Site icon The News Nest

‘শাসকের ইচ্ছাই আইন’, মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট আদালতে, ‘বদনাম করার চেষ্টা’ বললেন মমতা

WhatsApp Image 2021 07 15 at 5.55.58 PM

রাজ্যে আইনের শাসন নেই, শাসকের শাসন চলছে। ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’-র রিপোর্টে বাংলার রাজ্য সরকারকে ঠিক এই ভাষাতেই তুলোধনা করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। শুধু তাই নয়, রিপোর্টে কবিগুরুর ‘চিত্ত যেথা ভয় শূন্য’ কবিতার পংক্তি উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, ‘যে মাটিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম, সেই মাটিতে হাজার হাজার মানুষের উপর এই রকম নৃশংস অত্যাচার, খুন, ধর্ষণের ঘটনা অকল্পনীয়।’ রিপোর্টে সেই সব ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুলে মামলা বাইরের রাজ্যে স্থানান্তরের পক্ষে সওয়াল করেছে কমিশন।

আরও পড়ুন: স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরও এর প্রয়োজন আছে? রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে প্রশ্ন শীর্ষ আদালতের

দিল্লিতে যখন রাজ্যপাল হাজির হয়ে প্রাক্তন বিচারপতি অরুণ মিশ্রের সঙ্গে দেখা করেন, অনেকের অভিযোগ গোটা ছক তখনই তৈরী হয়েছিল। রাজনৈতিকভাবে তৃণমূলের মত একটি আঞ্চলিক দলকে মোকাবিলাতে করতে পারছেনা বিজেপি। ফলে তারা দিল্লি থেকে কলকাঠি নাড়ছে। এমনটাই অভিযোগ তৃণমূলীদের।

মানবাধিকার কমিশন নিজের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, “রাজ্যে আইনের শাসন নেই। শাসকের ইচ্ছাই এখানে আইন।” এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই ক্ষোভে রীতিমতো ফেটে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পালটা তোপ, ‘কমিশনের নামে মিথ্যা রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে আদালতে।’

ভোট পরবর্তী হিংসার যে যে অভিযোগ রাজ্যে উঠেছিল, সেগুলির ভিত্তি এবং সারবত্তা খতিয়ে দেখতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের ঘুরে দেখে একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রিপোর্টই বৃহস্পতিবার আদালতে জমা পড়ে। রিপোর্টে উঠে আসে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে আর উল্লেখ করা হয়েছে, হিংসার ঘটনায় যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁদের প্রতি রাজ্য সরকার চরম উদাসীন আচরণ দেখিয়েছে। এমনকী, রাজ্যে আইনের বদলে শাসকের শাসন চলছে বলেও দাবি করা হয়েছে।

উদ্বেগ প্রকাশ করে রিপোর্টে কমিশন লিখেছে, ‘হিংসার ঘটনা নিয়ে রাজ্যের কোনও প্রশাসনিক কর্তা বা রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের মুখ খুলতে দেখা যায়নি। দিনের পর দিন সাধারণ মানুষের জীবনের অধিকার, বাক্‌স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলেও রাজ্য প্রশাসনকে এই বিষয় নিয়ে‌ উদ্বিগ্ন হতে দেখা যায়নি। রাজ্য জু়ড়ে যে হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার পিছনে রাজনীতি, আমলাতন্ত্র এবং অপরাধ জগতের আঁতাঁত রয়েছে।’

কমিশনের ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’-র রিপোর্ট প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য না শুনেই এই রিপোর্ট তৈরি করেছে কমিশন। আমাদের বিশ্বাস, রাজ্যকেও হলফনামা পেশ করার সুযোগ দেবে আদালত। আর রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতির দায়িত্বে তখন নির্বাচন কমিশন ছিল। আমি আর কিছু বলতে চাই না।’’

তৃণমূলী সহ বিজেপি বিরোধীদের অভিযোগ, মানবাধিকার কমিশন উত্তরপ্রদেশে কি করে? যেখানে মানুষ যে কিভাবে দিন কাটাচ্ছে তা সকলেই জানেন। প্রতিদিন যেখানে মানবতা ভূলুন্ঠিত হয়েছে যোগীর শাসনকালে। কিন্তু তারবেলা জাতীয় মানবতাকমিশনকে বিশেষ ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। সবিতার পিছনেই রাজনীতিতে দেখছেন তারা।

আরও পড়ুন: বার্সার প্রতি ভালোবাসা, অর্ধেক বেতন কমিয়ে নিজের পুরনো ক্লাবেই আরও ৫ বছর থাকছেন মেসি

Exit mobile version