নরেন্দ্র মোদীর সরকার যে ওয়াকফ সংশোধনী বিল (২০২৪) এনেছে, তার প্রতিবাদে তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলকে সমাবেশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে এ নিয়ে সমাবেশের আয়োজন করেছেন তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান তথা ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেন।
ওয়াকফ বিল সংশোধনের নামে দেশের ধর্ম নিরপেক্ষতার ঐক্য ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা করছে মোদী সরকার। শনিবার রানি রাসমণি রোডে দলের সংখ্যালঘু সেলের সমাবেশ থেকে এই অভিযোগ করলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য়ের মন্ত্রী-কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে কল্যাণের অভিযোগ, “বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার পর রামমন্দির তৈরি করেছেন। একইভাবে ওদের বাকি সম্পত্তি হাতিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে দাঙ্গা বাঁধাতে চাইছেন? কিন্তু জেনে রাখুন, তৃণমূল কংগ্রেস ধর্মের লড়াই হতে দেব না। দরকার হলে আরও রক্ত দেব, কিন্তু হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের ধ্বংস হতে দেব না।””
ফিরহাদ বলেন, “ক্ষমতায় টিকে থাকতে ধর্মের বিভাজন তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। কে কী খাবে, কী পরবে তা কি বিজেপি ঠিক করে দেবে? উত্তরপ্রদেশে সেটাই হচ্ছে, পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে। এ জিনিস বরদাস্ত করার প্রশ্নই নেই। ওদের প্ররোচনায় পা দেবেন না।”
প্রসঙ্গত, এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে দল ও রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “ওয়াকফ আইনে পরিণত হলে ওয়াকফ ব্যবস্থাই ধ্বংস হয়ে যাবে। ২০২৪ সালে যেটা আনা হয়েছে, আমি মনে করি রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা করার দরকার ছিল। অথচ আমাদের সঙ্গে কোনও কনসাল্ট করা হয়নি।”
এদিন এ প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেন, “ওয়াকফ কী? আল্লার সম্পত্তি। সেটাকে সংরক্ষণের জন্য সংবিধান একটা সিস্টেম করে দিয়েছে। সেটাকে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আসলে মুসলিম সম্পত্তিগুলির দখল নিতে সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারাকে আঘাত করার জন্য এই বিল আনা হয়েছে।”
তৃণমূল সাংসদের কথায়, বহু দরগার কাগজপত্র নেই। শয়ে শয়ে বছর ধরে যেগুলো ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে, সেগুলোর কাগজ নেই বলে আপনি সেগুলোর অধিকার কেড়ে নেবেন, তাই কখনও হয় নাকি? এভাবে মুসলিম সম্প্রদায়ের আবেগ, অধিকার নষ্ট করা হবে আর আমরা চুপ করে থাকব, তাই হয় নাকি?
জবাবও দিয়েছেন নিজেই। কল্যাণ বলেন, “কাশী বিশ্বনাথ মন্দির বা পুরীর মন্দিরের কমিটিতে শুধু হিন্দুরা থাকলে মুসলিমদের কমিটিতে কেন শুধু মুসলিম থাকবে না? আপনি বলতে পারেন, নিরপেক্ষতার কথা, তাহলে বিশ্বনাথ বা পুরীর মন্দিরে কমিটিতে হিন্দু ছাড়া অন্যদের রাখা হয়নি কেন? সংবিধান তো সেই অধিকার কাউকে কেড়ে নিতে বলেনি।”