বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হল তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে। বললেন, ‘‘আমি নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইছি। যদি ওই মন্তব্যে কারও আঘাত লেগে থাকে, তা হলে তার জন্য আমি দুঃখিত। আমি আমার মন্তব্য প্রত্যাহার করছি। আমি সব সময়েই মেয়েদের সুরক্ষা এবং অধিকার রক্ষার পক্ষেই কথা বলি।’’
গত শুক্রবার একটি বেসরকারি চ্যানেলে অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘ছাত্রীদের কোলে বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার একটা চল শুরু হয়েছিল। যার আমি তীব্র নিন্দা করি, ঘৃণা করি। আমার ছেলেরা নিন্দা করেছিল বলে কম নম্বর দেওয়া হয়েছিল। তারা কিন্তু আজ প্রথিতযশা চিকিৎসক। কিন্তু সেই কোলে বসে পরীক্ষা নেওয়াটা যে এই জায়গায় দাঁড়াবে যেখানে উৎকোচ নিয়ে পাশ করানো হবে বা কারও থিসিস আটকে রাখা হবে যদি সে মুখ খুলতে সাহস দেখায়, এতটা আমি ভাবতে পারিনি। কিন্তু এখন হয়তো সেটা হচ্ছে।’ প্রসঙ্গত, কাকলি নিজেও পড়াশোনা করেছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকেই।
কাকলির এই মন্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি চিকিৎসক মহলের একাংশ সরব হয়। সাংসদের মন্তব্যের প্রতিবাদ করেছিল ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটির রাজ্য শাখা। কাকলি ঘোষ দস্তিদারের মন্তব্য মহিলাদের জন্য অসম্মানজনক বলে দাবি করেছিলেন চিকিৎসকদের একাংশ। সমালোচনা করেন বিজেপি আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালও। উল্লেখ্য, অগ্নিমিত্রা নিজেও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান চলাকালীন তাঁর সঙ্গে এ নিয়ে কথা কাটাকাটিও হয়েছিল কাকলির।
একই সুরে কাকলির ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সরব হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফেডারেশনও। সংগঠনের তরফে সঞ্জয় হোম চৌধুরী এবং কৌশিক চাকী লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানান, তাঁর এই মন্তব্য গোটা দেশের মহিলা চিকিৎসকদের জন্য অসম্মানজনক। লেখেন, ‘‘মন্তব্য প্রত্যাহার করার পাশাপাশি অবিলম্বে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে কাকলিকে।’’ যদিও এ বিষয়ে জবাব এড়িয়ে যান তৃণমূলের প্রথম সারির প্রায় সব মুখপাত্র। তবে তাঁদেরই এক জন ঘরোয়া আলোচনায় বলেছেন, ‘‘এমনিতেই সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দল। তার মধ্যে এই সব মন্তব্য কাটা ঘায়ে নুনের ছিটের মতো হয়ে দাঁড়াচ্ছে!’’ এই পরিস্থিতিতেই শেষমেশ ক্ষমা চাইলেন কাকলি।