Site icon The News Nest

ভবানীপুর উপনির্বাচন মামলায় হাই কোর্টে স্থগিত রায়দান, আদালতে মুখ্যসচিবের ভূমিকায় প্রশ্ন

calcutta high court

ভবানীপুর উপনির্বাচন মামলায় রায়দান স্থগিত করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। এই মামলায় কমিশনের কাছে জবাবি হলফনামা চেয়েছিল আদালত। কিন্তু শুক্রবার আদালত জানিয়ে দেয় কমিশনের উত্তরে সন্তুষ্ট নয় তারা। কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।

শুধুমাত্র ভবানীপুর (Bhabanipur) আসনের নির্বাচনের জন্য কেন চিঠি লিখলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব (Chief Secretary)? কেন ভোটে লড়ে জয়ী হওয়ার পরও আসন ছাড়লেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chattarjee)? হাইকোর্টে এমনই একাধিক অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্যকে। পাশাপাশি, আদালতের তরফে নির্বাচন কমিশনকে যে হলফনামা দিতে বলা হয়েছিল, তাও এ দিন গৃহীত হয়নি। সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হতে পারে বলে মুখ্যসচিবের সুপারিশের উল্লেখ নির্বাচন কমিশনকে (Election Commission) তার প্রেস বিবৃতি থেকে বাদ দিতে হবে, কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) এই আবেদনই জানিয়েছিলেন মামলাকারী। আর আজ সেই মামলার শুনানিতে একের পর এক প্রশ্ন তুললেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল (Rajesh Bindal)। আর এক সপ্তাহও বাকি নেই ভবানীপুর নির্বাচনের (Bhabanipur By-Election)। তার আগেই আদালতের এই প্রশ্নে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে অস্বস্তি।

শুক্রবার আদালতও ওই বিষয়টিকে সামনে রেখে কমিশনের কাছে বেশ কিছু প্রশ্ন রাখে। তার আগে বৃহস্পতিবার অবশ্য হলফনামা আকারে কমিশনের কাছে আদালত জানতে চেয়েছিল, মুখ্যসচিব কি ভোট করানোর সুপারিশ করতে পারেন? শুক্রবার তার নির্দিষ্ট কোনও জবাব দিতে পারেননি কমিশনের আইনজীবী।মুখ্যসচিবের কমিশনকে চিঠি পাঠানো নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল প্রশ্ন করেন, ‘‘চিঠি লেখায় কী ভূমিকা মুখ্যসচিবের?’’ তাঁর বক্তব্য, নির্দেশ দেওয়ার পরও কেন তা জিজ্ঞাসা করা হয়নি।

এর পর কমিশনের আইনজীবী বোঝানোর চেষ্টা করেন। তখন বিন্দল বলেন, ‘‘অন্য কিছু বোঝানোর চেষ্টা করবেন না।’’ তিনি ফের প্রশ্ন করেন, ‘‘এই চিঠি লেখার পিছনে মুখ্যসচিবের ভূমিকা কী? ১৩ সেপ্টেম্বর মামলা হয়েছিল। এত দিনেও উত্তর পেলেন না? কমিশন জানায়, মুখ্যসচিবের কোনও সাংবিধানিক ভুল হয়নি।” তখন বিন্দল প্রশ্ন করেন, ‘‘তা হলে উত্তর দিন, চিঠিতে ‘সাংবিধানিক সঙ্কট’ কেন বলেছেন মুখ্যসচিব? কেন একটি কেন্দ্রের নির্বাচনের জন্য বললেন জরুরি (এক্সিজেন্সি), অথচ, অন্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে কেন তা প্রযোজ্য হল না?’’

ভবানীপুরে কেন দ্বিতীয়বার নির্বাচন করার প্রয়োজন পড়ল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। এই আসন থেকে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। পরে এই আসন ছেড়ে দেন তিনি। আর সেই আসন থেকেই লড়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গেই বিচারপতির প্রশ্ন, ‘কেন আসন ছাড়লেব শোভনদেব?’ তিনি প্রশ্ন করেন একটি আসনে ভোটের জন্য কত টাকা খরচ হয়? উত্তরে কমিশন জানায়, ৩ কোটি। তা শুনে বিচারপতি বলেন, ‘একটা আসনের জন্য কতবার টাকা খরচ হবে?’

আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘আজ বিচারপতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। একজন ভোটে জিতে জন প্রতিনিধি হওয়ার পর তাঁকে আসন ছাড়তে কেন বাধ্য করা হল? এ ভাবে মানুষের টাকা খরচ হচ্ছে। যেখানে উপ -নির্বাচন বাকি তেমন অন্য কোনও আসন থেকেও লড়তে পারতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’

Exit mobile version