যৌন আসক্তি কি এমন একটি রোগ যে কারণে একজন ব্যক্তি কারো জীবনও নিতে পারে। যৌন আসক্তি হিংস্র হয়ে ওঠে কিনা তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ এবং মনোবিজ্ঞানীরা একমত নন। জেনে নিন যৌন আসক্তি কি এবং এর লক্ষণ কি?
যৌন আসক্তির লক্ষণ- যে কোনও আসক্তির মতোই যৌন আসক্তিও ব্যক্তির মনের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সেক্সকে স্বাস্থ্যের জন্য স্বাস্থ্যকর মনে করেন, কিন্তু অতিরিক্ত সেক্স করতে চাওয়া শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। যখন যৌন আসক্তি থাকে, তখন ব্যক্তি সারাক্ষণ শুধুমাত্র যৌনতা নিয়েই চিন্তা করে। এই ধরনের মানুষরা এর গুরুতর পরিণতি জানার পরও সবসময় কিছু যৌনকর্মে লিপ্ত থাকে। চরম যৌন আসক্তির কারণে তাদের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবন উভয়ই নষ্ট করে।
যৌনতায় আসক্ত ব্যক্তিদের একসঙ্গে অনেক মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক থাকে। এই লোকদের তাদের সঙ্গীর প্রতি কোনও ধরনের মানসিক আবেগ থাকে না। অনেক যৌন আসক্তরা নিয়মিত যৌনকর্মীদের কাছে যান। তাদের দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি তারা সাইবার সেক্স, পর্নোগ্রাফিতেও লিপ্ত হয়। যৌন আসক্ত ব্যক্তিরাও অনিরাপদ যৌনতার ঝুঁকি নেয়। এই ধরনের মানুষ যৌনতা থেকে মানসিক তৃপ্তি পায় না এবং অনেক সময় যৌন ক্রিয়াকলাপের পর নিজেকে অপরাধী মনে করে।
যৌন আসক্তির কারণ- যৌন আসক্তি কীভাবে ঘটে তার পিছনে কোনও বৈজ্ঞানিক কারণ নেই। তবে এর পিছনে অনেক ধরনের মানসিক অবস্থা দায়ী বলে বিশ্বাস করা হয়। যেমন, বিষণ্নতা, একাকীত্ব বা দুঃখ অনেক মানুষকে অতিরিক্ত যৌন আচরণের দিকে নিয়ে যায়। এই ধরনের মানুষের যৌন সংক্রামিত রোগের প্রবণতাও বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতামত – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের রোগের আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান শ্রেণিবিন্যাস (ICD10) বাধ্যতামূলক যৌন আচরণকে একটি রোগ বলে মনে করে না। এর কারণ হল প্রত্যেক ব্যক্তির সেক্স ড্রাইভ আলাদা। ২০৯ সালের মে মাসে ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলি -তে একটি উপস্থাপনায় বলা হয়েছিল যে, এই ধরনের মানুষ কখনও কখনও যৌনতায় সামান্যই সন্তুষ্টি পায়।
২০২২ সালে WHO এর আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান শ্রেণীবিভাগ (ICD11) এ এই বিষয়ে অনেক পরিবর্তন আনা হবে। ICD11 তে যৌন আসক্তির একটি নতুন সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
ICD11 বলে, ‘অতিরিক্ত যৌন আচরণ হল এক ধরনের মানসিক ব্যাধি যা একটি প্যাটার্ন অনুসরণ করে। এতে মানুষ তার যৌন আকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এই আচরণ ৬ মাস বা তারও বেশি সময়ে বৃদ্ধি পায়। ব্যক্তির ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, শিক্ষাগত, পেশাগত বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে খারাপ প্রভাব ফেলে।