বোলপুর: বীরভূমের তৃণমূলে জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ভোট-অভিধানে নতুন সংযোজন- ‘শলাকা’।বৃহস্পতিবার বিকেলে বোলপুর ডাক বাংলো মোড়ে সভা করেন অনুব্রত। সেই সভা থেকে তিনি বলেন, “যাঁরা বুথ কর্মী আছেন। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবেন। শলাকা দেখিয়ে ভোট করিয়ে নেবেন। সেটা কীভাবে করবেন, আপনারা আমার চেয়ে ভালো জানেন।” স্বাভাবিক ভাবেই সভা শেষের পর শলাকা দিয়ে ভোট করানোর ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া তাঁর থেকে। অনুব্রত অন্য সব কিছুর মতোই তাঁর ফর্মুলার কোনও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি। শুধু সাংবাদিকদের বলেছেন, “শলাকা মানে কাঠি। ব্যাখ্যা জানতে গেলে ডিকশনারি দেখুন।”
ভোট কী ভাবে করাতে হবে তা নিয়ে সময়ে সময়ে ফর্মুলা পাল্টেছেন তিনি। কখনও ‘গুড়-বাতাসা’, কখনও ‘চড়াম চড়াম ঢাক বাজানো’ বা ‘রাস্তায় উন্নয়ন’ দাঁড় করিয়ে রাখা অথবা ‘পাচন’ তত্ত্বের কথা বলে ঝড় তুলেছেন। এ বারের লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী তালিকা ঘোষণার দিনই তিনি নিদান দিয়েছিলেন ‘নকুলদানা’ খাওয়ানোর। গত বুধবারও তিনি ভোটের ব্যবধান বাড়াতে ‘ওষুধ-সিরিঞ্জের’ কথা জানান। এবার সেই তালিকাতে জুড়ে গেল ‘শলাকা’।
এদিন বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে দলের নির্বাচনী প্রচার সভা ছিল। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ প্রমুখ। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “যা চাইবেন তাই করে দেব৷ একটাই কথা বলব, জোড়া ফুলে ভোট দেবেন। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপিকে ভোট দেবেন না।” এরপরেই দলের বুথ কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “যারা বুথ কর্মী আছেন। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবেন। শলাকা দেখিয়ে ভোট করিয়ে নেবেন। সেটা কীভাবে করবেন, আপনারা আমার চেয়ে ভালো জানেন।” তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ‘শলাকা’ ব্যাখ্যা এড়িয়ে যান অনুব্রত মণ্ডল। শলাকা বলতে কী বোঝাতে চাইলেন? তাঁকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “শলাকা ভালো জিনিস তো৷ শলাকা মানে কাঠি। কীসের কাঠি বলতে পারব না৷ মানে বের করুন ডিকশনারি খুলে।”
উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগে ‘নকুলদানা’ মন্তব্যের জেরে তৃণমূলকে দেওয়া চিঠিতে কমিশন জানিয়েছে, “আপনাদের নেতা অনুব্রত মণ্ডলের মন্তব্য লজ্জাজনক। তাঁর মন্তব্যে নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে”।