The Secret Gem of Junagadh: Mahabat Maqbara

Travel: গুজরাটের গোপন রত্ন দেখতে চান? মহাবত মাকবারায় চলে যান

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

ইতিহাস লেখা হয়, কিছু সাল -সময়- দিনক্ষণ নথিভুক্ত করা হয়, পরে তাতে কারচুপি করা এবং আরও পরে সেই ইতিহাস ভুলে যাওয়া হয়। পৃথিবীর সর্বত্র এই কাজ হয়ে যাচ্ছে নীরবে, নিঃশব্দে। তারই মধ্যে কখনও কখনও, কোনও ঘটনা অতিরঞ্জিত পুরাণে পরিণত হয়; আর বহু ক্ষেত্রে, কিছু জিনিসঅলক্ষ্যেই অদৃশ্য হয়ে যায়। উইপোকা, ও অবহেলা তাদের নষ্ট করেফেলে।

অন্যদিকে,স্মৃতিস্তম্ভ – ইতিহাসের স্মারকগুলিও দাঁড়িয়ে থাকে আপন খেয়ালে যতক্ষন না পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক দলের আঙ্গুলি হেলানে কিছু উন্মত্ত জনতা ভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেলে। আর তা না হলে সেগুলোকে ইচ্ছাকৃত ভাবে এতটাই অযত্নে রেখে দেওয়া হয় যে সেগুলো ভেঙে পরে আপনাআপনি।

এরকমই একটি স্মৃতিসৌধ হল নবাব মহাবত খান দ্বিতীয়ের সমাধি। গুজরাটের জুনাগড়ের ধুলোময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে ১৯ শতকের এই স্থাপত্য। উচ্চারণ ভুলে অনেকেই এটি ‘মহব্বত” বলে থাকেন, কিন্তু আসল নাম মহাবত মকবারা। স্মৃতিসৌধ ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যের এই দুর্দান্ত উদাহরণ। কিন্তু লোহার মরচে পরা দাগ বুঝিয়ে দেয় ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের কাছে অদ্ভুত সুন্দর এই স্থাপত্যের বিন্দুমাত্র মূল্য নেই।

আপনি যদি একজন আর্কিটেকচারের ছাত্র না হন,তাহলেও মকবারার বিভিন্ন শৈলীর প্রভাব বুঝতে পারবেন।গম্বুজ এবং খিলান ইসলামিক স্থাপত্য শিল্পের প্রভাব দেখতে পাবেন। রয়েছে ঝাড়োখা ধরণের জানালা।তবে দরজার দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন ইউরোপীয় স্থাপত্যর প্রভাব। এই সমাধিগুলির ভিতরের এবং বাইরের সম্মুখভাগে আল্লাহর নাম খোদাই করা আছে। সমাধির বাইরের দিকে হলুদাভ হালকা বাদামী খিলান রয়েছে। তাদের রয়েছে পেঁয়াজ আকৃতির গম্বুজ, ফ্রেঞ্চ জানালা, ভাস্কর্য, মার্বেল ট্রেসারির কাজ, মার্বেল কলাম, মার্বেল জাল এবং রূপালী দরজা। এই সমাধিগুলির মধ্যে চার পাশ থাকা মিনারগুলিতে ঘুরানো সিঁড়ি রয়েছে। যদিও মাকবারা দেখে অনেকেই তাজমহলের সঙ্গে মিল খুঁজে পান। চারটি মিনার দিয়ে ঘেরা এই সৌধর সামান্যে দাঁড়ালে সময় থেমে যেতে বাধ্য।

বাবি রাজবংশের নবাবরা তৎকালীন জুনাগড় রাজ্য শাসন করতেন।  ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় মাকবারা তৈরির কাজ ১৮৭৮ সালে শুরু হয় আর শেষ হয় ১৮৯২ সালে। নবাব মহাবত খান জীবিত থাকাকালীন এটির কাজ শুরু করেছিলে। তিনি মারা গেলে নবাব বাহাদুর খান তৃতীয় এটির কাজ শেষ করেন আর নবাব মহাবত খানের সমাধি তৈরি করেন। উত্তরে সংলগ্ন সমাধিটি মহাবত খান দ্বিতীয়ের উজির শেখ বাহাউদ্দিন হোসেন তাঁর নিজস্ব তহবিল দিয়ে নির্মাণ করেছিলেন। সেটি বাহাউদ্দিন মাকবারা বা ওয়াজিরের মাকবারা নামে পরিচিত। ১৮৯১ – ১৮৯৬ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া সৌধটি শহরের অভ্যন্তরে একটি অত্যন্ত ব্যস্ত এলাকায় অবস্থিত, হাইকোর্ট রাস্তার ঠিক পাশে অবস্থিত।

এই সমাধি ক্ষেত্রে একসঙ্গে ঘুমিয়ে আছেন নবাব ও তাঁর উজির। জানা যায় মাকবারা দেখাশোনার জন্য ওই গ্রামের জন্য পৃথক ৮০০০ টাকা প্রতিবছর দেওয়া হত নবাবদের তরফ থেকে। বর্তমানে মাকবারা সংলগ্ন এলাকা ভিখারি ও নেশারুদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। গুজরাটের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ শুধুমাত্র একটি বোর্ড টাঙিয়ে নিজেদের দায় সেরেছে। স্বাভাবিক ভেবেই প্রশ্ন ওঠে গুজরাট প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ কেন এটির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করে না। কেন কোনও প্রবেশমূল্য, রক্ষণাবেক্ষণ, কমপ্লেক্স গাইড, বিজ্ঞাপন নেই এটির। নাকি ঐতিহ্যের এই অপূর্ব সুন্দর টুকরোটিকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে ইচ্ছাকৃত ভাবে?

 

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest