মেডিকেল থেকে চুরি করোনার জীবনদায়ীর ইঞ্জেকশন, চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হাতানোর অভিযোগ

অভিযোগ উঠেছে, স্বল্প ব্যবধানে কয়েক দফায় অভিযুক্ত চিকিৎসক কর্তব্যরত নার্সিং ইনচার্জের কাছ থেকে রোগীর ভুয়ো প্রেসক্রিপশন জমা দিয়ে ওই ইঞ্জেকশন তোলেন।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে উধাও করোনা রোগীর জীবনদায়ী টসিলিজুম্যাব ইঞ্জেকশন (Tocilizumab injection)। কম করে ২৬টি টসিলিজুম্যাব উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার একটি ফেসবুক পোস্ট থেকে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (Kolkata Medical College & Hospital) শুধুমাত্র ‘স্পেসিমিন একজমিনেশন ফর্ম’ (ল্যাবরেটরিতে রোগীর নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানোর কাগজ) থেকে ওই ওষুধ কীভাবে লেখা হল তা নিয়ে রীতিমতো চাপানউতোর শুরু হয়েছে মেডিক্যাল কলেজে। যার রেশ পৌঁছেছে স্বাস্থ্যভবনে।

জানা গিয়েছে, প্রভাব খাটিয়ে সিসিইউ-তে ডিউটিরত নার্সের কাছ থেকে ইঞ্জেকশন নিয়ে নিয়েছেন হাসপাতালেরই এক চিকিৎসক— এমনটাই অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ওই চিকিৎসক রাজ্যের শাসকদলের এক নেতার ঘনিষ্ঠ বলেও অভিযোগ উঠেছে। প্যাথোলজি বিভাগের নমুনা পরীক্ষার ফর্মে বানানো হয়েছে ভুয়ো প্রেসক্রিপশন। আর সেটা ব্যবহার করেই ইঞ্জেকশন তুলে নেওয়া হয়েছে। এমন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গত কয়েক দিন ধরেই নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে দু’টি অডিয়ো ক্লিপ ও কয়েকটি ছবি। ওই অডিয়ো ক্লিপ ও ছবির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডিজিটাল। নেটমাধ্যমে অনেকের দাবি, ছবিগুলি মেডিক্যাল কলেজের প্যাথোলজি বিভাগের নমুনা পরীক্ষার ফর্ম। সেই ফর্মে চলতি বছরের ২৪ মার্চের তারিখ উল্লেখ রয়েছে। তবে নাম রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির। একটি অডিয়ো ক্লিপে শোনা যাচ্ছে এক মহিলা (নিজেকে সিসিইউ-র সিস্টার বলে পরিচয় দিচ্ছেন) অন্য এক মহিলাকে ফোন করে বলছেন, ‘‘দিদি, আমি সিসিইউ-র সিস্টার বলছিলাম। বলছি যে আপনি যে ২৬টি টসিলিজুমাব নিয়েছেন সেটা যদি কাগজে রিসিভ করে নিতেন।’’ এবার অপর প্রান্তে থাকা মহিলা বলছেন, ‘‘আচ্ছা দিদি আমি সোমবার আসব, করে দেব।’’

আরও পড়ুন: সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ, ঝিরিঝিরি বৃষ্টি কলকাতা ও শহরতলি জুড়ে

আর একটি অডিয়ো ছড়িয়েছে। অভিযাগ, তাতে ওই নার্স ও চিকিৎসককের কথোপকথনে দুই ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। একজনের নাম ‘দেবাশিস স্যর’ ও অন্য জন ‘নির্মল মাজি স্যর’। এবং এটাও শোনা যাচ্ছে যে উপরমহলের সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। সোমবারে স্যর দেখে নেবে। এ-ও বলা হচ্ছে যে, প্রয়োজনে ‘রিসিভ’ না দিতে পারলে কপি ছিঁড়ে ফেলা হবে।

গত ৩ মে স্বাস্থ্য দফতর রেমডেসেভির এবং টসিলিজুমাব, এই দু’টি ইঞ্জেকশনের যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছিল। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, প্রস্তুতকারক সংস্থা এই দুটি ইঞ্জেকশন শুধু নার্সিংহোম ও কোভিড হাসপাতালকেই বিক্রি করতে পারবে। নেটমাধ্যমে অভিযোগ উঠেছে, বেআইনি ভাবে টসিলিজুমাব ইঞ্জেকশন তুলে নেওয়া অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম দেবাংশী সাহা। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে মেডিক্যাল কলেজে ওই নামে এক মহিলা চিকিৎসক রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমার কিছু বলার নেই, আমি কিছু জানি না।’’

দ্বিতীয় অডিয়ো ক্লিপে নির্মল মাঝি স্যর বলে এক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। তৃণমূল নেতা নির্মল মাজির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ফোনে বলেন, ‘‘আমি শুনেছি ঘটনাটি, তদন্ত কমিটি হয়েছে মেডিক্যাল কলেজে। আমি শুনেছি, যে এটা করেছে সে ভুল স্বীকার করেছে। দিয়ে দেবেও বলেছে। এটা যদি করে থাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। আমি যদি দেখি কেউ আমার নাম নিয়েছে, আমি এফআইআর করব।’’

মূলত বাতের রোগের জন্য ব্যবহার করা হয় টোসিলিজুমাব ইঞ্জেকশন। কিন্তু সম্প্রতি চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণায় প্রকাশ্যে এসেছে যে, করোনা আক্রান্ত মরণাপন্ন রোগীদের ক্ষেত্রে প্রাণ রক্ষা করতে সক্ষম এই ইঞ্জেকশন।

আরও পড়ুন: কমেছে কাশি, আজ বাড়ি ফিরতে চলেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest