মুখ্যমন্ত্রীকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করে নন্দীগ্রাম মামলা আগেই ছেড়ে দিয়েছিলেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। এ বার সেই মামলা গেল হাইকোর্টের অন্য বিচারপতির বেঞ্চে। সূত্রের খবর, সোমবার বিচারপতি শম্পা সরকারের বেঞ্চে এই মামলা স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ফলে অবশেষে এই মামলার শুনানি শুরু হতে পারে, এমন একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালই মামলাটি বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে পাঠিয়েছেন।
গত সপ্তাহের বুধবার নন্দীগ্রাম মামলা সরে দাঁড়ান বিচারপতি চন্দ। সেইসঙ্গে বিচারব্যবস্থাকে কলুষিত করার দায়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করেন। যে টাকা রাজ্য বার কাউন্সিলকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তা ব্যবহার করা হবে করোনভাইরাসের চিকিৎসায়। তবে ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী জানিয়েছেন, সেই জরিমানার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করা হবে।
গত ২ মে রাজ্যে বিধানসভা ভোটে গণনার শুরু থেকে নন্দীগ্রামে এগিয়ে ছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। পরে কয়েকটি রাউন্ডে এগিয়ে যান মমতাও। শেষের দিকে রীতিমতো হাড্ডাহাড্ডি টক্কর হয়। ষোড়শ রাউন্ড পর্যন্ত এগিয়ে ছিলেন মমতা। হাইপ্রোফাইল কেন্দ্রে কী ফলাফল হয়, তা জানতে সারাদেশের নজর ছিল নন্দীগ্রামের দিকে। প্রাথমিকভাবে সংবাদসংস্থা এএনআই জানায়, ১,২০০ ভোট জিতেছেন মমতা। কিন্তু পরে বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, শুভেন্দু জিতেছেন। তা নিয়ে চূড়ান্ত ধোঁয়াশা তৈরি হয়। কয়েকটি মহল থেকে দাবি করা হয়, ১,৯৫৩ ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে জিতেছেন শুভেন্দু। মধ্যরাতের কাছাকাছি নির্বাচন কমিশনের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়, নন্দীগ্রামে পরাজিত হয়েছেন মমতা। তারপরই নন্দীগ্রামে পুনর্গণনার আর্জি জানায় তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও কারচুপির অভিযোগ উড়িয়ে দেয় কমিশন।
আরও পড়ুন: এখনই সিবিআই তদন্তের দরকার নেই, ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
গত মাসে নন্দীগ্রাের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে ইলেকশন পিটিশন দায়ের করেন মমতা। সেই মামলা যায় বিচারপতি চন্দের বেঞ্চে। কিন্তু আইনজীবী থাকাকালীন বিজেপির হয়ে একাধিক মামলা লড়ায় বিচারপতি চন্দের বেঞ্চ থেকে মামলা সরানোর আর্জি জানিয়েছিলেন মমতা। সেই আর্জি অবশ্য ধোপে টেকেনি। বিচারপতি চন্দের বেঞ্চেই মামলা রেখে দেওয়া হয়। পরে নিজে থেকেই মামলা থেকে সরে যান বিচারপতি চন্দ।
হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের কোনও বিচারপতি কোনও মামলা ছেড়ে দিলে সংশ্লিষ্ট মামলাটি কে শুনবেন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার থাকে প্রধান বিচারপতির। সেই মতো এদিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জানান, পরবর্তী সময় বিচারপতি শম্পা সরকারই নন্দীগ্রাম মামলাটি শুনবেন। যদিও কবে থেকে শম্পা সরকারের বেঞ্চ মামলাটির শুনানি হবে তা এখনও জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: নিরাপত্তারক্ষী খুনের তদন্তে এবার CID! চাপ বাড়ল বিরোধী দলনেতার?