গত কয়েকদিন আগেই সামনে আসে শুভেন্দুর দেহরক্ষীর মৃত্যুর ঘটনায় খুনের অভিযোগ। তিন বছর আগে মৃত ওই দেহরক্ষীর স্ত্রী এটি এফআইআর করেন। আর সেই ঘটনায় এ বার তদন্তভার নিল সিআইডি।শুভব্রত চক্রবর্তী নামে ওই দেহরক্ষীর স্ত্রী সুপর্ণা কাঞ্জিলাল চক্রবর্তী কাঁথি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ৩০২ ও ১২০ বি ধারায় মামলা রুজু হয়েছ। এ বার সেই মামলারই তদন্ত করবেন সিআইডি অফিসাররা।রাজনৈতিক মহলের মতে, গোটা ঘটনার তদন্তভার সিআইডি নেওয়ায় আরও চাপ বাড়তে পারে বিরোধী দলনেতার।
জানা গিয়েছে, সোমবারই ওই মামলার তদন্ত করতে কাঁথি যাচ্ছে সিআইডি হোমিসাইড শাখার একটি দল। কাঁথি থানা থেকে ওই মামলার বিষয়ে সমস্ত নথি সংগ্রহ করবেন তাঁরা। এর আগেও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম জড়িয়ে থাকা একাধিক মামলার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে সিআইডি-র হাতে। এবার নিজের নিরাপত্তারক্ষী খুনের ঘটনাতেও সিআইডি তদন্তে শুভেন্দুর উপর চাপ বাড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
শুভেন্দুর ওই নিরাপত্তারক্ষীর স্ত্রীর অভিযোগ, যে সময় শুভব্রত চক্রবর্তী গুলিবিদ্ধ হন, তখন প্রভাবশালী মন্ত্রী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। একজন মন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষী হয়েও কীভাবে শুভব্রত গুলিবিদ্ধ হলেন? হাসপাতালে নিয়ে যেতে কেন দেরি হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে শুভব্রতর মৃত্যুর ঘটনায় যে নতুন এফআইআর করা হয়েছে, তাতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। শুভব্রতর স্ত্রীর অভিযোগ পত্রে নাম রয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাখাল বেরার।কিন্তু এতদিন পর কেন এফআইআর?
আরও পড়ুন: মুকুল রায়ই কি পিএসি চেয়ারম্যান? আজ শোরগোল পড়তে পারে বিধানসভায়
শুভব্রতর স্ত্রী সুপর্ণা কাঞ্জিলাল চক্রবর্তীর দাবি, এতদিন আতঙ্কে মুখ বন্ধ করে ছিলেন। কিন্তু এখন ন্যায়বিচার চান। তাঁর স্বামীর মৃত্যু রহস্যের সত্য প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন তিনি। ছয়-সাত বছর এই দায়িত্বে থাকার পর কীভাবে আচমকা তিনি গুলিবিদ্ধ হলেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর আরও অভিযোগ, চলতি বছরের ২১ মে বেশ কয়েকজন এসে তাঁকে ভয় দেখিয়ে যায়। শুভব্রতর মৃত্যু নিয়ে কোন জায়গা থেকে ফোন এসেছিল কিনা, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা সেই বিষয়টি নিয়েও তাঁর কাছে জানতে চান বলে অভিযোগ। স্বামীহারা মহিলার দাবি, নিশ্চয় এর মধ্যে কোনও রহস্য রয়েছে। তাই স্বামীর মৃত্যু রহস্যের প্রকৃত সত্য উদঘাটনের দাবি জানান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ট্যুইটে লেখেন, ‘দিলীপ ঘোষ বা তাঁদের কেন্দ্রীয় দল কি এই পরিবার ও মহিলাকে চেনেন? মহিলার স্বামী ছিলেন আপনাদের নেতার নিরাপত্তারক্ষী। অনুরোধ করছি, মহিলার আবেদন শুনুন। দেখুন, এখানেও সেই রাখাল বেরার নাম রয়েছে। আপনাদের বিরোধী দলনেতা এই বিধবার প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যেতে চাইছেন।’ যদিও শুভেন্দু গোটা বিষয়টিকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিহিংসা বলে দাবি করেছেন। নন্দীগ্রামে হারের জ্বালা তাঁর উপর দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এভাবেই মেটাতে চাইছেন বলে অভিযোগ তাঁর।
আরও পড়ুন: বাড়ি বসেই পুরীর ভোগ! ফোন করলেই ডেলিভারি করবে রাজ্য সরকার