উচ্চ-মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপকের ধর্ম পরিচয় তুলে ধরে বিতর্কে উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস। সাংবাদিক বৈঠকে কেন ছাত্রীর ধর্ম প্রকাশের উপর জোর দিলেন সংসদ সভানেত্রী তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মহুয়াদেবীর মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী থেকে বিরোধী দল। তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের দাবি তুলেছে বিরোধী দল বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের তরফে শোকজ নোটিস পাঠানো হল উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাসকে।
পরীক্ষার্থীর ধর্ম পরিচয় বড় করে দেখায় সংসদ সভানেত্রী মহুয়া দাসের নিন্দায় সরব বাংলার ইমামদের সংগঠনও। মহুয়া দাসকে সংসদ প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয় এবছরের উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল। ফল প্রকাশের সময়ই পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস বলেছিলেন, প্রথম স্থানাধিকারী একজন ‘মুসলিম কন্যা’। যার পরেই বিতর্কের ঝড় বয়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। বিরোধী দলগুলি এই বিষয়টি নিয়ে তোপ দেগে বিভাজনের অভিযোগ তুলেছে। এবার সংসদ সভাপতির সমালোচনায় খোদ রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
প্রসঙ্গত উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছেন মুর্শিদাবাদের রুমানা সুলতানা। এই প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, ‘ধর্ম আমার বিশ্বাস। ধর্ম আমার নিজস্ব। কিন্তু সমাজ ও দেশ আমার অস্তিত্ব। তাকে ‘মুসলিম ছাত্রী’ বলাটা আমি সমর্থন করি না। অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মেধা দিয়ে সবপথ অতিক্রম করা যায়। ধর্ম দিয়ে তা করা যায় না। ওই ছাত্রী নিজের মেধার ভিত্তিতে সবার সেরা হয়েছে। মেধাতালিকায় কেউ প্রথম হলে সেটা ধর্মের জন্য নয়, তাঁর মেধার জন্য। আবার সেই এক ধর্মের মানুষের নাম তালিকার একেবারে শেষে রয়েছে বা কেউ ফেল করেছেন। এর সঙ্গেও ধর্মকে কখনও মেলানো যায় না।’
এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী নিজের উদাহরণ টেনে এনে বলেন, ‘মেধা মেধাই হয়। পঁচিশ বছর ধরে আমি কাউন্সিলার থেকেছি। কর্পোরেশনটা আমি বুঝি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটা জানেন। তাই আমি মেয়র হয়েছি। এর মধ্যে যদি কেউ ধর্ম টানেন, তাঁরা ভারতের সংবিধানকে অবমাননা করছেন।’
মহুয়া দাসের আচরণ নিয়ে সরগরম শিক্ষামহল। অবশ্য মহুয়া দাসের আবেগকে সম্মান জানিয়ে এই বিতর্কের জন্য বিজেপির রাজনীতিকরণের মানসিকতাকে দায়ী করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘মুসলিম শব্দটি না বললেই ভাল হত। উনি হয়তো এটা আবেগপ্রবণ হয়ে বলে ফেলেছেন। মনে রাখতে হবে এই প্রথম উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ইতিহাসে একজন সংখ্যালঘু মহিলা বা মেয়ে প্রথম হয়েছেন। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের কৃতিত্বের জায়গা। সংসদ সভাপতিও একজন মহিলা। তাই তিনি হয়ত সেই মহিলা সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন।’
আরও পড়ুন : Tokyo Olympics: জয় দিয়ে সফর শুরু ভারতীয় হকি দলের, কোহলিদের হারের বদলা মনপ্রীতরা