মহালয়ায় আনুষ্ঠানিক ভাবে উন্মোচিত হল আরজি করের নির্যাতিতা মহিলা চিকিৎসকের স্মরণে ‘প্রতীকী মূর্তি’। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে বসানো হয়েছে সেই মূর্তি। মূর্তি উন্মোচনের পাশাপাশি পথনাটিকার মধ্যে দিয়ে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানালেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা।
কর্মক্ষেত্রে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে আর জি করের তরুণী চিকিৎসককে। নৃশংস এই ঘটনার প্রতিবাদের ঢেউ রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে দেশে, এমনকী বিদেশেও আছড়ে পড়েছে। এই ঘৃণ্য ঘটনার কথা যাতে কেউ ভুলে না যায়, সেজন্যই আর জি কর চত্বরে অভয়ার মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্ত। কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনের সময় যে নির্মম অত্যাচারের শিকার ওই চিকিৎসক হয়েছেন, সেটাই তাঁর তৈরি আবক্ষ ‘অভয়া’ মূর্তিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মহলয়ার সকালে এই মূর্তির উন্মোচন হয়।
বিনা পারিশ্রমিকে ফাইবার গ্লাসের প্রতীকী মূর্তিটি গড়লেন শিল্পী অসিত সাঁই।তাঁর কথায়, ‘জুনিয়র ডাক্তাররা শিরদাঁড়া সোজা করে যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তাকে কুর্নিশ জানাই। আর যেন এমন ঘটনা বিশ্বের কোথাও না ঘটে এই অঙ্গীকার আমাদের নিতে হবে।”
হাসপাতাল চত্বরের প্ল্যাটিনাম জুবিলি হলের সামনে অধ্যক্ষের ঘরের কাছেই বসানো হয়েছে মূর্তিটি। নির্যাতিতার প্রতীকী ভাস্কর নাম দেওয়া হয়েছে ‘সময়ের কান্না’। এদিন সকাল ১১ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ আরজি করে মূর্তিটি স্থাপন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের নয়া সুপার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়-সহ বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ও বিভাগীয় প্রধানরা। আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ফাইবারের তৈরি মূর্তিটির সঙ্গে ধর্ষিতা এবং নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার চেহারার কোনও মিল নেই। এক নারীর যন্ত্রণার অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আবক্ষ মূর্তিটিতে।
রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ তথা তৃণমূলের মিডিয়া কমিটির সদস্য কুণাল ঘোষ এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘তিলোত্তমার নামে এই মূর্তিটি বসানো সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্যের স্পিরিটের পরিপন্থী। কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি এটা করতে পারেন না। শিল্পের নামেও না। প্রতিবাদ, ন্যায়বিচারের দাবি থাকবেই। কিন্তু মেয়েটির যন্ত্রণার মুখ দিয়ে মূর্তি ঠিক নয়। নিগৃহীতার ছবি, মূর্তি, নামে দেশে গাইডলাইন আছে।’
তিলোত্তমার নামে এই মূর্তিটি বসানো সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্যের স্পিরিটের পরিপন্থী। কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি এটা করতে পারেন না। শিল্পের নামেও না। প্রতিবাদ, ন্যায়বিচারের দাবি থাকবেই। কিন্তু মেয়েটির যন্ত্রণার মুখ দিয়ে মূর্তি ঠিক নয়। নিগৃহীতার ছবি, মূর্তি, নামে দেশে গাইডলাইন আছে। pic.twitter.com/LCnH7QRfJx
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) October 2, 2024
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মহালয়ার সকালেও পথ দখল কর্মসূচি নিয়েছিল নাগরিক সমাজ। সেই কর্মসূচিকেও কটাক্ষ করেন কুণাল। তিনি আরও লেখেন, ‘বানতলা, ধানতলা, কোচবিহারসহ অসংখ্য ধর্ষণ, খুনের শয়তানদের ধারক বাহকরা আজ সাধু সেজে ন্যায়বিচারের নাটকের আড়ালে রাজনৈতিক স্ক্রিপ্টে অরাজকতার চেষ্টা করছে। এরা মহালয়ায় বীরেনবাবুর গলা শোনে না। সুশান্তর ভিডিও দেখে পুজোর পরিবেশ নষ্ট করতে নামে।” পরিশেষে তাঁর কটাক্ষ, ‘এদের মায়াকান্নার পোস্টে রাজনীতির ক্ষুধা।’