Site icon The News Nest

‘ইতিহাসের সেরা বাঙালি মহিলা রাজনীতিবিদ’ মমতা, অনিলকন্যা অজন্তাকে শোকজ করছে সিপিএম,‘অজন্তা হাওয়াই,’ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ

WhatsApp Image 2021 07 31 at 8.46.15 PM

তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’ (Jago Bangla) প্রকাশিত হয়েছে বামনেতা অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাসের (Ajanta Biswas) উত্তর সম্পাদকীয়। তার শেষ কিস্তিতে রয়েছে তৃণমূলনেত্রীর ভূয়সী প্রশংসা। যার জেরে এবার দাপুটে বামনেতার কন্যা তথা সিপিএমের সদস্য অজন্তাকে শোকজ করছে দল। শনিবার এমনটাই জানিয়েছেন কলকাতা জেলা সম্পাদক তথা সিপিএম (CPM) রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কল্লোল মজুমদার। যদিও লেখিকার দাবি, দলমত নির্বিশেষে বাংলার রাজনীতিতে মহিলাদের লড়াইয়ের কথা তুলে ধরতে চেয়েছিলেন তিনি।

তৃণমূলের (TMC) মুখপত্রের জন্য কলম ধরেছেন একসময়ের দাপুটে বাম নেতা অনিল বিশ্বাসের (Anil Biswa’s Daughter) কন্যা অধ্যাপক অজন্তা বিশ্বাস। লেখার প্রথম কিস্তি প্রকাশের দিন থেকেই চর্চায় রয়েছেন তিনি। তবে সকলের নজর ছিল ‘বঙ্গরাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক উত্তর সম্পাদকীয়তে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কী লেখেন অনিলকন্যা? অবশেষে শনিবার শেষ কিস্তি লিখলেন তিনি। আর সেখানে তৃণমূলনেত্রীর লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অজন্তা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ইতিহাসের সেরা বাঙালি মহিলা রাজনীতিবিদ’ও বলেছেন তিনি। তাঁর কলমে উঠে এসেছে নন্দীগ্রামে তৃণমূল সুপ্রিমোর লড়াইয়ের কথাও। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

লেখাটির শেষ কিস্তির দিকে নজর ছিল সকলের। প্রকাশিত হওয়ার পরই অজন্তাকে শোকজ করা হচ্ছে বলে খবর। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কল্লোল মজুমদারের কথায়, লেখার প্রথম কিস্তি প্রকাশিত হওয়ার পরই আমি বলেছিলাম এটা ঠিক নয়। কারণ অজন্তা আমাদের দলের সদস্য। আর জাগো বাংলা সম্পূর্ণ বিরোধীদলের মুখপত্র। দলের বহু সদস্যই অন্যান্য সংবাদপত্রে লেখেন। তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু বিরোধী দলের মুখপত্রে এ ধরনের লেখা মেনে নেওয়া যায় না।” তিনি আরও জানান, দলের তরফে শোকজের চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দলের তরফে অজন্তার লেখা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া না দেওয়া হলেও, সমর্থকরা অনিল বিশ্বাসের মেয়ের তীব্র সমালোচনায় নেমেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। নীল-সাদা অজন্তা হাওয়াই চটির ছবি পোস্ট করে লেখা হয়েছে ‘অজন্তা হাওয়াই চটি (বিনা মন্তব্যে)। বলার অপেক্ষা রাখে না, রাজনীতিকদের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র হাওয়াই চটি পরেন।

বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও অজন্তার লেখা নিয়ে চর্চা চলছে বাম সমর্থকদের মধ্যে। ফলে সিপিএম মুখ কুলুপ আঁটলেও জাগো বাংলায় অজন্তার কলম ধরা যে আলিমুদ্দিনকে আন্দোলিত করেছে এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই।

অজন্তার এই ধারাবাহিক লেখাকে ভূয়সী প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এদিন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী বলেন, “অন্য দল করলেও ওঁর বাবার সঙ্গে আমার দারুণ বন্ধুত্ব ছিল। ওঁকেও আমি অনেক দিন ধরে চিনি। আমি জানি, অজন্তা যদি কোনও বিষয় নিয়ে লেখেন তাহলে তা যথেষ্ট পড়াশোনা করেই লেখেন। খুবই বুদ্ধিমতী।” এখানেই থামেননি সুব্রতবাবু। তাঁর কথায়, “অজন্তা পড়শুনাতেও ভাল ছিলেন। শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয়েও খুব ভাল পড়ান।” প্রসঙ্গত, অনিল-কন্যা পেশায় অধ্যাপিকা। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস পড়ান তিনি।
আরও পড়ুন : বদলি নিয়ে বড় ঘোষণা রাজ্যের! চালু হল নয়া ‘উৎসশ্রী’ পোর্টাল,কীভাবে ট্রান্সফারের আবেদন করবেন শিক্ষকরা? জানুন বিস্তারিত
ছাত্রজীবনে অজন্তা এসএফআই করতেন। প্রেসিডেন্সির পড়ুয়া ছিলেন তিনি। বহু বছর পর অজন্তাদের সময়েই প্রেসিডেন্সির ছাত্রসংসদ দখল করেছিল এসএফফআই। ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের কলকাতা জেলা কমিটির সদস্যও ছিলেন তিনি। সিপিএমের এখন চর্চার বিষয় একটিই—কেন অজন্তা তৃণমূলের মুখপত্রে কলম ধরলেন।
প্রথম পর্ব যেদিন প্রকাশিত হয় সেদিন সিপিএমের অনেক নেতা ঘরোয়া আলোচনায় একটা বিষয় চাউর করে দিওয়েছিলেন। তা হল, অজন্তা নাকি এক সাংবাদিককে লেখা দিয়েছিলেন। একটি নিউজ পোর্টালে ছাপার জন্য তা দিয়েছিলেন তিনি। সেই সাংবাদিক জাগো বাংলাকে লেখাটি দিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তা যে সত্যি নয় তা গত দু’তিন দিনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কারণ অজন্তার কলমে লিখেছেন, মমতা জননেত্রী। ভারতের মহিলা রাজনীতিকদের মধ্যে তিনিই অন্যতম সেরা।

এখন সিপিএম বুঝতে চাইছে, অজন্তার মন বদলের কারণ কী? সিপিএমের কলকাতা জেলার এক নেতার কথায়, অজন্তার কয়েক মাস আগে কোভিড হয়েছিল। সেই সময়ে দলের তরফে কেউ তাঁর খোঁজ নেননি। অথচ ফোন করে খবর নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়েই অজন্তার মানসিকতা অন্যদিকে মোড় নেয় বলে দাবি সিপিএমের ওই নেতার।

আরও পড়ুন : অয়েল ইন্ডিয়ায় প্রচুর পদে চাকরির সুযোগ, নিজের এই যোগ্যতা থাকলে বুক ঠুকে আবেদন করুন

Exit mobile version