Site icon The News Nest

বিজেপির প্রার্থী হচ্ছি না, নাম ঘোষণার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন সোমেন-জায়া

sikha mirta

চৌরঙ্গি কেন্দ্রে সোমেন মিত্রের স্ত্রী শিখা মিত্রকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। কিন্তু ভোটে লড়তে চান না তিনি। একটি ভিডিয়োর মাধ্যমে দেওয়া বার্তায় শিখা বলেছেন, ‘‘আমি কোনও মতেই বিজেপি-র হয়ে দাঁড়াচ্ছি না। ভুয়ো সংবাদ আপনাদের কাছে প্রচারিত হচ্ছে। এটা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য নয়। আমি নিজেই বলছি, আমি দাঁড়াব না।’’

বৃহস্পতিবার বিজেপি রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ১৪৮টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে। সেখানে উত্তর কলকাতার চৌরঙ্গীর প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করা হয় শিখা মিত্র চৌধুরীর নাম। এ নাম নিয়ে শুরু হয় হইচই। কারণ, কংগ্রেসের দুঁদে নেতা প্রয়াত সোমেন মিত্রের স্ত্রী কোনওদিনই আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেননি।

বারবারই শোনা যাচ্ছিল, সোমেন মিত্রর স্ত্রী তথা প্রাক্তন বিধায়ক শিখা ও ছেলে রোহন বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন। যদিও যোগদানের বিষয়ে কিছুটা দোটানায় ছিল মিত্র পরিবার। ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছিল, শিখার সঙ্গে দেখা করে দীর্ঘক্ষণ আলোচনাও করেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই বিজেপি-তে যোগদানের প্রস্তাব দেওয়া হয় শিখা ও রোহনকে। সেই সময় আনন্দবাজার ডিজিটালেই লেখা হয়েছিল, বিজেপি মিত্র পরিবারের একজনকে চৌরঙ্গি বিধানসভা থেকে প্রার্থী করতে চায়। কিন্তু তারপরেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি পরিবার।

যদিও সেদিন শিখাদেবী বারবার বলেছিলেন, “শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক দিনের। ওর (শুভেন্দু) বাবা শিশির অধিকারীর সঙ্গে আমার স্বামীর সম্পর্কও অনেক দিনের। ও (শুভেন্দু) তো মাঝে মধ্যেই আমার বাড়িতে আসে। আমাকে কাকিমা বলে শুভেন্দু। তো ও আমাকে বলেছিল যোগ দেওয়ার কথা। আমি বলেছি, এখনই এ সব নিয়ে কিছু ভাবছি না।”

সেদিনই শিখা খোলসা করেন, “মন থেকে কিছুই স্থির করে উঠতে পারছি না। কারণ পুরো স্ট্রিমটাই আলাদা। কংগ্রেস ও বিজেপির ভাবাদর্শ আলাদা। আমি ওখানে গিয়ে আদৌ মানাতে পারব কি না, জানি না। অনেকেই ধর্ম নিয়ে বিজেপিকে বেঁধে। কিন্তু আমি সেটা ভাবছি না। আমিও জয় শ্রী রাম বলি। আমিও ধর্ম মানি। ধর্ম বলতে আমি ধারণ করা বুঝি। তবে এটা বাদ দিয়েও অনেক কিছুই আলাদা আছে। সেটাই মানাতে পারব কিনা, জানি না।”

আরও পড়ুন:

শোভন – বৈশাখী বিজেপি ছাড়তেই তৃণমূল ত্যাগ দেবশ্রী রায়ের, মিলবে কি পদ্মের টিকিট?

এদিন সোমেন পুত্র রোহন বলেছেন, ‘‘সহ্যের একটা সীমা আছে। আমরা কোনও দলে যোগদান করিনি। তারপরেও আমাদের নাম ঘোষণা করে দেওয়া হল। আমরা কোনও দিন ভোটে দাঁড়াতে চাইনি।’’ বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে প্রার্থী ঘোষণার সময় চৌরঙ্গি কেন্দ্রে প্রাক্তন বিধায়ক শিখার নাম ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। তারপরেই প্রবল ক্ষোভ ব্যক্ত করেন শিখা ও রোহন।

২০০৮ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সোমেন। সেই সময় শিখাও যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। ২০১৪ সালে কংগ্রেসে ফিরে আসেন সোমেন। ২০১১ সালে চৌরঙ্গি থেকেই তৃণমূল প্রার্থী হয়েছিলেন শিখা। প্রায় ৫৭ হাজার ভোটে তিনি জেতেন। কিন্তু দলীয় স্তরে মতানৈক্যের জেরে মমতার বিরুদ্ধে ২০১৩ সাল থেকে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন শিখা। তারপরই তাঁকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল। শেষে তৃণমূল ছাড়েন সোমেনও। তারপর থেকে সোমেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি থাকলেও সক্রিয় রাজনীতিতে শিখাকে আর দেখা যায়নি।

সাংগঠনিক পরিকাঠামোর দিক থেকে উন্নত দল হিসাবেই বিজেপির পরিচিতি। দিন-রাত এক করে প্রার্থী তালিকা তৈরি করেছে তারা। দিল্লি হোক বা কলকাতা, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক হয়েছে প্রার্থী বাছতে। তারপরও এমন ‘ব্লান্ডার’, প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ঘটনায় বিজেপি যেমন অস্বস্তিতে, তেমনই কিছুটা হলেও মুখ পুড়ল মিত্র পরিবারের ‘ভাইপো’ শুভেন্দু অধিকারীরও।

আরও পড়ুন: কাগজ চালাতে ১৬ কোটি টাকা দিয়েছিলেন সুদীপ্ত সেন! ফের ইডির তলব আহমেদ হাসান ইমরানকে

Exit mobile version