বিধানসভা নির্বাচনের জন্য কংগ্রেস এবং আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর সঙ্গে জোট গড়েছিল সিপিএম। ভোট শেষ হয়ে যাওয়ায় জোটও শেষ হয়ে গিয়েছে বলেই দাবি করলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। বললেন, “ইলেকশন ছিল, মোর্চা ছিল। ইলেকশন শেষ, মোর্চাও শেষ।” অর্থাৎ ভোট শেষ, জোট শেষ।
কলকাতায় সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন ইয়েচুরি। সেখানেই সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “জনতা পার্টি এসেছিল ইন্দিরা গাঁধীকে হারাতে। হারিয়ে দেওয়ার পরেই জনতা পার্টি শেষ। ইমিডিয়েট পারপাসের জন্য ফ্রন্ট তৈরি হয়। ইভেন্ট শেষ হলে পারপাস থাকে না।”
“মোর্চা ছিল ইলেকশনের জন্য। ও তো হয়ে গিয়েছে। ইলেকশন শেষ তো চর্চা শেষ।” শুক্রবার পরিষ্কার ঘোষণা সিপিএম (CPIM) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি (Sitaram Yechuri)। সংযুক্ত মোর্চার ভবিষ্যৎ নিয়ে যে জল্পনা চলছিল তার এদিনই তার যবনিকা টানলেন সীতারাম।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৈরি হওয়া জোটের ভবিষ্যৎ যে খুব ভাল নয় তার ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। ভবানীপুর উপনির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে কংগ্রেস এবং সিপিএমের মতান্তর তা বেশি করে স্পষ্ট করে দেয়। অনেকের মধ্যে এমন আশা ছিল যে, আগামী দিনে পুরনির্বাচনে সংযুক্ত মোর্চা হিসেবে লড়াই করতে পারে সিপিএম। কিন্তু ইয়েচুরির শুক্রবারের বক্তব্য বুঝিয়ে দিল, সংযুক্ত মোর্চার পথ চলা শেষ। তিনি বলেন, ‘‘মোর্চা ছিল বিধানসভা নির্বাচনের জন্য। নির্বাচন তো শেষ হয়ে গিয়েছে। নির্বাচন শেষ, মোর্চাও শেষ।’’
রাজ্যে সিপিআইএম-এর শূন্য হওয়ার পর রাজ্য কমিটিতে কৌশল নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন অনেকেই। এদিকে ভোট মিটে যাওয়ার পর জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। এর আগে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশ্নের মুখেও পড়েছিলেন রাজ্যের নেতারা। বিধানসভার শোচনীয় ফলাফলের পর বাম শরিকদের একাংশের দাবি ছিল কংগ্রেস (Congress) ও আইএসএফ (ISF)-কে নিয়ে ভোটে লড়ার ফলেই মুখ ফিরিয়েছেন সমর্থকরা। তার থেকে বরং ওই দুই দলকে ছেড়ে একা লড়ুক সিপিএম।
তৃণমূল দাবি করেছে ‘১৪ ও ‘১৯ এর ভোটে রাহুল গান্ধীকে মুখ করে বিরোধীদের পরা জয় হয়েছে। ২৪-এ মুখ হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে ইয়েচুরির ব্যাখ্যা, “আগামী লোকসভা ভোটে অনেক কথা এরকম আসবে। অনেক থার্ড ফ্রন্ট আসবে। অ্যাকচুয়ালি যা হবে তা সবাই দেখতে পাবেন।” পাশাপাশি তাঁর এও ব্যাখ্যা, যে বিরোধী দলগুলি একজোট হয়েছে, তা মোর্চা নয়। বিভিন্ন ইস্যুর ওপর কেন্দ্রের বিরোধিতার জন্য তারা একত্রিত হয়েছে। এটা কোনও মোর্চা নেই।