লাগামহীনভাবে বাড়ছে পেট্রল এবং ডিজেলের দাম। বাংলার একাধিক জেলায় ইতিমধ্যে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফেলেছে পেট্রল। সেই পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেল থেকে কম রাজস্ব আদায়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের একটা বড় অংশেই পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি একশো টাকা ছাড়িয়েছে৷ এ রাজ্যেও সেঞ্চুরি করে ফেলেছে পেট্রোল৷ ৯০ ছাড়িয়ে একশোর দিকে ছুটছে ডিজেলও৷ জ্বালানির আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ পেট্রোল, ডিজেলের দাম কমাতে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারের নেওয়া করের হার কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে দুর্যোগ, বুধবার থেকে রাজ্যে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা
সোমবার মমতা লিখেছেন, গত ৪ মে থেকে আটবার জ্বালানি তেলের দাম আটবার বাড়িয়েছে বিজেপি সরকার। গতমাসেই ছ’বার বেড়েছে। আর এক সপ্তাহে চারবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে কেন্দ্র। তার ফলে দেশের সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। সেইসঙ্গে ‘ভয়ংকরভাবে’ মুদ্রাস্ফীতির কারণে আমজনতার নাভিশ্বাস উঠেছে। গত বছর মে’র তুলনায় চলতি বছর মে’তে দেশে পাইকারি মুদ্রাস্ফীতির হার ১২.৯৪ শতাংশ বেড়েছে। একইভাবে খুচরো বাজারে বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতির হার। ভোজ্য তেলের দাম ৩০.৮ শতাংশ, ডিমের দাম ১৫.২ শতাংশ, ফলের দাম ১২ শতাংশ এবং করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সামগ্রীর দাম ৮.৪৪ শতাংশ বেড়েছে। মমতা লিখেছেন, ‘মুদ্রাস্ফীতির জন্য অনেকটাই দায়ী পেট্রল এবং ডিজেলের দাম বৃদ্ধি। তার জেরে সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমে গিয়েছে।’
এমনিতে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের চার রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভোট মিটে যাওয়ার পর থেকেই চড়চড়িয়ে দাম বেড়েছে পেট্রল এবং ডিজেলের। দেশে তো আগেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফেলেছিল পেট্রল। শনিবার দার্জিলিঙেও এক লিটার পেট্রলের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। এছাড়াও কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, পুরুলিয়ার মতো জেলাতেও সেঞ্চুরি করে ফেলেছে পেট্রল। বিশেষত গত বছর বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামের রেকর্ড পতনের পর মোদী সরকার কর বাড়িয়েছিল। তার জেরে সেই রেকর্ড পতনে তেমন ফায়দা হয়নি আমজনতার। তবে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের সময় জ্বালানি তেলের দামে রাশ পড়েছিল। ভোট মিটতেই বেড়েছে দাম। তা নিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছেন বিরোধী। আসরে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেসও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও লিখেছেন, ‘২০২০ সালের মে মাসের তুলনা চলতি বছরে দেশের পাইকারি মূল্য সূচক ১২.৯৪ শতাংশ বেড়েছে৷ একই ভাবে গ্রাহক মূল্য সূচকও ৬.৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ ভোজ্য তেলের দাম ৩০.৮ শতাংশ, ডিমের দাম ১৫.২ শতাংশ এবং ফলের দাম ১২ শতাংশ হারে বেড়েছে৷ শুধু তাই নয় করোনা অতিমারির মধ্যেও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সামগ্রীর দাম ৮.৪৪ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে৷ ‘
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, করোনা অতিমারির মধ্যে শুধুমাত্র জ্বালানি তেল এবং পেট্রোপণ্য থেকে কেন্দ্রীয় সরকার ৩.৭১ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে৷ প্রথম মোদি সরকারের আমল থেকেই কেন্দ্রের রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য যে জ্বালানি তেল এবং পেট্রোপণ্যকেই বেছে নেওয়া হয়েছে, চিঠিতে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি দাবি করেছেন, ২০১৪-১৫ সাল থেকে কেন্দ্রের রাজস্ব বৃদ্ধি ৩৭০ শতাংশ বেড়েছে৷ আবার রাজ্য সরকার যে পেট্রোল, ডিজেলের দাম কিছুটা কমিয়ে আমজনতাকে স্বস্তি দিতে নিজেদের তরফে কিছুটা ছাড় দিয়েছে, সেকথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
আরও পড়ুন: Gardening: মশা তাড়াতে ঘরে রাখুন এই চারটি গাছ