স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে হাসপাতালে গেলেন, চিকিৎসা করালেন। সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরে এলেন। তিনি আর ৫ জনের মত সাধারণ মানুষ নন। বিজেপির তারকা প্রচারক মিঠুন চক্রবর্তীর ছায়াসঙ্গী প্রদ্যুৎ হালদার। সল্টলেকের একটি নার্সিংহোমে নিখরচায় হৃদরোগের চিকিৎসা করিয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছেন তিনি।
ভোটপ্রচারের ময়দানে স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে মমতা সরকারকে তুলোধোনা করছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। এখন সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বেজায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলের অন্দরে। মোদির তারকা সেনাপতি মিঠুনকে পাল্টা আক্রমণ করতেও ছাড়েননি তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের কথায়, “এবার মিঠুনদা নাচবেন নাকি কাঁদবেন?” অতঃপর স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে বিনামূল্যে মহাগুরুর ছায়াসঙ্গীর চিকিৎসা করানোয় যে পদ্ম-বাহিনীর ‘স্টার ক্যাম্পেনার’ তথা বিজেপিকে বিপাকে ফেলে দিয়েছে, তা বলাই বাহুল্য!
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রদ্যুৎবাবু ৩১ মার্চ সল্টলেকের বেসরকারি হসপিটালে ভর্তি হন। হার্টের একটি ধমনীতে ব্লক ধরা পড়ে। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ রঞ্জন শর্মা অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টি করে স্টেন্ট বসান। চিকিৎসার জন্য ৬৬ হাজার টাকা এবং স্টেন্টের জন্য ৩১,৬৮৯ টাকা মিলিয়ে মোট ৯৭,৬৮৯ টাকার বিল হয়। পুরো বিলের খরচ তিনি স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে মিটিয়ে দেন। এরপর ১ এপ্রিল বিকেলে ছুটি পেয়ে বাড়িতে ফেরেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিধ্বংসী আগুন সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক, পুড়ে ছাই প্রায় ৭০টি ঝুপড়ি
বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ রঞ্জন শর্মা অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টি করে স্টেন্ট বসান।পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে ডাঃ শর্মা বলেন, ‘উনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। স্টেন্ট বসিয়েছি। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টি হয়। ভালো আছেন এখন।’
মমতার ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘স্বাস্থ্যসাথী’ বিজেপির ঘুম কেড়েছে। জনমানসে এর ব্যাপক প্রভাব যাতে ভোটযন্ত্রে প্রতিফলিত না হয়, সেজন্য চেষ্টার কসুর করছে না বিজেপি। মমতার উদ্যোগকে নস্যাৎ করতে স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে শহরে এনে সাংবাদিক সম্মেলন করিয়েছিল বিজেপির চিকিৎসক শাখা। এরই মধ্যে গোপীবল্লভপুরে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পরিবারের সদস্যরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করান। ঝাড়গ্রামের দলীয় প্রার্থী ও প্রাক্তন জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর পরিবার কার্ড করিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, মমতার ভূয়সী প্রশংসাও করেছে।স্বাভাবিকভাবেই বিপাকে বিজেপি।
ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে গেরুয়া শিবিরের তরফে ময়দানে নেমেছেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তাঁর মন্তব্য, “মিঠুন চক্রবর্তীর ছায়াসঙ্গী বলেই প্রদ্যুৎবাবু এত সহজে স্বাস্থ্যসাথীর টাকা পেয়েছেন। অন্তত দশজনের নাম বলতে পারি, যাঁরা স্বাস্থ্যসাথীর পরিষেবা পাননি।”
আরও পড়ুন: সারদা কান্ড: কুণাল, শতাব্দী, দেবযানীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ED