রসিকা জৈন আগরওয়ালের মৃত্যুর ঘটনায় প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রাক্তন প্রেমিকার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল স্বামী কুশলের। সেই কারণেই রসিকার সঙ্গে নিত্য অশান্তি হত তাঁর। ভ্যালেন্টাইনস ডে-তেও তুমুল ঝামেলা হয় ওই দম্পতির। পাশাপাশি অত্যাচারও চলত রসিকার উপর। ফলে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বধূ।
আত্মহত্যাই করেছেন কলকাতার নামী শিল্পপতি পরিবারের গৃহবধূ রসিকা জৈন (Rashika Jain Death Case)। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর এমনই মনে করছে পুলিশ (Kolkata Police)। তবে তাঁর মৃত্যুর পেছনে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কোনও হাত রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে ৪৯৮ ও ৩৯৬A ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনার দিন আলিপুরের ওই অভিজাত পরিবারে কী ঘটেছিল, তা জানতে সিসিটিভি ফুটেও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ঘটনার দিন অর্থাৎ ১৬ ফেব্রুয়ারি জৈন পরিবারে ঠিক কী ঘটেছিল, তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই পরিবারের সদস্যদের থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তাতে দেখা গিয়েছে, তিন তলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন রসিকা জৈন। কেউ যে তাঁকে ঠেলে ফেলে দেয়নি, সেটি সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট। তবে রসিকার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মেয়ের ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতেন স্বামী কুশল।
কুশল আগরওয়াল মাদকাসক্ত ছিলেন এবং অতিরিক্ত মদ্যপানও করতেন বলে অভিযোগ রসিকার পরিবারের। মাদকাসক্ত হয়েই রসিকাকে মারধর করতেন কুশল। বিয়ের আট মাস পরই বাবার বাড়ি ফিরে আসতে চেয়েছিলেন রসিকা। কিন্তু সামাজিক সম্মানের কথা ভেবে দুই পরিবারের মধ্যে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: আমরা গর্বিত ভারতীয়, ভিক্ষা চাইনা, অধিকার চাই – ব্রিগেড থেকে স্পষ্ট বার্তা আব্বাস সিদ্দিকীর
উচ্চবিত্ত পরিবারের মেয়ে রসিকা জৈনের মৃত্যুর পরতে পরতে রয়েছে রহস্য। মেধাবী ছাত্রী রসিকা কলকাতায় পড়াশোনা শেষ করে ডিগ্রি আনতে বিদেশে পাড়ি দেন। সেখান থেকে ফিরে পরিবারের দেখা পাত্র কুশল আগরওয়ালের সঙ্গে বিয়ে করেন তিনি।
তাঁদের বিয়েতেও ছিল আভিজাত্যের ছোঁয়া। রাজস্থানের উমেদ ভবনে বিয়ে হয় কুশল-রসিকার। উল্লেখ্য, এই ভবনেই মার্কিন পপ তারকা নিক জোনাসকে বিয়ে করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। কলকাতায় স্বামীর সঙ্গে প্রথম বছরটা ভালই কেটেছিল রসিকার। কিন্তু তাল কাটে প্রথম বছর বিবাহ বার্ষিকীর পরই। কুশল যে তাঁর ওপর অত্যাচার করতেন, তা নাকি বাবা-মা-ভাইকে একাধিকবার জানিয়েছিলেন রসিকা। কিন্তু সামাজিক সম্মানের কথা ভেবে, তাঁরা বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তা যে হয়নি, তার প্রমাণ এখন হাতেনাতে।
উচ্চবিত্ত পরিবারেও গায়েও কীভাবে গয়নার মতো আলদা হয়ে বসে থাকে সামাজিকতার বেড়াজাল, তারই জলজ্যান্ত উদাহরণ রসিকা। ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে রসিকার মৃত্যুরহস্য নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি পেজ। ‘জাস্টিস ফর রসিকা’র পেজে সওয়াল চড়ছে সুবিচারের আশায়।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে উঠল হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ, স্বস্তিতে রাজ্য সরকার