Site icon The News Nest

‘বিশ্বাসঘাতক’ নাকি ‘সম্পদ’ – বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে দ্বিমত বিজেপি নেতৃত্ব

babul 1

‘ও তো প্রথম বিশ্বাসঘাতক নয়! শেষও নয়।’ শনিবার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলে যোগ দেবার পর এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথাগত রায়।

গতকাল বিকেলে করা এক ট্যুইট বার্তায় তথাগত রায় আরও জানান – ‘পশ্চিমবঙ্গ বিজেপিকে বিপদে ফেলেছে বিশ্বাসঘাতকরা। বেচারা বাবুল সুপ্রিয়-র উপর রাগ করে আর কি হবে? ও তো প্রথম বিশ্বাসঘাতক নয় ! শেষও নয়। কিন্তু মতাদর্শ চিরন্তন। ব্যক্তিপূজা কখনো মতাদর্শকে হারাতে পারবে না। বিপদ কেটে যাবে।’

সেই প্রশ্নের উত্তরে বাবুল টুইটে ট্যাগ করে লিখলেন, ‘কেন এই ভাষা ব্যবহার করলেন দাদু?’ ‘বিশ্বাসঘাতক’ শব্দেই বাবুলের আপত্তি, সেটাই মনে করিয়ে দিলেন তিনি। বাবুল স্পষ্ট লিখেছেন, ‘আমার মনে হয়, আপনি আমার বিরুদ্ধে যেতেই পারেন। আমাকে যত খুশি সমালোচনা করুন। কেন এই ভাষা ব্যবহার করলেন দাদু? খবরে থাকার জন্য?’ যদিও পরে এর উত্তর দিয়েছেন তথাগতও। তিনি লিখেছেন, ‘বাবুল, বাচ্চাদের মতো ব্যবহার করবেন না। আপনার নৈতিক চেতনার খারাপ অবস্থা। তবে ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা। মনে হচ্ছে এটা আপনার প্রয়োজন।’

বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলে যোগ দিলেও প্রায় দেড় মাস আগে তিনি নিজেই ফেসবুকে পোষ্ট করে রাজনীতি ছেড়ে দেবার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই সময় বাবুল জানিয়েছিলেন রাজনীতিতে না থেকেও সমাজসেবা করা যেতে পারে। যদিও সেই অবস্থান থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে ফের রাজনীতির আঙিনায় পা রাখলেন বাবুল। তবে বিজেপির হয়ে নয়। তৃণমূলের হয়ে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গতকাল তথাগত রায় তাঁর ট্যুইটে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতেই আরও একবার নিশানা করেছেন বিজেপি নেতৃত্বকে। বিগত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হবার পর থেকে বিজেপিতে ভাঙন অব্যাহত। একের পর এক বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বর পক্ষে সেই ভাঙন আটকানো সম্ভব হচ্ছে না। ১৮ জন সাংসদকে আটকে রাখা যাবে কি? এবার উঠছে সেই প্রশ্ন।

যদিও বাবুল সুপ্রিয় প্রসঙ্গে তথাগত রায়ের সঙ্গে সহমত নন বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত। তিনি এক ট্যুইটবার্তায় বাবুল সুপ্রিয়কে বিজেপির ‘সম্পদ’ বলে অভিহিত করেন। বাবুল সুপ্রিয়র (Babul Supriyo) তৃণমূল যোগদান নিয়ে একটি ট্যুইটবার্তায় স্বপন দাশগুপ্ত (Swapan Dasgupta) লেখেন, “আমি ভবিষ্যতের কথা বলতে পারব না, কিন্তু বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo) বিজেপির সম্পদ ছিলেন এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে তাঁর দলের প্রতি কাজের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। একইসঙ্গে তিনি লিখেন আমাদের মতো যাদের জন্য বিজেপি আজীবন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাদের লড়াই চলবে – এমনকি প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও আমরা সেই লড়াই চালিয়ে যাবো।’

রবিবার সকালে একটি টুইট করেন রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত৷ লেখেন, ‘বাবুল সুপ্রিয়র দলত্যাগের পর বিজেপি সমর্থকদের রাগ লোক দেখানো নয়৷ সাধারণ মানুষও দলবদলের রাজনীতিতে বিরক্ত৷ ধৈর্য দেখানো এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি সহ্য করতে পারাটাও রাজনীতির মধ্যে পড়ে৷ দুঃখ এটাই বাবুল খুব তাড়াহুড়ো করল৷ তিনি নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট করলেন৷’

পাল্টা জবাব দিয়েছেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ৷ তিনি লেখেন, ‘দাদা আমার রাগটাও লোক দেখানো নয়৷ আমার প্রতি ক্ষোভ দেখানোটা স্বাভাবিক৷ এই বাবুল সুপ্রিয়ই বহিরাগতদের বিজেপিতে নেওয়ার বিরোধিতা করেছিল৷ তাতে কী বিজেপির ভাবমূর্তি খুব উজ্জ্বল হয়েছিল? বহিরাগতদের জন্য যাঁরা দলে সাইডলাইন হয়ে পড়েছিলেন তাঁদেরকেও এই প্রশ্ন করা হোক৷’

পরের টুইটে তিনি লেখেন, ‘দলবদল করে কি আমি নতুন ইতিহাস রচনা করলাম? তাহলে যখন দলের নীচু স্তরের লড়াকু কর্মীদের উপেক্ষা করে বিরোধী দল থেকে নেতাদের দলে টেনে এনে গলায় জড়িয়ে ধরা হল এবং তাঁদের উঁচু পদে বসানো হল তখন এতে কী দলের ভাবমূর্তি ঠিকঠাক ছিল?’

Exit mobile version