অতিরিক্ত মেদ ধরে যাওয়ার পর নতুন করে চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে। কিংবা ডেলিভারির পর তলপেট জুড়ে সাদা সাদা দাগ আঁচড়ের মতো দেখা দিয়েছে। এমন স্ট্রেচ মার্ক তো নারী-পুরুষ উভয়েরই হয়ে থাকে। ওজন বেড়ে গেলে বা কমে গেলে এমন হয়। কিন্তু শাড়ি পরলে বা সুন্দর সুন্দর পোশাক পরার পাশাপাশি আনাচে কানাচ থেকে এই স্ট্রেচ মার্কগুলি সামনে বেরিয়ে আসে! ডাক্তারে পরামর্শে স্ট্রেচ মার্ক না কমলে ঘরোয়া কিছু অব্যর্থ টোটকা আছে, যেগুলি ব্যবহার করতে পারেন…
১. জিলাটিন- কোলাজেন হল এমন একধরনের জেল, যা শরীরেরসঙ্গে মিশে থাকে। কোলাজেন ত্বককে টানটান করতে, স্থিতিস্থাপক করে তুলতে ও ত্বকের মধ্যে মৃত কোষ গুলি হঠাতে সাহায্য করে। জেলাটিনে রয়েছে অ্যামিনো অ্যাসিড, গ্লাইসিন ও প্রোলিন। যা কোলাজেনের গঠনকে আরও শক্তিশালী, স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করতে, বলিরেখার চিহ্ন নির্মূল করতে, পাচনতন্ত্রকে উন্নত করতে, গাঁটের ব্যাথা হ্রাস করতে, অন্ত্রের প্রদাহকে কমাতে সাহায্য করে।
২. নারকেল তেল- নারকেল তেল হল সবচেয়ে সস্তায় উপকারী ও ঘরোয়া টোটকা। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড, যার কারণে ত্বকের ইলাস্টিকসিটি উন্নত করতে, ত্বকের মৃতত কোষকে নির্মূল করতে সাহায্য করে। শুধু ত্বকে নয়, শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত রান্নায় নারকেল তেল ব্যবহার করা উচিত। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নারকেল তেল দিয়ে গোটো শরীর মাসাজ করা দরকার। স্ট্রেচ মার্কের সমস্যা এড়াতে নারকেল তেলের পরিবর্তে রিফাইন্ড তেল বা যে কোনও হিলিং অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
৩. কোকো বাটার ও শিয়া বাটার
ত্বককে খুব সহজে হাইড্রেট করতে কোকো বাটারের জুড়ি নেই। স্কিনকে আগের মতো তারুণ্য গড়ে তুলতে, স্ট্রেচ মার্ক নির্মূল করতে, ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক ফ্যাটি অ্যাসিড, যা নতুন করে স্কিনকে গঠন করতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: আসছে বর্ষা! জেনে নিন কেমন হবে বৃষ্টি দিনে ত্বকের যত্ন?
৪. অলিভ অয়েল- অলিভ অয়েলে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি ও ই। ত্বককে সুস্থ রাখতে, মৃতকোষ নির্মূল করতে, রক্ত সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ও স্কিনকে ময়েশ্চারাইজ করতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা অত্যন্ত কার্যকরী।
৫. প্রেগন্যান্সির সময় কখনও কখনও গা-হাত-পায়ে চুলকানির মতো সমস্যা দেখা যায়। এই সময় আরাম পেতে অলিভ ওয়েল ব্যবহারপ করতে পারেন। দারুণ কাজে দেয়। সামান্য পরিমাণে অলিভ অয়েল নিয়ে সারা গায়ে ৩০ মিনিট ধরে মাসাজ করুন। তারপর রোজকার মতো ভাল করে স্নান সেরে নিন। স্নানের আগে অলিভ অয়েল দিয়ে মাসাজ করলে ফল ভাল পাওয়া যায়।
৬. অ্যালোভেরা- মেডিক্যাল প্ল্যান্টের রাজা হল এই অ্যালোভেরা। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনেরালস, অনজাইম, অ্যান্টি-ফ্লেমাটরির সম্পদ। একটি অ্যালোভেরা পাতা নিয়ে, তা থেকে জেলের মতো অংশটি বের করে নিন। এরপর ওই জেল সারা গায়ে লাগিয়ে নিন, ৩০ মিনিট পর ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে গা ধুয়ে নিন। স্ট্রেচ মার্কর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন এই ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করতে পারেন।
৭. ডিমের সাদা অংশ- স্ট্রেচ মার্ক নির্মূল করতে ডিমের সাদা অংসে বেশ উপকারী। ডিমের সাদা অংশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, যা ত্বককে পুনুরুজ্জীবিত করে তুলতে সাহায্য করে। দুটি ডিমের সাদা অংশে নিয়ে তাতে ৩ ফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে একটি ময়েশ্চারাইজার বানিয়ে ফেলুন। এবার সেই ময়েশ্চারাইজার যেখানে যেখান স্ট্রেচমার্ক দেখা দিয়েছে, সেখানে নশনের মত ওই প্যাকটি ব্যবহার করুন। শুকিয়ে গেলে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে পরিস্কার করে নিন। এই প্যাকটি প্রতিদিন ব্যবহার করলে ফল ভাল পাবেন।
আরও পড়ুন: কোন ত্বকের জন্য কেমন ফাউন্ডেশন প্রয়োজন? জেনে নিন এক ঝলকে