শনিবার আচমকা দিল্লি পৌঁছে গেলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। পূর্ব ঘোষনা না থাকায় রাজ্যপালের এই সফর ঘিরে জল্পনা চরমে। তাছাড়া এই সফরে রাজ্যপাল কার সঙ্গে দেখা করবেন বা তাঁর কী কাজ, এর কোনও কিছুই জানা যায়নি। যার জেরে তৈরি হয়েছে চরম জল্পনা। এরই মাঝে এদিন গীতার বাণী টুইট করেন রাজ্যপাল। লেখেন, ‘কর্মণ্যেবাধিকারস্তে, মা ফলেষু কদাচন’। যার অর্থ, কাজ করে যাও, ফলের আশা করো না। এর জেরে জল্পনা আরও কয়েক গুণ বেড়েছে।
আরও পড়ুন : Tokyo Olympics 2020: টোকিয়ো অলিম্পিক্স ভিলেজে করোনা হানা, প্রথম আক্রান্তের হদিশ মিলল
শনিবার সকাল ১০.৪৬-এর বিমানে দিল্লিতে রওনা দেন জগদীপ ধনখড়। এর আগে যতবার তিনি দিল্লি গিয়েছেন, টুইট করে তার ‘উদ্দেশ্য’ জানিয়েছেন। গত মাসেও দিল্লি যাওয়ার আগে বিস্তারিত লেখেন টুইটারে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, এদিনের দিল্লি সফর সংক্রান্ত কোনও উল্লেখই নেই ধনখড়ের টুইটার হ্যান্ডেলে। বরং কলকাতা ছাড়ার আগে গীতার বাণীতে ভরে উঠেছে তাঁর প্রোফাইল।
कर्मण्येवाधिकारस्ते मा फलेषु कदाचन |
मा कर्मफलहेतुर्भूर्मा ते सङ्गोऽस्त्वकर्मणि ||Do your duty, but do not concern yourself with results.
Fruits of your actions are not for your enjoyment.
Even while working, give up the pride of doership.
Do not be attached to inaction.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) July 17, 2021
উল্লেখ্য, বিধান পরিষদ-সহ একাধিক জরুরি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে আচমকা রাজভবনে পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই বৈঠকের দুই দিনের মধ্যেই রাজ্যপালের দিল্লি সফরের কোনও যোগ আছে কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান এবং রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের মধ্যে সংঘাত রোজকার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই চরমে পৌঁছে যায় যে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে জৈন হাওয়ালা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত বলে অভিযোগ করেন। এসবের মাঝেই বুধবার আচমকা মুখ্যমন্ত্রীর রাজভবনে পৌঁছনোয় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছড়ায়।
সেই জল্পনা আরও কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে রাজ্যপালের রাজধানী সফরে। প্রসঙ্গত, নির্বাচনের পর থেকেই ভোট পরবর্তী হিংসা প্রসঙ্গে মমতার সরকারকে বারংবার তোপ দেগেছেন রাজ্যপাল। নিজেই চলে গিয়েছেন উত্তরবঙ্গ, নন্দীগ্রামের মতো স্থানে। এরপর মাঝে একবার দিল্লি গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এদিকে জুলাইতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি সফরে যাবেন। সেই সফরে তিনি বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের পাশাপাশি দেখা করতে পারেন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও। সেই সফরের আগে রাজ্যপালের আচমকা দিল্লি সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
গত কয়েকদিনে রাজ্যপালের টুইটে সে ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কিংবা পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে কোনও ‘রুটিন’ আক্রমণাত্মক লেখা নজরে আসেনি। সম্প্রতি হাওলাকাণ্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরব হওয়ার ঘটনা, বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের হট্টগোলে মাঝ পথেই ভাষণ শেষ করে রাজ্যপালের অধিবেশন কক্ষ ছাড়া, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিস্ফোরক রিপোর্ট, মুকুল রায়ের পিএসি চেয়ারম্যান পদ নিয়ে জটিলতা একাধিক বিষয়ে বাংলার রাজনীতি যখন ফুটছে, তখন কিছুটা নীরবই থাকছেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন : ‘আমরা দুঃখিত’, পুলিৎজারজয়ী চিত্র সাংবাদিক দানিশের মৃত্যুর সঙ্গে যোগ নেই, দাবি তালিবানদের