Site icon The News Nest

পুজোয় আর দেবে না বেশ্যাদ্বার মাটি, কেন্দ্রীয় আইনের প্রতিবাদে প্রতিবাদ সোনাগাছির

sonagachi

দুর্গাপুজোয় ‘বেশ্যাদ্বার মৃত্তিকা’ ভিন্ন দেবীর প্রতিমা নির্মাণ সম্ভব নয়। কিন্তু দীর্ঘকাল ধরে এই নিয়ম যথাযথ ভাবে মেনে চলতো সমাজের এইসব যৌনকর্মীরা। কিন্তু এবার তাঁরাই রুখে দাঁড়ালেন। একুশের মহাপুজো নিয়ে কোনও সমস্যা না হলেও যৌনকর্মীদের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়তে চলেছে আগামী বছর থেকে। আর এই বিদ্রোহের মূলে রয়েছে এক কেন্দ্রীয় আইন।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার যে মানবপাচার-বিরোধী আইন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। সেই আইন ইতিমধ্যেই বিল আকারে লোকসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে। রাজ্যসভায় পাশ হলে ও তাতে রাষ্ট্রপতি সই করে দিলেই তা বিধিবদ্ধ আইনে পরিণত হবে। সেই আইনেই বলা হয়েছে দেশে মানব-পাচার রোধ করতে দেশে যত গণিকা বা যৌনকর্মী রয়েছেন তাঁদের সবাইকে পুনর্বাসন দিয়ে এই পেশা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। আর এই নিয়েই ক্ষোভ ছড়িয়েছে দেশের যৌনকর্মীদের মধ্যে যাতে সামিল হয়েছেন বাংলার যৌনকর্মীরাও।

তাঁরাই এখন এই বিলের প্রতিবাদস্বরূপ সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন এবার থেকে তাঁরা আর তাঁদের বাড়ির চৌকাঠের মাটি দেবেন না, দুর্গাপুজোর প্রতিমা নির্মাণ করার জন্য। সোনাগাছির যৌনকর্মীদের বক্তব্য, এই আইনে সব যৌনকর্মীকেই এক চোখে দেখা হয়েছে। পুরুষ যৌনকর্মী বা মহিলা যৌনকর্মী মায় তৃতীয় লিঙ্গের যৌনকর্মী বলে যেমন কোনও ভাগ রাখা হয়নি তেমনি এই পেশায় স্বেচ্ছায় আসা বা জোর করে নামানো নিয়েও কোনও রকম ভাগ রাখা হয়নি। আর তার জেরে দেশ থেকে এই পেশাটাই উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।  আর এতে ধাক্কা খাবেন সেই সব যৌনকর্মীরাই যারা স্বেচ্ছায় এই পেশায় এসেছেন যাদের অর্জিত অর্থে তাঁদের পরিবারের প্রতিপালন হয়।

এই আইনের বিরুদ্ধেই তাই সরব হয়ে বাংলার সব যৌনকর্মীরা একযোগে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা এবার থেকে আর তাঁদের বাড়ির  মাটি দেবেন না দুর্গাপুজোর প্রতিমা নির্মাণের জন্য। যদিও তাঁদের এহেন প্রতিবাদকে খুব একটা মান্যতা দিতে চাইছে না সুশীল সমাজ। বিশেষ করে যাদের পারিবারিক দুর্গাপুজো হয় তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, এইসব ক্ষেত্রে শাস্ত্রেই বিধান দেওয়া আছে গঙ্গা মাটিকেই ‘বেশ্যাদ্বার মাটি’ হিসাবে প্রতিকী ভাবে ব্যবহার করতে। তাঁরা তেমন হলে আগামী বছর থেকে সেটাই করবেন।

 

Exit mobile version