হাইকোর্টে সিবিআইয়ের শুনানি মুলতুবির আর্জি খারিজ, ৭ বছর তদন্ত করে কেন চার্জশিটের পর গ্রেফতার? প্রশ্ন বিচারপতির

বিচারপতি মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমি একটা অস্থায়ী পর্যবেক্ষণ দিতে চাই, একটা বিষয় সাত বছর ধরে তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হল না কেন? আর এখন হঠাৎ চার্জশিট জমা দেওয়ার পরই বা গ্রেফতার করার প্রয়োজন পড়ল কেন?’’
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

হাইকোর্টে মুখ পুড়ল সিবিআইয়ের। বুধবার পর্যন্ত নারদ মামলার শুনানি মুলতুবির আর্জি খারিজ করল হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। আর্জি খারিজের পরেই হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে শুরু হল নারদ মামলার শুনানি। চার হেভিওয়েটের জামিনের শুনানি নিয়ে সওয়াল জবাব শুরু আদালত কক্ষে। বিচারপতিরা জানান, ‘সাইক্লোন আছড়ে পড়লে আরও বিলম্বিত হবে প্রক্রিয়া। আমরা কেন শুনানি পিছিয়ে দেব।’

শুনানিতে গত সোমবার নারদ অভিযুক্তদের গ্রেফতারি থকে ঘটনাক্রম তুলে ধরা হয়। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘গত সোমবার সিবিআই অফিসের বাইরে বিশাল মানুষের জমায়েত হয়। যে কারণে অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করা যায়নি। দু’জন রাজ্যের মন্ত্রী আদালতে হাজির ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে সিবিআই অফিসে এসে বসেছিলেন।বাধ্য হয়ে সিবিআই ভার্চুয়াল ভাবে অভিযুক্তদের হাজির করার আবেদন করা হয়। সশরীরে কেস ডাইরি নিয়ে যেতে পারেননি। সিবিআই অফিসের বাইরের ভয়ানক পরিস্থিতি ছিল।এর পর আমরা ৪০৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী স্থানান্তর করার আবেদন করা হয় হাইকোর্টে। যেটা মেল করে অর্থাৎ অনলাইনে এবং মৌখিক ভাবে আবেদন করা হয়েছিল।’
জামিনের শুনানির সময় কি এই বিক্ষোভ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছিল ? সওয়াল করেন সিঙ্ঘভি। তিনি বলেন,বলা হচ্ছে পরিস্থিতির জন্য অভিযুক্তদের ভার্চুয়াল মাধ্যমে নিম্ন আদালিতে শুনানি করতে হয়েছে। সেখানে ওই আদালতের বিচারপতি কী কোনও অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন বা বিরোধীরা করেছেন? যদি না করে থাকেন তাহলে কেন অভিযুক্তদের সশরীরে না আনাকেই যুক্তি হিসেবে দাঁড় করানো হচ্ছে? প্রশ্ন আইনজীবী সিঙ্ঘভির।
কেন এতদিন পর গ্রেফতারি, তার জবাব দিতে পারলেন না সিবিআইয়ের আইনজীবী মেহতা।
সিবিআইয়ের আইনজীবীর কথায়, ‘‘যেভাবে নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতারি নিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে, তাতে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা উচিত বলে মনে হয়েছে । বিক্ষোভ দেখিয়ে বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া হয়েছে। এটি কি বিবেচ্য হতে পারে না?’’
‘‘হঠাৎ চার্জশিট জমা দেওয়ার পর গ্রেফতার করা হল কেন?’’ আদালত সে প্রশ্ন তোলে।
বিচারপতি মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমি একটা অস্থায়ী পর্যবেক্ষণ দিতে চাই, একটা বিষয় সাত বছর ধরে তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হল না কেন? আর এখন হঠাৎ চার্জশিট জমা দেওয়ার পরই বা গ্রেফতার করার প্রয়োজন পড়ল কেন?’’

আদালতে সিঙ্ঘভির যুক্তি ছিল,বিচারের সঙ্গে যখন ব্যক্তিগত স্বাধীনতা জড়িয়ে রয়েছে তখন বিচার প্রক্রিয়াকে সতর্ক হতে হয়। তাঁর যুক্তি,প্রথমত, ৪০৭ ধারা ব্যবহার করে আগেই জামিন পাওয়া ৪ নেতা-মন্ত্রীর জামিনের নির্দেশে কি স্থগিতাদেশ দিতে পারে?

দ্বিতীয়ত, জামিনে স্থগিতাদেশ দেওয়ার আগে অভিযুক্তদের বক্তব্য না শোনাকে কি সুবিচার বলা হবে?

তৃতীয়ত, জামিনের যে আদেশ দেওয়া হয়েছিল তার প্রাথমিকতার বিচার করলে একটা বিষয় স্পষ্ট, তা হল এই জামিনের নির্দেশ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আসেনি। যার ফলে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার হতে হয়েছে অভিযুক্তদের।

চতুর্থত, সিবিআই যা যা ইস্যু আদালতকে জানিয়েছে, তার ৯৫ শতাংশ ভিত্তিহীন। সিবিআইয়ের বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে, যদি আজ আমাদের সিবিআইয়ের অধীনে থাকতে হত তবে মার্শাল আইন জারি হত পশ্চিমবঙ্গের এই রাজধানী কলকাতায়।

বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায় জানতে চাইলেন, তদন্তের সময় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছিল কি না? জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী বললেন, তাঁদের কখনওই গ্রেফতার করা হয়নি।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest