Site icon The News Nest

‘পরকীয়া’র জেরেই কি মর্মান্তিক পরিণতি? একবালপুরে তরুণী খুনে গ্রেপ্তার দম্পতি

ekbalpur

পরকীয়ার জেরেই কি খুন একবালপুরের যুবতী? তদন্তে ক্রমশ জোরালো হয়েছে সেই সম্ভাবনার কথা-ই। বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জেরেই খুন হতে হয়েছে নয়না ওরফে সাবা খাতুনকে। এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যেই একবালপুর খুনের ঘটনায় দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর শেখ সাজিদ ও তাঁর স্ত্রী অঞ্জুম বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।

খুনের ৪ দিনের মাথায় প্রথম গ্রেফতার করল পুলিস।রবিবার ভোর রাতে ডেন্ট মিশন রোড এবং ডক্টর সুধীর বসু রোডের সংযোগস্থল থেকে সাজিদকে গ্রেফতার করা হয়।  অঞ্জুমকে গ্রেফতার করা হয় রবিবার সকালে।

সম্প্রতি সাজিদের বাড়ির সামনের ফুটপাতে সাবা খান নামে এক তরুণীর বস্তা বন্দি দেহ উদ্ধার হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, সাজিদের সঙ্গে সাবার প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক ছিল। সাবা তাকে বিয়েও করতে চেয়েছিলেন। এই নিয়েই গণ্ডগোল বাধে। সে কারণেই তাঁকে খুন হতে হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে, তার সঙ্গে আরও একটি বিষয় ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। একটি মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে, নিহত তরুণী মাদক কারবারিদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ওই এলাকায় এক বান্ধবীর বাড়িতে থাকতেন। এমনও শোনা যাচ্ছে, সেই বান্ধবী ও তাঁর মা-ও মাদক কারবারিদের সঙ্গে যুক্ত। তদন্তকারীরা এই সব দিকও খতিয়ে দেখছেন।

বুধবার গভীর রাতে একবালপুর থানার এমএম আলি লেনে সাজিদের বাড়ির সামনের ফুটপাতে মেলে সাবার বস্তাবন্দি দেহ। তাঁর ডান হাতে সিগারেটের ছেঁকার দাগ এবং পায়ে নখের আঁচড় পাওয়া গিয়েছিল। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে আসে, সাবাকে শ্বাসরোধ করে খুন করার বিষয়টি। কিন্তু খুন করার পরে কে বা কারা বস্তাবন্দি দেহ ৭ এফ, এমএম আলি লেনের ফুটপাতে ফেলে গেল, তা নিয়ে তদন্ত করছিল পুলিশ। ওই এলাকার সিসি ক্যামেরা খারাপ থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় তদন্তকারীদের। তবে প্রথম থেকে পুলিশের সন্দেহ ছিল স্থানীয় কেউই এই কাজ করেছে।

আরও পড়ুন: কলকাতার রাস্তায় এঁকে বেঁকে পথচলা চলা শুরু করল শিশুদের লাইব্রেরি, বিশ্বে বেনজির !

সাবার মোবাইলের কল লিস্ট ঘেঁটে পুলিশ সাজিদ এবং ইমরান নামে দুই যুবককে ধরে জেরা করতে শুরু করেছিল। জেরায় সাজিদ খুনের কথা স্বীকার করে। যদিও কী ভাবে ওই তরুণীকে খুন করা হল, তার এখনও স্পষ্ট উত্তর মেলেনি। তদন্ত চলছে।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছেন নয়না ও সুনয়না। তাঁদের এক ভাই আছে। স্ত্রীর মৃত্যুর পর ভাইবোনদের মা ও বউদির কাছে রেখে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে নতুন সংসার পাতেন বাবা শেখ দুলারা। পঞ্চম শ্রেণির পর পড়াশোনা করেননি নয়না। ধীরে ধীরে বিভিন্ন লোকের সাথে মিশতে শুরু করেন। সুন্দরী নয়নার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে এগিয়ে এসেছিলেন বহু তরুণ। বিয়েও করতে চেয়েছিলেন। বোনের বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু সংসারের দিকে না গিয়ে ক্রমে বাউন্ডুলে হতে শুরু করেন তিনি। কুসঙ্গে পড়ে বিড়ি-সিগারেট থেকে শুরু করে ক্রমাগত মদ্যপান, গাঁজা অন্যান্য মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়েন। যোগ হয় মাদকচক্রের সঙ্গে। মাদকের নেশা ছাড়ানোর জন্য বেহালায় একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রেও বেশ কয়েকদিন রাখা হয়েছিল তাঁকে। তবে তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি।

সম্প্রতি, ওয়ারশি লেন এলাকায় রেশমা নামে এক বন্ধুর বাড়িতে গত ২ মাস ধরে থাকছিল সাবা। বুধবার বিকেলে বিরিয়ানি আনার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় সে। তারপর সন্ধ্যা থেকেই তার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। মোবাইল ফোনও সুইচড অফ ছিল। পরে গভীর রাতে তার বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়।

আরও পড়ুন: করোনায় দর্শকহীন হল! বন্ধই হয়ে গেল মেনকা, প্রিয়া, প্রাচী, জয়ার মতো সিঙ্গল স্ক্রিন

Exit mobile version