করোনা আবহে প্যান্ডেল করে দুর্গাপুজো করা যাবে না। ইচ্ছা থাকলে বাড়িতেই পুজোর আয়োজন করতে হবে। সোমবারই রাজ্যবাসীর জন্য এই বড় ঘোষণা করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)। তবে একইসঙ্গে তিনি জানান, কড়া কোভিডবিধি মেনে অন্যান্য বছরের মতোই রামলীলা আয়োজিত হবে।
অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, রামলীলা করা গেলে করোনায় সরকারি নির্দেশিকা মেনে দুর্গাপুজো কেন নয়? এবার এই নিয়েই টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত।
আরও পড়ুন : মোদী সরকারের বিরোধিতার শাস্তি! ফ্রিজ অ্যাকাউন্ট,ভারত থেকে হাত গোটাল অ্যামনেস্টি
যোগীর এই ঘোষণার পর থেকেই বাংলার বিজেপি পড়েছে মুশকিলে। গোবলয়ে রাম ধর্মের থেকেও বেশি করে বহন করেন রাজনৈতিক পরিচয়। রামকে নিয়ে যে উন্মাদনা সেখানে দেখা যায় তার মধ্যে স্নিগ্ধতা নেই বললেই চলে। কিন্তু বাঙালির দূর্গা পুজোর মধ্যে একটা স্নিগ্ধতা আছে। সকলকে আপন করে নেবার একটা অভিপ্রায় রয়েছে।
দূর্গা কোনওকালে বাঙালির সংকীর্ণ রাজনীতির প্রতীক হয়ে ওঠেনি। এটিকে মিলন ও ঐক্যের অনুষ্ঠান বলেই মনে করেন বাঙালিরা। সব ধর্মের মানুষ বাংলার দুর্গাপুজোয় অংশ নেন। অথচ গোবলয়ের গেরুয়া রাজনীতিবিদরা সেটা বুঝতে চাইছেন না। এতে এখনকার বিজেপি নেতাদের অসুবিধাই পড়তে হচ্ছে।
অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আবার রাজ্যবাসীদের প্রতিমা পুজো (Durga Puja) থেকে বিরত থেকে ঘটপুজো করার পরামর্শ দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই দুর্গাপুজোর গাইডলাইন প্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। যেখানে মণ্ডপের চেহারা থেকে অঞ্জলি- সবকিছুইর উল্লেখ রয়েছে।
যোগী সরকার অন্য পথে হেঁটেছে। তাদের সাফ বক্তব্য, দুর্গাপুজো উপলক্ষে প্রকাশ্যে জমায়েত করা যাবে না। প্রতিমা বিসর্জন বা অন্য কোনওদিন শোভাযাত্রাও করা যাবে না। একান্তই ইচ্ছা থাকলে বাড়িতেই সমস্ত আয়োজন করতে হবে। উত্তরপ্রদেশ সরকারের এই ঘোষণা ‘সমুচিত’ নয় বলেই মনে করছেন স্বপন দাশগুপ্ত। আদিত্যনাথের কাছে তাঁর আরজি, রামলীলার মতো কোভিডবিধি মেনেই দুর্গাপুজোর অনুমতি দেওয়া হোক। নাহলে সে রাজ্যের বাঙালি হিন্দুদের সঙ্গে বৈষম্য করা হবে।
UP Govt’s order that Durga Puja should be done at home is unfair & even absurd. Like the allowances for Ram Lila, Durga Puja should be permitted with harsh but sensible restrictions. Otherwise it is discriminatory. Bengali Hindus in UP appeal to @myogiadityanath to review order
— Swapan Dasgupta (@swapan55) September 29, 2020
যোগীর এই সিদ্ধান্ত বাংলায় বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে যেতে পারে। তা আন্দাজ করেই অনুরোধ জানিয়েছেন স্বপন দাশগুপ্ত। তৃণমূল সরকার বাঙালি সেন্টিমেন্টকেই কাজে লাগিয়ে নির্বাচনের ঘুঁটি সাজাচ্ছে। বিজেপিকে বাঙালি বিরোধী তকমা দেওয়ার মরিয়া চেষ্টাও করছে। এমন আবহে উত্তরপ্রদেশে দুর্গাপুজো না হওয়া শাসকদলের কাছে আরও একটা বড় অস্ত্র হয়ে দাঁড়াতে পারে।
গেরুয়ায় দলের সমস্য হল তারা দেশটা আরএসএসের চশমায় দেখতে চায়। এ দেশ বিচিত্র। এখানে ধর্ম ও সংস্কৃতি পৃথক জিনিস। কেবল ধর্ম দিয়ে সবটা হয় না। ধর্মই যদি সব হবে তাহলে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের ধর্ম তো একই ছিল। তাহলে পাকিস্তানের সঙ্গে তারা লড়াই করে পৃথক হল কেন। স্বপন দাশগুপ্তরা বুঝলেও এসব যোগীরা বুঝবেন না। তারা ধর্মকে বিদ্বেষের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলছেন। মনে করছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন : করোনার পর ‘ক্যাট কিউ’! নয়া চিনা ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক করল ICMR