Site icon The News Nest

রবীন্দ্রনাথের ‘মেজদাকে’ ‘বড়দা’ বলে বেমালুম ভাষণ দিলেন মোদী

modi 2

বিজেপি বারবার প্রমান করার চেষ্টা করছে এই বাংলার সামগ্রিক উন্নয়নে অবাঙালিদের প্রভাব কতখানি। আগেই দিলীপ ঘোষ অবাঙালিদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন।বাঙালি মূলত তার সংষ্কৃতি নিয়ে গর্ব করে। এখন সেখানেও গুজরাটি প্রভাব উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ঢোকানোর চেষ্টা চলছ। এমন অভিযোগ শোনা যাচ্ছে।

বিশ্বভারতীর শতবর্ষ উদযাপন মঞ্চে রবীন্দ্রনাথের বাণী দিয়েই বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিশ্বভারতীর স্তুতি ঝরে পড়ে তাঁর গলায়। তিনি বলেন, বিশ্বভারতীর দেখানো পথেই ভারত বিশ্বমঞ্চে নিজেকে তুলে ধরতে চাইছে।

বক্তব্যের শেষের দিকে এসে মোদী গুজরাটের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের নিবিড় যোগাযোগের কথা বলেন। দাদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে তিনি রবীন্দ্রনাথের ‘বড়দা’ বলে বেমালুম উল্লেখ করে। আসলে তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথের ‘মেজদা’। সত্যেন্দ্রনাথের গুজরাট-যোগের কথাও বলেন তিনি।

আরও পড়ুন: আত্মনির্ভরতা শিখিয়েছিলেন কবিগুরু, রবি-চিন্তায় দেশবাসীকে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা মোদীর

অনেকের মতে মোদীর ভাষণের স্টাইলটা দেখুন। তিনি কি বলছেন সেটার ওপর তত জোর না দিলেও হবে। তাতে খানিকটা তথ্যে ভুল থাকে। সেটা তেমন কিছু না। বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল ভাষণে তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথকে পাথেয় করে আগামীদিনে বিশ্বভারতী থেকে শিক্ষা নিয়েই চলবে দেশ, এই কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েই সমাপ্ত হয় তাঁর বক্তব্য।

গুজরাট-যোগের কথা বলতে গিয়ে মোদী শাড়ি পরার প্রসঙ্গ টেনে আনেন। এবং সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী জ্ঞানদানন্দিনীদেবীর কথা বলেন তিনি। বলেন, জ্ঞানদানন্দিনী গুজরাটি মহিলাদের থেকেই নতুন ধাঁচের শাড়ি পড়া শিখে তা প্রথমে তাঁর পরিবারে প্রচলন করেন। এবং ক্রমে তা বাঙালির নিজস্ব শাড়ি পড়ার ধাঁচে পরিণত হয়।

গুজরাটি মহিলাদের থেকে শাড়ি পড়ার ধরন ধার করা বিষয়ে যে তথ্য মোদী দিয়েছেন তা নিয়ে  বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ব্রাত্য বসু এক সাংবাদিক বৈঠকে বাঙালি মহিলার শাড়ি-পরার স্টাইল প্রসঙ্গে মোদীর তথ্যকে ভ্রান্ত বলে উল্লেখ করেন। তিনি পরিষ্কার বলেন, মোদী এ ক্ষেত্রে আংশিক সত্য বলেছেন। শাড়ির নতুন ধরন জ্ঞানদানন্দিনী গুজরাটি ধাঁচ থেকেও যেমন অনুকরণ করেছিলেন, তেমনই আবার পার্সি মহিলাদের থেকেও শিখেছিলেন। এ ক্ষেত্রে শুধু গুজরাটের কথা বললে ঠিক বলা হয় না।

চিত্রা দেব তাঁর ‘ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল’ বইতে লিখছেন, ”জ্ঞানদানন্দিনী বাঙালি মেয়েদের দিলেন একটি রুচিশোভন সাজ। অবশ্য দেশী ধাঁচে পরা যে খারাপ ছিল তা নয়, তবে তাতে সৌষ্ঠব ছিল না। বোম্বাইয়ে গিয়ে  তিনি প্রথমেই জবরজং ওরিয়েন্টাল ড্রেস বর্জন করে পার্শী মেয়েদের শাড়ি পরার মিষ্টি ছিমছাম ধরনটি গ্রহণ করেন। নিজের পছন্দমতো  একটু অদল-বদল করে জ্ঞানদানন্দিনী এই পদ্ধতিটাকেই বজায় রাখলেন।…..বোম্বাই থেকে আনা বলে ঠাকুরবাড়িতে এই শাড়ি পরার ঢংয়ের নাম ছিল ‘বোম্বাই দস্তুর’ কিন্তু বাংলাদেশে তার নাম হল ‘ঠাকুরবাড়ির শাড়ি’।”

‘শ্রাবস্তী’র কর্ণধার চৈতালি দাশগুপ্ত বলছেন, ”আসলে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর তখন গুজরাটে ছিলেন। সেই সময়টাতেই জ্ঞানদানন্দিনী এই শাড়ির ধরন নিয়ে ভাবেন। তিনি পার্শি মহিলাদের থেকেই নতুন ধাঁচের শাড়ি পরার ধরনটি ধার করেন। পরে অবশ্য সেটি কলকাতার ব্রাহ্মমহিলাদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়। এবং নতুন এই ধাঁচটি ‘ব্রাহ্মিকা ধরনের শাড়ি’ হিসাবেও পরিচিতি পায়।”

আরও পড়ুন: হোয়াটস অ্যাপে এসেছে Christmas- এর বিশেষ স্টিকার, জেনে নিন কীভাবে পাঠাবেন

 

Exit mobile version