Site icon The News Nest

প্রয়াত রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ব্যাক্তিগত ক্ষতি -বললেন মমতা

subrata

পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন-সহ রাজ্যের চারটি দফতরের মন্ত্রী, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রয়াত। বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুব্রত স্টেন্ট থ্রম্বোসিসে আক্রান্ত হন। তাঁকে আইসিসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়। রাত ৯টা ২২মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

গত ২৪ অক্টোবর রাতে বুকে ব্যথা ও অস্বস্তি নিয়ে এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভরতি হন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। পরের দিন ভোরে আচমকা হার্ট ফেলিওর হওয়ায় তাঁকে কার্ডিওলজির আইসিসিইউ–তে স্থানান্তরিত করা হয়। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অধ্যাপক সরোজ মণ্ডলের নেতৃত্বে সাত সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয় মন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হতেই তাঁকে কেবিনে স্থানান্তরিত করা হয়।

তাঁর শারীরিক অবস্থা দেখেশুনে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেন, দ্রুত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অ্যাঞ্জিওগ্রাম করা হবে। সেই মতো শনিবার তাঁর অ্যাঞ্জিওগ্রাম করা হয়। চিকিৎসকদের কড়া পর্যবেক্ষণে ছিলেন তিনি। তবে কালীপুজোর সন্ধেতেই ফের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী।  হৃদপিণ্ডে ২ দিন আগেই স্টেন্ট বসানো হয়েছিল।  সেই স্টেন্টেই সমস্যা দেখা দেয়। ডাক্তারি পরিভাষায় ‘স্টেন্ট থ্রম্বোসিসে’ আক্রান্ত হন তিনি। জরুরি পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের ডাকা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ।

সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mukherjee) অসুস্থতার খবর পেয়ে বাড়ির কালীপুজো ছেড়ে এসএসকেএমে চলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্ডিওলজি বিভাগ অর্থাৎ যেখানে সুব্রত মুখোপাধ্য়ায় ভরতি, সেখানে গিয়ে ডাক্তারদের থেকে খবরাখবর নেন মমতা। সঙ্গে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, ”বউদি অনেক চেষ্টা করেছেন। সহকর্মীরা অনেক চেষ্টা করেছেন। দীপাবলিতে এত বড় অন্ধকার নেমে আসবে ভাবিনি। আমি সুব্রতদাকে এই অবস্থায় দেখতে পারব না।”

বাংলার কংগ্রেসি রাজনীতিতে ষাটের দশকে ছাত্রবয়সেই নজর কেড়েছিলেন সুব্রত। ছাত্র পরিষদের সভাপতি ছিলেন। ১৯৭২ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে তিনি সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য হন। জরুরি অবস্থার বিতর্কিত পর্বে সুব্রত ছিলেন রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের দায়িত্বে। ২০০০ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০০১ থেকে ২০০৫ তিনি ছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র। মেয়র পদে থাকার শেষ দিকে মমতার সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে সুব্রত। তিনি নিজের মঞ্চ গড়ে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে পুরভোটে লড়েন। ‘ঘড়ি’ চিহ্নে পুরভোট লড়েন। জেতেনও। কিন্তু হেরে যায় তাঁর দল। ফলে কলকাতার মেয়র পদে আর ফেরা হয়নি সুব্রতের। পরে আনুষ্ঠানিক ভাবেই কংগ্রেসে ফিরে যান সুব্রত। তাঁকে কার্যনির্বাহী সভাপতিও করা হয়। কিন্তু ২০১০ সালে আবার তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন তাঁর। সেই থেকে তিনি তৃণমূলেই। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিন দফাতেই সুব্রতকে গুরুত্বপূর্ণ দফতরের ভার দেন।

Exit mobile version