স্বমেহন, হস্তমৈথুন বা মাস্টারবেশন (masturbation)। যে নামেই এটিকে ডাকুন না কেন, আমাদের অনেকের কাছেই হয়তো পরিচিত অভ্যেস। আবার অনেকেরই কাছেই হয়তো এই অভ্যেস পরিচিত নয়। কেউ বা এই অভ্যেসে অভ্যস্ত হলেও, তা স্বীকার করতে চান না। আসলে আমাদের সমাজে যেখানে সেক্স নিয়ে আলোচনাটাই বাঞ্ছনীয় বলে ধরা হয় না, সেখানে মাস্টারবেশন বা হস্তমৈথুন নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করা হবে, এমনটাও ভাবাও বোধ হয় পাগলামিরই নামান্তর। তাই এই অভ্যেসটি স্বাভাবিক, নাকি অস্বাভাবিক, এটি মানসিক-শারীরিক অসুস্থতার কোনও লক্ষণ কিনা, এসব নিয়ে আমাদের মধ্যে সচেতনতা খুবই কম। দেখুন তো, মাস্টারবেশন বা হস্তমৈথুন নিয়ে খুব সাধারণ এই তথ্যগুলি আদৌ আপনি জানেন কিনা?
১) মাস্টারবেশন খুব স্বাভাবিক ব্যাপার, এটা কোনও সমস্যা নয়
প্রথমেই জেনে রাখা ভাল, পুরুষ বা মহিলা (woman), যে-কোনও লিঙ্গের ক্ষেত্রেই স্বমেহন বা মাস্টারবেশন অত্যন্ত সাধারণ একটি ঘটনা। অনেকে মনে করেন, এটি হয়তো কোনও রোগ। এটা একেবারেই ভুল ধারণা। বরং এটা শরীরের পক্ষে ভাল। মাস্টারবেশনের ফলে শরীরে রক্ত চলাচলের হার বৃদ্ধি পায়। এর ফলে এন্ড্রোফিনসের মতো ফিল গুড ব্রেন কেমিক্যাল বের হয়। যা মুড ভাল হতে সাহায্য করে। এছাড়া মাস্টারবেশন স্ট্রেস রিলিফের কাজ করে বলেও বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।
২) যৌন জীবনের উন্নতি ঘটায় মাস্টারবেশন
যৌন জীবনে সহজ হতে, কনফিডেন্ট হতে সাহায্য করে মাস্টারবেশন। আসলে স্বমেহন অনেকটা নিজেকে নিজে আবিষ্কারের পথ। আপনার ইচ্ছেশক্তি কতটা, নিজেই পরখ করে দেখতে পারবেন আপনি। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে যৌন মিলনে। আপনার কী ভাল লাগে, সেই এক্সপেরিমেন্টটা নিজের সঙ্গে নিজে করে নিলে পার্টনারের সঙ্গে যৌন মিলনের সময় আপনি নিজের চাহিদা অনেক সহজে বুঝিয়ে দিতে পারবেন। এমনকি লিডও করতে পারেন আপনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, হয়তো অর্গাজমে পৌঁছতে আপনার সময় বেশি লাগে। সেক্ষেত্রে মাস্টারবেশনের সময় ভিন্ন ভাবে স্পর্শ করে বা যৌনাঙ্গে প্রেশার ক্রিয়েট করে কীভাবে নিজে ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছতে পারবেন, তা পরখ করে দেখে নিতে পারেন।
আরও পড়ুন: ভারতে ৬৫% বিক্রি বেড়েছে কন্ডোম, সেক্সটয়ের! এগিয়ে চার শহর, কলকাতা কি রয়েছে তালিকায়?
৩) যৌন সমস্যা দূর করে মাস্টারবেশন
মেনোপজের সময় বহু মহিলাই বিভিন্ন যৌন সমস্যায় পড়েন। সে সব দূরে রাখতে মাস্টারবেশন বন্ধুর মতো কাজ করে। স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞদের একটা অংশের মতে, ভ্যাজাইনার পথ সরু হয়ে যায়। সে সময় ইন্টারকোর্স করতে গেলে তা যন্ত্রণাদায়ক হয়। কিন্তু মাস্টারবেশন, বিশেষত ওয়াটার বেস লুব্রিক্যান্ট দিয়ে মাস্টারবেট করলে ভ্যাজাইনার সরু পথ কিছুটা উন্মুক্ত হয়। রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। এমনকী, যৌন চাহিদাও বৃদ্ধি পায় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ।
৪) মাস্টারবেশনের সময় তাড়াহুড়ো নয়
মাস্টারবেশন খুব দ্রুত হয়ে যায়। বা কম সময়ের মধ্যে সেরে ফেলতে হয়, এমন ধারণা অনেকের রয়েছে। চিকিৎসকদের বড় অংশ মনে করেন, এটি একেবারে ভুল ধারণা। বরং নিজেকে সময় দিন। নিজের বডি পার্ট যত্ন করে ছুঁয়ে দেখুন। ধীরে-ধীরে চরম মুহূর্তে পৌঁছন। তাড়াহুড়ো করে সেরে ফেলতে চাইলে, কাঙ্খিত আনন্দ বা সুখ না-ও পেতে পারেন বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
৫) সেক্স টয়ের সাহায্য
১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি মহিলাদের উপর গবেষণা করে দেখা গিয়েছে, অর্ধেক সংখ্যক মহিলা মাস্টারবেশনের সময় ভাইব্রেটর বা ডিলডোর মতো সেক্স টয় ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। চিকিৎসকরা মাস্টারবেশনে সেক্স টয়ের ব্যবহারকে উৎসাহিত করছেন। যদি কারও অর্গাজমের সমস্যা থাকে, চরম মুহূর্তে পৌঁছতে সময় লাগে, সেক্স টয় তাঁদের সাহায্য করতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: দিনে ক’বার যৌনমিলন ‘স্বাভাবিক’! সঙ্গম নিয়ে খোলামেলা আলোচনা