কলকাতার রাস্তাঘাট ও জনসমাগমস্থলে যত্রতত্র থুতু ফেলা, পান ও গুটখার পিক ফেলে নোংরা করার প্রবণতা নিয়ে কড়া অবস্থান নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনিতে পথঘাটে থুতু বা পানের পিক ফেলা নিয়ে আইন রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু সম্প্রতি এই পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতই চটেছেন, যে তিনি মনে করছেন, এই আইন যথেষ্ট নয়। আরও কঠোর করতে হবে নিয়ম, দিতে হবে শাস্তি। তবেই বদলাতে পারে এই ছবি।
মঙ্গলবার ছিল মন্ত্রিসভার বৈঠক। সেখানেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। যেখানে সেখানে গুটখা, পানের পিক ফেলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, রাজ্য সরকার রাস্তাঘাট বা নতুন কোনও প্রকল্পে নীল-সাদা রঙ করে। শহরের সৌন্দর্যায়নে জোর দেয়। অথচ সেই সৌন্দর্যায়নে জল ঢেলে দেয় শহরবাসীর একাংশ। গুটখা, পানের পিকে ভরিয়ে দেয় সেই সমস্ত সৌন্দর্যায়ন। এবার তা রুখতে নয়া বিল আনছে রাজ্য সরকার।
পানের পিক, থুতু ফেলা ইত্যাদি নিয়ে ১৯৮০ সালের পুর আইনের ৩৩৮ ধারায় জরিমানার উল্লেখ রয়েছে। এই বিষয়ে ২০০১ সালেই আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রোহিবিশন অফ স্মোকিং অ্যান্ড স্পিটিং অ্যান্ড প্রোটেকশন অফ হেল্থ অফ নন-স্মোকারস অ্যান্ড মাইনর অ্যাক্ট, ২০০১’ অনুসারে, প্রকাশ্যে প্রথমবার থুতু বা গুটখার পিক ফেললে এক হাজার টাকা জরিমানা হবে। দ্বিতীয়বার ধরা পড়লে দু হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু তাতেও নাগরিকদের হুঁশ ফিরছে না।
তবে এ বার স্বচ্ছতা অভিযানে এক কদম এগিয়ে ওই নিয়ে বিল আনার সিদ্ধান্ত নিল মমতার সরকার। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি বাজেট অধিবেশন রয়েছে। সেখানেই বিল পেশ হবে বলে খবর। বস্তুত, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে মমতা সরকারের এটাই শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। পরের বছর বিধানসভা ভোটের আগে ভোট অন অ্যাকাউন্ট করতে হবে। এই সব বিষয়কে সামনে রেখে আগামী এক বছরে দল ও সরকারের ভূমিকা কী হবে, তা নিয়েও বৈঠকে বেশ কিছু আলোচনা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।