Narada Scam : দিনভর লাফালাফিই সার! এই পাঁচ কারণে আদালতে মুখ পুড়ল সিবিআইয়ের

নারদ কাণ্ডে সিবিআই যে চার্জশিট পেশ করেছিল সেখানে সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েলের আইফোনের উল্লেখ ছিল না।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

ভরা এজলাসে মুখ পুড়ল সিবিআইয়ের। কারণ রাজ্যের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক এবং প্রাক্তন মেয়রকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই আধিকারিকরা। কিন্তু আদালতে যে নথি পেশ করেছিল তাঁরা, সেখানে বিস্তর ফাঁক লক্ষ্য করা যায়। যার জেরে সহজেই জামিন পেয়ে গেলেন ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র এবং প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়৷

তিন তৃণমূল নেতার হয়ে আদালতে যিনি সওয়াল করেন, তৃণমূলের সেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিশেষ সিবিআই আদালতে এ দিন প্রথমে ধৃতদের পুলিশ হেফাজতের দাবি জানায় সিবিআই৷ পরে অবস্থান বদল করে জেল হেফাজতের কথা বলে তারা৷ এর পাশাপাশি সিবিআই-এর অভিযোগ খণ্ডন করতে আদালতে বেশ কিছু যুক্তি দেন তৃণমূল নেতাদের আইনজীবী৷ মূলত পাঁচটি বিষয়ের উপর জোর দিয়ে সওয়াল করেন তিনি৷ এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, আদালতে কী কী যুক্তির উপরে মূলত জোর দেন কল্যাণ-

১. দুর্নীতি দমন আইনে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার প্রমাণ থাকতে হবে৷ কিন্তু যে সাজানো ভিডিও-র উপরে ভিত্তি করে সিবিআই এই অভিযোগ আনছে, সেখানে তাঁর কোনও মক্কেলই ঘুষ চায়নি বলে দাবি করেন কল্য়াণ৷  তৃণমূল সাংসদের যুক্তি, তাঁদেরকে যেচে টাকা দেওয়া হয়েছে৷ ফলে তা ঘুষ হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত নয়৷

২. সুপ্রিম কোর্ট গত ৭ মার্চ রায় দিয়েছে, করোনা অতিমারির কথা মাথায় রেখে অপ্রয়োজনে কাউকেই হেফাজতে নেওয়া যাবে না৷ ২০১৭ সালের মামলায় কেন এতদিন বাদে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে সিবিআই?

৩. রাজ্যপাল যে অনুমোদন দিয়েছেন, তা অসাংবিধানিক৷ তিনি মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার পরামর্শ ছাড়া কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না৷ সিবিআই গত জানুয়ারি মাসে এই অনুমোদন চেয়ে রাজ্যপালকে চিঠি দেয়৷ কিন্তু রাজ্যপাল তা রাজ্য সরকারকে জানাননি৷ গত ৩ মে পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদে ছিলেন, ৫ মে ফের তিনি শপথ নেন৷ অথচ তাঁকে বা সরকারের মন্ত্রিসভাকে একবারও এই অনুমোদন দেওয়ার কথা জানাননি রাজ্যপাল৷ এমন কি, প্রোটেম স্পিকার সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও তিনি কিছু জানাননি৷

আরও পড়ুন: আজ থেকে কার্যত লকডাউন রাজ্যে, কী কী খোলা থাকবে, কী বন্ধ থাকবে, দেখে নিন একনজরে

৪. শুধু তাই নয়, রাজ্যপাল প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ থেকে পিছনের দরজা দিয়ে সিবিআই-কে অনুমোদন দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন কল্যাণ৷ তাঁর দাবি, রাজ্যপাল যদি এই অনুমোদন দিতেও চান, তাহলে তা রাজ্য সরকারের মারফতই তাঁকে সিবিআই-কে জানাতে হতো৷

৫. ২০১৪ সালে নারদ স্টিং অপারেশনের সময় থেকে এখনও মন্ত্রী রয়েছেন ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ এই সময়ের মধ্যে তাঁদের বা মদন মিত্রের বিরুদ্ধে কোনও সাক্ষীকে ভয় দেখানোর বা প্রমাণ নষ্ট করার অভিযোগ ওঠেনি৷ তাঁরা কোথাও আত্মগোপনও করেননি৷ ফলে জামিন পেলে তাঁরা এখন প্রভাব খাটিয়ে প্রমাণ নষ্ট করবেন, এমন আশঙ্কা ভিত্তিহীন৷

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, এই মামলায় মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীর মতো বিজেপি নেতারা অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁদের গ্রেফতার করা হল না, বিচারকের সামনে সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি৷

সেই সঙ্গে সামনে এসেছে আরও কিছু বিষয় –

নারদ কাণ্ডে সিবিআই যে চার্জশিট পেশ করেছিল সেখানে সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েলের আইফোনের উল্লেখ ছিল না। ওই আইফোন ফোর এস–এ নারদ স্টিং অপারেশন চালিয়েছিলেন সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল৷ সিবিআই সূত্রে খবর, ওই আইফোন থেকে সব তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি৷ পরবর্তীকালে সেই তথ্য হাতে এলে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে তার উল্লেখ করবে সিবিআই৷

জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ক্যালিফোর্নিয়ায় অ্যাপলের সদর দফতর থেকে দুই বিশেষজ্ঞ এসে দিল্লিতে সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে দেখাও করেন৷ তাঁদের সাহায্যে বেশকিছু তথ্য সিবিআইয়ের হাতে আসে৷ কিন্তু সব তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি৷ ওই দুই বিশেষজ্ঞ সিবিআই কর্তাদের জানিয়েছিলেন, আইফোনের ক্লাউড সার্ভারে যে জায়গা ছিল তা অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বাড়িয়ে নিয়েছিলেন ম্যাথু স্যামুয়েল৷ আইফোনের ক্লাউড সার্ভারে থাকা তথ্য, ভিডিও হাতে পেতে বিদেশমন্ত্রকের মাধ্যমে ফের অ্যাপলের সদর দফতরে চিঠি পাঠিয়েছে সিবিআই৷

এদিনের চার্জশিটে ঘটনার পুনর্নির্মাণ, সাক্ষীদের বয়ান, অভিযুক্তদের ভয়েস টেস্ট করে পাওয়া তথ্যের কথাই উল্লেখ করেছে সিবিআই৷ কিন্তু চার্জশিটে মাত্র পাঁচজনের নাম, উল্লেখ নেই আইফোনের- তার কারণে খেলো হয়ে গিয়েছে এই গ্রেফতারি পর্ব।

আরও পড়ুন: ফিরহাদরা গ্রেফতার হতেই আসরে মমতা, সরাসরি হাজির CBI দফতরে!

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest