জেনেভা: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে ২১ দিনের লকডাউনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ভারত। অনেকেই ভাবছেন, দাঁতে দাঁত চেপে এই ক’দিন ঘরে কাটাতে পারলেই ওই রাক্ষুসে ভাইরাসের হাত থেকে রেহাই মিলবে। কিন্তু করোনা আতঙ্ককে আরও বাড়িয়ে দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাল শুধুমাত্র লকডাউন করে ওই মারণ ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকানো যাবে না।এ বার সেই প্রশ্ন উস্কে দিলেন খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রোস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস। তাঁর দাবি, লকডাউন করে হাতে কিছুটা সময় পাওয়া যায় বটে, কিন্তু মহামারি কাটিয়ে বেরিয়ে আসার জন্য তা যথেষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: বাজারে দেদার বিকোচ্ছে ‘করোনা বার্গার’! টেস্ট করে দেখবেন নাকি?
নোভেল করোনার প্রকোপে এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ছুঁইছুঁই। কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্তে হয়ে প্রাণ হারিয়েছে ২২ হাজারের বেশি মানুষ। এই পরিস্থিতিতে বুধবার জেনেভায় সাংবাদিক বৈঠক করেন গেব্রিয়েসাস। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে বেশ কিছু দেশ লকডাউন ঘোষণা করেছে। কিন্তু এতে করোনাকে ঠেকানো যাবে না। বরং এতে হাতে আরও খানিকটা সময় পাওয়া গিয়েছে। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে এর সদ্ব্যবহার করতে হবে।’’
আরও পড়ুন: করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাশে সিন্ধু, দুই রাজ্যকে দিলেন আর্থিক অনুদান
To slow the spread of #COVID19, many countries introduced "lockdown" measures. But on their own, these measures will not extinguish epidemics. We call on all countries to use this time to attack the #coronavirus.
You've created a 2nd window of opportunity. pic.twitter.com/jupcsdYnWm— Tedros Adhanom Ghebreyesus (@DrTedros) March 25, 2020
গেব্রিয়াসের কথায়, ‘‘মানুষকে গৃহবন্দি থাকতে বলে, জনজীবন স্তব্ধ করে দিয়ে আসলে সময় নেওয়া হচ্ছে, যাতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর থেকে চাপ কিছুটা হলেও কমানো যায়। কিন্তু এতে করোনাকে রোখা সম্ভব নয়। বরং করোনা বিনাশ করতে এই সময়টাকে কতটা কাজে লাগানো যায়, তা দেখতে হবে।’’
বিশ্ব জুড়ে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, একই অবস্থা ভারতেও। এই অবস্থায় আরও আক্রমণাত্মক হওয়ার কথা বললেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান। তাই এই মারণ ভাইরাসকে চিরতরে নির্মূল করতে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত করার উপরে জোর দিয়েছেন তিনি।এমনকী করোনা ভাইরাসকে রুখতে চিন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সিঙ্গাপুরের মডেল মেনে চলার জন্যে অন্য দেশগুলিকে পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাটি। এই সংক্রমণ রুখতে এই সমস্ত দেশে লকডাউনের পাশাপাশি প্রত্যেক সম্ভাব্য রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। একমাত্র এই মডেল মেনে চললেই স্থায়ীভাবে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করে দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছে হু।
আরও পড়ুন: করোনার সঙ্গে যুঝতে ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটির ত্রাণ ঘোষণা অর্থমন্ত্রীর, আমজনতাকে বাঁচাতে ৮ পদক্ষেপ
ভারতে এখনও পর্যন্ত ৬৫০ জন নোভেল করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন। সংক্রমণ রুখতে গত ২৪ মার্চ মধ্যরাত থেকে দেশব্যাপী ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই সময়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া নাগরিকদের বাইরে বেরতে নিষেধ করা হয়েছে।