বামেরা বেহাল। বিধানসভায় প্রতিনিধি নেই তাদের। মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। এই প্রত্যাখ্যানের অন্যতম কারণ হল, তারা যে প্রচার করেছে, তাতে বিজেপির সুবিধা হয়েছে। তারা বিজেপির বিরুদ্ধে জোরাল প্রচার দেয়নি। বরং শোনা গিয়েছিল এবার ‘রাম’ পরে ‘বাম’। কোনো বড় বাম নেতার মুখ থেকে সরাসরি একথা শোনা না গেলেও, তাদের সমর্থকরা অনেকেই তেমন কথা বলেছিলেন। এই সমর্থকরা যে ‘বামবেশী’ ‘রাম’ তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি বাকিদের। ফলে বাম সমর্থকদের অনেকেই বিজেপিকে রুখতে দিদিতে আস্থা রাখেন। বুঝে যান বহরমপুরে কংগ্রেস নেতা এবং বিমান বসুদের রাজনীতি মানে মমতা বিরোধিতা। সেখানে বাঙালি ও মানুষের কথা ভাবার অবকাশ নেই।
আরও পড়ুন : Tokyo Olympics: রুপোর বদলে চানুর গলায় উঠতে পারে স্বর্ণপদক, জেনে নিন কীভাবে
পরে সব স্পষ্ট হয়েছে। বহু বাম নেতা প্রকাশ্যে দলের নীতির বিরুদ্ধে রাগ দেখিয়েছেন। আবেগ তাড়িত হয়েছেন। মাটি হারিয়ে বিমান বাবু বুঝলেন রাজনীতি হয়নি। কেবল ঝাল মেটানোর চেষ্টা হয়েছে। এবার তিনি রাজনীতির কথা বললেন, বহু কিছু খুইয়ে।
সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রয়োজনে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলাতেও আপত্তি নেই বামেদের। রবিবার বিকেলে পূর্ব মেদিনীপুরে গিয়ে এই বিষয়টি সাফ করে দিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন জল্পনা জন্ম নিয়েছে। তৃণমূল যদিও বামেদের নতুন এই অবস্থানকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। তবে যদি বিজেপির বিরুদ্ধে জোটে শামিল হয়ে সিপিএম লড়তে চায়, সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোডম্যাপ ধরেই তাদের লড়তে হবে, এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে তৃণমূল।
স্পষ্টতই এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের নাম না নিলেও বিমানবাবু বুঝিয়ে দিয়েছেন, যে দিল্লির রাজনীতির নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গেও হাত মেলাতে রাজি। কিন্তু তৃণমূল কি রাজি? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য নির্বাচনের আগেই একটা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ভোটের পর বামেরা শূন্য হয়ে যাওয়ায় তাই এখন হাত মেলানো ছাড়া তাদের কাছে অন্য কোনও বিকল্পও নেই, এমনটাই মনে করছে করছে রাজনৈতিক মহল।
বিমান বসুর এই মন্তব্যের পর তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ TV9 বাংলাকে জানান, “ওনারা আগে ঠিক করে নিন ওনারা কী করতে চান। ওই দলটার মতি স্থির নেই। ভোটের সময় তো বিজেমূল বিজেমূল করে নিজের প্রথমে লোকসভায় ও পরে বিধানসভায় শূন্য হয়ে গেল। বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইকে গোটা দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু সিপিএম ১৯৮৮ সালে যে ভুলটা কংগ্রেস বিরোধিতা করতে গিয়ে করেছিল, একই ভুলটা ২০১৯-এও করেছে। নিজেদের পুরো ভোটটাই বিজেপির দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে। তাই আগে ঠিক করে নিক কী করবে। তবে যদি লড়তে চায়, সেক্ষেত্রে মূল চালিকাশক্তির হয়ে লড়তে হবে। বিজেপির বি টিম হয়ে লড়া যাবে না।”
আরও পড়ুন : কৃষি আইন ইস্যুতে কেন্দ্রকে কোণঠাসা করার ছক, বিক্ষুব্ধ কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে ট্রাক্টর চালিয়ে সংসদে রাহুল