বাংলা আর গোবলয়ে রাজনীতির মধ্যে বিস্তর ফারাক। ওটা কপি -পেস্ট করলে এখানে চলে না। বাংলায় কাউকে বাদ দিয়ে ভোটব্যাংক ঠিক করলে ভুল হবে। তাহলে এখানকার রণনীতি ঠিক কি হওয়া উচিত, তা এতদিন ঠাহর করতে পারছিল না বিজেপি। তবে মুকুলকে সামনে এনে শাহ-নাড্ডা বোঝাতে চাইছেন মুকুলে তাদের ভরসা রয়েছে। বাংলার লোক যা চায় তা বাহুবলি কায়দায় হবে না। তাই পঞ্চায়েত, লোকসভা ভোটের পর বিধানসভা ভোটেও বাংলায় গেরুয়া ব্রিগেডকে জয়ের পথ দেখাবেন মুকুল রায়। তা একপ্রকার ঠিক।
‘মুকুল বাবা পার করেগা।’ তাঁর কাঁধেই ভোটবৈতরণী পার হাওয়ার দায়িত্ব দিচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তালমিল রেখে ভোটের রণনীতি সাজাবেন মুকুল। মুখে যতই তালমেলের কথা হোক না কেন, মুকুলের ভোট কৌশলের কাছে বাকিদের ছক নেহাতই জোল। তা বুঝেছেন বিজেপির শীর্ষনেতারা। যাতে দিলীপ আবার রাহুলের মত চোটে না যায় তাই একটু ব্যালান্স তো করতেই হবে।
আরও পড়ুন : মিডিয়া থেকে ‘মোদীয়া’,’আস্থা’য় ন্যায়বিচার, প্রকাশ পাচ্ছে ‘নিউ ইন্ডিয়া’র ডিএনএ
বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বাংলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডা। ওই বৈঠকেই বিধানসভা ভোটের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে,পশ্চিমবঙ্গের ভোটে বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক করা হচ্ছে মুকুল রায়কে। তাঁর কাধেই নির্বাচনের যাবতীয় দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।
ঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে বিজেপির আহ্বায়ক ছিলেন মুকুলবাবু। লোকসভায় রাজ্যে প্রথমবার ১৮টি আসন পেয়েছে পদ্মশিবির। তার কৃতিত্বের অনেকাংশই মুকুলবাবুর। ভোটের ঠিক আগে নিশীথ প্রামাণিক, সৌমিত্র খাঁ, খগেন মূর্মূ, অর্জুন সিং ও অনুপম হাজরাকে ভাঙিয়ে আনেন। অনুপম ছাড়া সকলেই লোকসভা ভোটে জিতেছেন।
অনেকের ধারণা ফের একবার তৃণমূলের ঘরে সিঁদ কাটতে পারেন মুকুল রায়। কিন্তু তৃণমূল থেকে এমন পালে পালে নেতা ঢোকানো আদি বঙ্গ বিজেপির পছন্দ নয়। কিন্তু আদিদের দাপট তো আর নেই। বরং আদি যারা এখনও ঠিক রয়েছে তাদের হাল কি রকম তা শমীক ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসা করলেই সাফ হয়ে যাবে। এখন পদ্মফুলে প্রাক্তন ঘাসফুলিদেরই দাপট। সে দাপট মুকুল রায় সামনে থাকলে যে আরও বাড়বে তা বলার অপেক্ষে রাখে না।
কিছুদিন আগেই মুকুলবাবুর বিজেপিতে থাকা নিয়ে তৈরি হয়েছিল জল্পনা। তবে মুকুল রায়কে ছাড়তে চাইছে না বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বাংলার মাটি গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ কিংবা হরিয়ানার বিজেপি নেতাদের পক্ষে মালুম করা সহজ নয়। এখানে কেবল জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে কাজ মিটবে না। হিন্দু অবাঙালি এলাকায় তা খানিকটা কাজ করলেও বাঙালি এলাকায় তা ফ্লপ যাবে। সেটা বুঝতে পেরেই মুকুলকে বাংলার ভোট দায়িত্ব দিয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন : সামনে এল ফার্স্ট লুক, ক্রিসমাসে মুক্তি শুভশ্রী-পরমের সাইকো-থ্রিলার ‘হাবজি-গাবজি’র