দুর্দশা কমান’, সৌমিত্রর খাঁর পর শুভেন্দুকে খোঁচা রাজীবের
সনাতন রায়চৌধুরীকে গ্রেফতার করার পর সবার প্রথম তাঁর বাড়ি থেকে বিজেপির ‘সদস্যতা’ গ্রহণের রসিদ উদ্ধার করে পুলিশ। তখন থেকেই সনাতনের রাজনৈতিক যোগসূত্র খুঁজতে তৎপর হন তদন্তকারীরা। তারপরই এই দু’টি সার্টিফিকেট উদ্ধার হয়। যে বিজেপি নেত্রীর প্যাডে সনাতনকে এই সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে, তাঁর নাম কৃষ্ণা ভট্টাচার্য। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে এই শংসাপত্র দেওয়া হয়। সেই সময় কৃষ্ণাদেবী বিজেপির নির্বাচনী কমিটির সদস্য মহিলা মোর্চার সহ-পর্যবেক্ষক পদে ছিলেন বলে উল্লেখ রয়েছে লেটার প্যাডে। সনাতন হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ভাল চরিত্রের মানুষ বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে।
একই ভাবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দক্ষিণবঙ্গ শাখার তরফেও একটি শুভেচ্ছা বার্তা-সহ শংসাপত্র সনাতনকে দেওয়া হয়েছিল। ২০১৭ সালের জুন মাসে দেওয়া এই সার্টিফিকেটে স্বাক্ষর ছিল দক্ষিণবঙ্গ শাখার সভাপতি চন্দ্রনাথ দাসের। সেখানে লেখা ছিল, “সনাতন রায়চৌধুরী বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একজন দায়িত্বশীল কার্যকর্তা।” এই সার্টিফিকেট উদ্ধার হওয়ার পরই অস্বস্তি বেড়েছে বিজেপির।
আরও পড়ুন: বিধানসভায় রেকর্ড নওশাদের, কনিষ্ঠতম কমিটি চেয়ারম্যান হলেন মোর্চার একমাত্র বিধায়ক