দেখুন তেঁতুলের ১০টি উপকারিতা, জানেন কী কখন তেঁতুল খাওয়া বিপজ্জনক?

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

তেঁতুল পছন্দ করে না এমন মানুষ পাওয়া খুব কঠিন। বিশেষ করে তরূণীদের খাবারের তালিকায় উপরের দিকেই পাওয়া যায় এর নাম। তবে অনেকেরই ধারণা তেঁতুল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং তেঁতুল খেলে রক্ত জল হয়।

“তেঁতুল খেলে রক্ত জল হয়ে যায় কিংবা তেঁতুল মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর” আধুনিক ডাক্তারদের মতে এ ধারনা সম্পূর্ণ ভুল। সব কিছুরই যেমন ভাল ও মন্দ আছে। তেমনি তেতুল এর ও ভাল ও মন্দ বা উপকার ও অপকার দুইটাই আছে। গরমে এটির খুব কদর বারে অন্য সময়ের তুলনায়। ছেলে মেয়ে উভয়ে তেতুল খেতে পারে।

জেনে নিন তেতুলের উপকারিতা

১) হজম শক্তি বাড়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে :
পেট ব্যথা বা কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো সমস্যার সমাধান যদি চান, তেঁতুলের সাহায্য নিন।তেঁতুলের মধ্যে টার্টারিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড এবং পটাশিয়াম আছে যা কোষ্ঠন্যকাঠিন্য দূর করে। আয়ুর্বেদে এখনও তেঁতুল পাতা ডায়েরিয়া সারাতে ব্যবহার হয়। এছাড়াও তেঁতুল গাছের ছাল এবং শিকড় পেটের ব্যথা দূর করতে ব্যবহার করা হয়।

২) ডায়বেটিস কন্ট্রোল করে :
তেঁতুলের বীজ ডায়বেটিস কন্টোল করতে সক্ষম। আবার রক্তে চিনির মাত্রাও ঠিক রাখে। এতে উপস্থিত এক ধরণের এনজাইম যার নাম (alpha-amylase)রক্তে চিনির মাত্রা কমায়।

how to use tamarind chowhound

আরও পড়ুন: অম্বলে ভুগছেন? মুঠো মুঠো ওষুধে কাজ হচ্ছে না ? ভেষজ উপায়ে নিরাময় করুন রোগ

৩) ওজন কমায় :
তেঁতুলে উচ্চ মাত্রায় ফাইবার আছে আবার একই সঙ্গে এটা সম্পূর্ণ ফ্যাট ফ্রি। গবেষণায় দেখা গেছে যে রোজ তেঁতুল খেলে ওজন কমে।

ওজন কমাতে flavonoids and polyphenols এর উপস্থিতি কাজ করে। এছাড়াও এর উপস্থিত hydroxycitric acid খিদে কমায়।

৪) পেপটিক আলসার রোধ করে :
পেপটিক আলসার বেশির ভাগ সময় পেটে এবং ক্ষুদ্রান্ত্রে হয়। এই আলসার খুব বেদনাদায়ক। রিসার্চে দেখা গেছে তেঁতুলের বীজের গুঁড়ো নিয়মিত খেলে পেপটিক আলসার সেরে যাচ্ছে।

আসলে তেঁতুলে উপস্থিত পলিফেনলিক কম্পাউন্ড আলসার সারিয়ে তোলে ।

৫) হৃদয় ঠিক রাখে :
তেঁতুল খুবই হার্ট ফ্রেন্ডলি। এতে উপস্থিত ফ্ল্যাভরনয়েড ব্যাড কোলেস্টেরল কমায়। আবার রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড ( এক ধরণের ফ্যাট ) জমতে দেয় না। এতে উপস্থিত উচ্চ পটাশিয়াম রক্ত চাপ কমাতে সাহায্য করে।

growing tamarind tree pods

৬) ক্যান্সার রোধ করে :
তেঁতুলে উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে যা কিডনি ফেলিওর এবং ক্যান্সার রোধ করতে সাহায্য করে।

৭) ক্ষত সারিয়ে তোলে :
তেঁতুল গাছের পাতা এবং ছাল অ্যান্টি সেপটিক এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল। এটি ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

৮) ত্বক উজ্জ্বল করে :
তেঁতুল ক্ষতিকারক আলট্রা ভায়োলেট রে-র হাত থেকে ত্বককে বাঁচাতে সাহায্য করে। যাদের অ্যাকনে আছে তাদের জন্যেও উপকারী তেঁতুল।

তেঁতুলে উপস্থিত হাইড্রক্সি অ্যাসিড ত্বকের এক্সফলিয়েশন করতেও সাহায্য করে। যার ফলে মরা কোষ উঠে যায় এবং ত্বক উজ্জ্বল দেখায়।

৯) সর্দি কাশি সারাতে সাহায্য করে :
তেঁতুলে antihistaminic properties প্রপার্টি আছে। যার ফলে অ্যালার্জি হতে বাঁধা দেয়। আবার এতে উপস্থিত ভিটামিন C শরীরের ইমিউনিটি বাড়ায়।

১০) লিভার সুরক্ষিত রাখে :
তেঁতুল আমাদের লিভার বা যকৃতকেও ভালো রাখে। পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত তেঁতুল পাতা ব্যবহার করে উচ্চ মাত্রায় মদ্যপানের ফলে ড্যামেজড লিভার অনেকটা সেরে উঠেছে।

Peru tamarind health benefits

তেতুলের অপকারিতা
১। রক্তপাত বৃদ্ধি করে নির্দিষ্ট ঔষধের ক্ষেত্রেঃ
তেঁতুল রক্তপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে এবং মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে যদি নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের সাথে গ্রহণ করা হয়। এ ধরনের ঔষধগুলো হচ্ছে

=>অ্যাসপিরিন,
=>ইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সিন এর মত নন-স্টেরয়ডাল অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ড্রাগ (NSAIDs),
=>রক্ত পাতলা করার ঔষধ (হেপারিন, ওয়ারফেরিন ইত্যাদি )
=>অ্যান্টি-প্লাটিলেট ড্রাগ (ক্লপিডোগ্রেল)

যদি আপনি এই ঔষধগুলো গ্রহণের সময় তেঁতুল খান তাহলে শরীরে এদের শোষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।এরা শরীরে অনেক বেশি কাজ করা শুরু করে এবং ক্রমান্বয়ে অধিক রক্তপাত শুরু হয়।

২। হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারেঃ
অনেক বেশি পরিমাণে তেঁতুল খেলে রক্তের সিরাম গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায় বলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়। পুষ্টিবিদেরা প্রতিদিন ১০ গ্রাম তেঁতুল গ্রহণের পরামর্শ দেন।

যা নিয়মিত খাদ্যগ্রহণের ০.৮ % হতে হবে। এর বেশি গ্রহণ করলে শরীরে গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা যারা রক্তের চিনির মাত্রা কমানোর ঔষধ গ্রহণ করেন তারা এ বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।

heavenly vegan dals tamarind potato curry 1

৩। অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারেঃ
তেঁতুলের সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে অ্যালার্জি বা অতিসংবেদনশীলতা। এ কারণে কিছু কিছু মানুষের মধ্যে র‍্যাশ, চুলকানি, ইনফ্লামেশন, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বমি হওয়া বা শ্বাসকষ্ট হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়।

৪। দাঁতের এনামেল নষ্ট করেঃ
তেঁতুল উচ্চ মাত্রার এসিডিক প্রকৃতির। তাই নিয়মিত তেঁতুল খেলে দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য যেমন খারাপ তেমনি আপনার দাঁতের জন্য ও খারাপ।

৫। পিত্তপাথর গঠনে সাহায্য করেঃ
ভারতীয় গবেষক প্রমাণ করেছেন যে, ঘন ঘন প্রচুর পরিমাণে তেঁতুল খাওয়া পিত্তপাথর হতে সাহায্য করে। এর ফলে জন্ডিস, তীব্র জ্বর, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, পরিপাকের সমস্যা ও লিভারের সমস্যা হতে পারে।

৬। এসিড রিফ্লাক্স বৃদ্ধি করেঃ
তেঁতুল এসিডিক খাবার তাই এটি বেশি খেলে আমাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল নালীতে বিশেষ করে পাকস্থলীতে এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই যদি এসিড রিফ্লাক্সের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনার তেঁতুল খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিৎ।

আরও পড়ুন: ঘুম থেকে উঠলেই ঘাড়ে ব্যথা? আপনার প্রিয় বালিশটার জন্য সমস্যা হচ্ছে নাতো?

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest